ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

শিশুপুত্রকে পুড়িয়ে হত্যা, আরেকপুত্র অগ্নিদগ্ধ

প্রকাশিত: ০৫:০৯, ১৪ এপ্রিল ২০১৮

শিশুপুত্রকে  পুড়িয়ে হত্যা,  আরেকপুত্র  অগ্নিদগ্ধ

স্টাফ রিপোর্টার, নারায়ণগঞ্জ ॥ নারায়ণগঞ্জের আড়াইহজারে নয় বছরের শিশুপুত্র হৃদয়কে পুড়িয়ে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। একই ঘটনায় আরেক শিশুপুত্র জিহাদ (৭) কে অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এ অভিযোগে পুলিশ ওই দুই সন্তানের মা শেফালী বেগম (২৫)কে গ্রেফতার করেছে। পুলিশের ধারণা, পরকীয়া প্রেমের জেরে মা শেফালী বেগম ও তার প্রেমিক মোমেন মিয়া দুই সন্তানকে পুড়িয়ে মারার পরিকল্পনা করে। এতে হৃদয় আগুনে পুড়ে মারা যায় ও আরেক পুত্র জিহাদ অগ্নিদগ্ধ হয়। ঘটনার পর থেকে প্রেমিক মোমেন মিয়া পলাতক রয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলার উচিৎপুরা ইউনিয়নের বাড়ৈপাড়া গ্রামে। শুক্রবার সকালে পুলিশ শিশুপুত্র হৃদয়ের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে। নিহত শিশু হৃদয় স্থানীয় বাড়ৈপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণীর ছাত্র ছিল। সে ওমান প্রবাসী আনোয়ার হোসেনের পুত্র। পুলিশ ও নিহতের বাড়ির লোকজন জানান, উপজেলার উচিৎপুরা ইউনিয়নের বাড়ৈপাড়া গ্রামের ওমান প্রবাসী আনোয়ার হোসেনের স্ত্রী শেফালী বেগমের সঙ্গে মোমেন মিয়ার দীর্ঘদিন ধরে পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক চলছিল। এ নিয়ে পরিবারে অশান্তি চলে আসছিল। শুক্রবার গভীর রাতে ঘুমন্ত অবস্থায় দুই শিশু পুত্র হৃদয় ও জিহাদকে কাঁথা পেঁচিয়ে ম্যাচের কাঠি দিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়। মুহূর্তের মধ্যেই আগুনে ঝলসে যায় নিষ্পাপ দুই সন্তান। আশপাশের লোকজন সন্তানদের আর্তচিৎকারে ছুটে এসে উদ্ধার কাজ চালায়। এর মধ্যে হৃদয় (৯) আগুনে পুড়ে ঘটনাস্থলেই মারা যায়। আরেক সন্তান অগ্নিদগ্ধ জিহাদকে (৭) উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে বার্ন ইউনিটে স্থানান্তর করে। পরে শুক্রবার সকালে পুলিশ এসে নিহত শিশুপুত্র হৃদয়ের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নারায়ণগঞ্জ হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে নিহত হৃদয়ের মা শেফালী বেগমকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। নিহত হৃদয়ের দাদা বিল্লাল হোসেন জানান, মোমেন তার দ্বিতীয় স্ত্রীর আগের সংসারের সন্তান। তাদের (শেফালীর সঙ্গে মোমেনের) সঙ্গে অবৈধ সম্পর্কের ঘটনায় কয়েকবার শাসন করেও তাদের ফেরানো যায়নি। তিনি জানান, স্ত্রীর পরকীয়ার কথা শুনে চার মাস আগে তার ছেলে আনোয়ার হোসেন ওমান থেকে দেশে ফিরে আসে। সে তার স্ত্রী শেফালী বেগমকে এ পথ থেকে ফেরাতে না পেরে স্ত্রী শেফালী বেগমকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয়। আনোয়ার পুনরায় তিন মাস আগে ওমান চলে গেলে শেফালী বেগম আবার ছেলেদের সঙ্গে থাকতে শুরু করে। আড়াইহাজার থানার ওসি এম এ হক জানান, শেফালী বেগমের সঙ্গে মোমেন মিয়া নামে এক যুবকের পরকীয়া চলছিল। যেহেতু ঘটনার সময় মোমেন মিয়া ওই বাড়িতেই ছিল। তাই ধারণা করা হচ্ছে, পরকীয়া প্রেমের জের ধরে মা শেফালী বেগম ও প্রেমিক মোমেন মিয়া আগুন দিয়ে পুড়িয়ে শিশুপুত্র হৃদয়কে হত্যা করে। এ ঘটনায় আরেক শিশুপুত্র জিহাদ অগ্নিদগ্ধ হয়েছে। জিহাদ ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে বিকেলে বাসায় ফিরেছে। এ ঘটনায় মা শেফালী বেগমকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। প্রেমিক মোমেন মিয়াকে গ্রেফতারে অভিযান চলছে।
×