ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

অবশেষে মৃত্যুর পর বদলির আদেশ পেলেন মুক্তিযোদ্ধা মাসুদ

প্রকাশিত: ০৬:১৪, ২০ মে ২০১৮

অবশেষে মৃত্যুর পর বদলির আদেশ পেলেন মুক্তিযোদ্ধা মাসুদ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ অবশেষে মৃত্যুর পর বদলির আদেশ পেলেন সরকারী কর্মকর্তা মুক্তিযোদ্ধা মোঃ হেলাল উদ্দিন মাসুদ। জীবনের শেষ সময় স্ত্রী সন্তানের সঙ্গে ঢাকায় কাটাতে চেয়ে আবেদন করেছিলেন। বিষয়টি মানবিকভাবে দেখার জন্য অনুরোধ করতে গেলে স্ত্রী সন্তানকে অপমান করে বের করে দেন ঢাকার সেগুনবাগিচায় অবস্থিত হিসাব মহানিয়ন্ত্রক। তারই জেরে অসুস্থ হয়ে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন ওই মুক্তিযোদ্ধা। শুক্রবার তার দাফন সম্পন্ন হয়েছে। তবে এমন অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন হিসাব মহানিয়ন্ত্রক। জানা গেছে, কিশোরগঞ্জের কটিয়াদি উপজেলার অষ্টোঘরিয়া গ্রামের বাসিন্দা বীরমুক্তিযোদ্ধা মোঃ হেলাল উদ্দিন মাসুদ। তিনি ঢাকার সেগুনবাগিচা হিসাব মহানিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ে এস এ এস সুপার পদে কর্মরত ছিলেন। গতবছরের অক্টোবরে তাকে বরিশাল জেলা প্রশাসকের অফিসে বদলি করা হয়। সেখানেই তিনি অফিসে থেকে কাজ করছিলেন। তার দুই ছেলে দুই মেয়ে। তিনি স্ত্রী আফরোজা হেলালসহ পরিবার নিয়ে ঢাকার উত্তরায় ভাড়া বাসায় বসবাস করছিলেন। তার চাকরির মেয়াদ ছিল মাত্র একবছর। শেষ সময়ে বদলি করায় তিনি মারাত্মক বেকায়দায় পড়েন। তিনি ব্যক্তিগতভাবে পারিবারিক অসুবিধার কথা জানিয়ে হিসাব মহানিয়ন্ত্রককে তাকে আবার ঢাকায় বদলির আদেশ করতে অনুরোধ করেন। কিন্তু তার অনুরোধ রাখেননি হিসাব মহানিয়ন্ত্রক। এরপর তার স্ত্রী ও মেয়ে বিষয়টি মানবিকভাবে দেখার জন্য এবং তাকে ঢাকায় বদলি করে আনার জন্য হিসাব মহানিয়ন্ত্রক আবুল ফয়েজ মোঃ আবিদের কাছে যান। হিসাব মহানিয়ন্ত্রক বীর মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী সন্তানদের কথা রাখেননি। উল্টো তাদের অপমান অপদস্থ করে বের করে দেন বলে পরিবারের দাবি। স্ত্রী সন্তানদের অপমানের কথা শুনে হেলাল উদ্দিন মাসুদ অসুস্থ হয়ে পড়েন। অসুস্থ অবস্থায়ই বুধবার ঢাকা সেনানিবাসে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে তিনি মারা যান। শুক্রবার তার লাশ দাফন করা হয়। এদিকে মারা যাওয়ার পর পরই তার ঢাকায় বদলি করার অর্ডার করা হয় বলে পরিবারের দাবি। তাদের দাবি, মৃত্যুর পর বদলি করা হয় তাকে। যা সত্যিই অপমানজনক। বুধবার রাতে সেগুনবাগিচা সিজিএ মসজিদের সামনে মুক্তিযোদ্ধা হেলাল উদ্দিন মাসুদের জানাজায় তার ছেলে আরমান ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, তাদের পরিবারের সঙ্গে তার পিতার অফিসের কর্তাব্যক্তিরা যে আচরণ করেছেন, তা সত্যিই দুঃখজনক। এমন আচরণ যেন আরও কারও সঙ্গে করা না হয়। সরকারী পরিপত্র মোতাবেক চাকরিজীবীদের শেষ ২/১ বছর তার নিজ ইচ্ছায় যেকোন জায়গায় চাকরি করতে পারবেন। তার পিতার ক্ষেত্রে তা মানা হয়নি। এ ব্যাপারে হিসাব মহানিয়ন্ত্রক আবুল ফয়েজ মোঃ আবিদের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জনকণ্ঠকে বলেন, কিছু অভিযোগের প্রেক্ষিতে হেলাল উদ্দিন মাসুদকে বরিশালে বদলি করা হয়েছিল। হেলাল উদ্দিনের স্ত্রী ও এক মেয়ে তার কাছে এসেছিলেন। বদলি যেহেতু একটি রুটিন ওয়ার্ক, এজন্য তিনি হেলাল উদ্দিনের স্ত্রী ও মেয়ের কথা রাখতে পারেননি। তবে হেলাল উদ্দিনের অসুস্থ হওয়ার খবর শোনার সঙ্গে সঙ্গে সকালেই আমি তাকে বরিশাল থেকে আবার ঢাকায় বদলি করার অর্ডার দেই। তবে হেলাল উদ্দিন মারা যাওয়ার পর বদলি অর্ডার করার পর যে অভিযোগ করা হচ্ছে, তা সঠিক নয়।
×