ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ২৭ মে ২০২৪, ১২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

বজ্রপাতে আরও ৮ জনের মৃত্যু

প্রকাশিত: ০৫:২৩, ৫ মে ২০১৮

বজ্রপাতে আরও ৮ জনের মৃত্যু

জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ দেশের বিভিন্ন স্থানে বজ্রপাতে মোট ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। এদের বেশিরভাগই কৃষক। হবিগঞ্জে বজ্রপাতে দুই কৃষক ও এক গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছে। বাগেরহাটে পুত্র মারা গেছে, আহত হয়েছেন পিতা। নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে কলেজছাত্রের মৃত্যু হয়েছে। খাগড়াছড়িতে এক কৃষক, জামালপুরে এক স্কুলছাত্রী, পটুয়াখালীতে এক কৃষকের বজ্রপাতে মৃত্যু হয়েছে। কুড়িগ্রামের রৌমারীতে বজ্রপাতে তিন জন গুরুতর আহত হয়েছে। -খবর নিজস্ব সংবাদদাতা ও স্টাফ রিপোর্টারের। হবিগঞ্জ ॥ শুক্রবার দুপুরে বজ্রপাতে হবিগঞ্জের উপজেলা বাহুবলের গুঙ্গিয়াজুরী হাওড়, বানিয়াচঙ্গের মুড়া হাওড় ও চুনারুঘাটে এক গৃহবধূসহ অন্তত ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। গুঙ্গিয়াজুরী হাওড়ে বজ্রপাতে আবুল কালাম (৩০) নামে এক কৃষক মারা গেছে। তিনি সংশ্লিষ্ট উপজেলাধীন গুঙ্গিয়াজুরী ইউনিয়নের ভবানী গ্রামের জনৈক সঞ্জব উল্লাহ’র পুত্র। এ ঘটনায় একই সময় কুটি মিয়ার পুত্র ছাদ মিয়া ও আফতাব মিয়ার পুত্র ওয়াজিদ উল্লাহ গুরুতর আহত হন। এ দু’জন স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এদিকে মুড়া হাওড়ে রনধীর চন্দ্র দাশ (৪৫)-এর মৃত্যু হয়েছে। তিনি সংশ্লিষ্ট উপজেলার মুরাড়আব্দা গ্রামের যতীন্দ্র দাশের পুত্র। জানা গেছে, উক্ত ৪ জনই স্ব স্ব হাওড়ে তখন ধান কাটার কাজে ব্যস্ত ছিলেন। এদিকে একই সময় বজ্রপাতে জেলার চুনারুঘাট উপজেলাতে অজ্ঞাতনামা এক গৃহবধূ নিহত হবার খবর পাওয়া গেছে। বাগেরহাট ॥ জেলার মোল্লাহাটে ঝড়বৃষ্টির মধ্যে ক্ষেতের ধান কাটতে গিয়ে বজ্রপাতে পুত্রের মৃত্যু হয়েছে এবং পিতা আহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় উপজেলার গাংনী পশ্চিমপাড়া খালের মাথায় এ ঘটনা ঘটে। তাদের বাড়ি গাংনী মাতারচর গ্রামে। পুত্রের নাম আশ্রাফুল মোল্লা (১৫) ও তার আহত পিতার নাম আবুল মোল্লা (৪৫)। নারায়ণগঞ্জ ॥ আড়াইহাজারের ফতেহপুর ইউনিয়নের সিঙ্গারপুর এলাকায় বজ্রপাতে অনয় দেবনাথ (২০) নামে এক কলেজ ছাত্রের মৃত্যু হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার দুপুরে। অনয় ওই এলাকার জয় দেবনাথের ছেলে ও সরকারী সফর আলী কলেজের ছাত্র। আড়াইহাজার থানার ওসি এম এ হক জানান, শুক্রবার দুপুরে অনয় দেবনাথ বাড়ির পাশের ক্ষেত থেকে ধান নিয়ে ফেরার পথে বজ্রপাতে আহত হন। পরে তাকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। খাগড়াছড়ি ॥ খাগড়াছড়ির পানছড়িতে বজ্রপাতে জোর্তিমনি চাকমা (৫০) নামে একজনের মৃত্যু হয়েছে। সে শান্তিপুর গ্রামের বড়পেদা চাকমার ছেলে। শুক্রবার বেলা ২টায় শান্তিপুর এলাকার ধান্য জমিনে এ ঘটনা ঘটে। তার বড় ভাই প্রিয়দর্শী চাকমা জানায়, জমিনে ধান কাটা অবস্থায় বজ্রপাতে তার মৃত্যু হয়। ঘটনার পর পর পানছড়ি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক রিপল বাপ্পি চাকমার মৃত্যু নিশ্চিত করে। জামালপুর ॥ জামালপুর শহরের বাগেরহাটা বটতলা এলাকায় বজ্রপাতে অজ্ঞান হয়ে জান্নাতী খাতুন (১২) নামের পঞ্চম শ্রেণীর এক ছাত্রী মারা গেছে। শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে বৃষ্টির সময় এ ঘটনা ঘটে। শিশুটি স্থানীয় ব্যবসায়ী জামিল হোসেনের মেয়ে। সে বাগেরহাটা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণীতে পড়তো। শিশুটির পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, জান্নাতী খাতুন শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে বৃষ্টির সময় তাদের ঘরের পাশেই আম কুড়াতে যায়। এ সময় কাছেই বজ্রপাত হলে বজ্রপাতের প্রচ- শব্দে সে অজ্ঞান হয়ে মাটিতে পড়ে যায়। পরে তাকে উদ্ধার করে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। জামালপুর জেনারেল হাসপাতালের জরুরী বিভাগের কর্তব্যরত ডাক্তার মোঃ গাজী রফিক জানান, শিশুটির শরীরে বজ্রপাত হয়নি। হয়তো বজ্রপাতের শব্দের আতঙ্কেই সে অজ্ঞান হয়ে যায় এবং হাসপাতালে আনার আগেই সে মারা গেছে। বাউফল ॥ পটুয়াখালীর বাউফলের নওমালা ইউনিয়নের পূর্ব নওমালা গ্রামে বজ্রপাতে হাবিবুর রহমান সরদার (৪৫) নামের এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। তার বাবার নাম আবদুল অহেদ সরদার। জানা গেছে, ঘটনার দিন শুক্রবার বিকাল ৫টার সময় হাবিবুর রহমান বাড়ির পাশে ক্ষেত থেকে গরু নিয়ে ফেরার পথে বজ্রপাতের শিকার হন। এ সময় তার গরুটিও মারা যায়। হাবিবুর রহমান পূর্ব নওমালা দাখিল মাদ্রাসায় চাকরি করতেন। কুড়িগ্রাম ॥ কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলায় বজ্রপাতে সবুজ (২৭), আব্দুস সামাদ (৪৫) ও আব্দুল খালেক (৪০) নামের তিন জন গুরুতর আহত হয়েছে। শুক্রবার সকাল ৯টার দিকে উপজেলার রৌমারী সদর ইউনিয়নের আলগার চর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার সকালের দিকে রাজিপুর উপজেলা থেকে দুইটি মহিষের গাড়িতে মালামাল ভর্তি করে রৌমারী উপজেলার আলগারচর গ্রামে নিয়ে যায়। মালামাল পৌঁছে দিয়ে বাড়ি ফেরার পথে তুমুল বৃষ্টি ও বজ্রপাত শুরু হলে আলগার চর গ্রামের আব্দুল খালেকের দোকানের ঝাপের নিচে অবস্থান নেয়। এ সময় বজ্রপাতের আঘাতে দোকানের মালিক আব্দুল খালেক, গাড়িয়াল সবুজ মিয়া ও আব্দুস সামাদ আহত হয়। পরে এলাকাবাসী আহতদের উদ্ধার করে রাজিবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। আহত সবুজ মিয়া ও আব্দুস সামাদ বাড়ি রাজিবপুর উপজেলার বালিয়ামারী নয়া পাড়া গ্রামে ও আব্দুল খালেকের বাড়ি রৌমারী উপজেলার আলগার চর গ্রামে।
×