ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

যুদ্ধাপরাধী বিচার

১৩ রাজাকারের বিরুদ্ধে চার্জ আমলে নেয়ার বিষয়ে আদেশ ৭ মে

প্রকাশিত: ০৫:১৫, ৬ এপ্রিল ২০১৮

  ১৩ রাজাকারের বিরুদ্ধে চার্জ আমলে নেয়ার  বিষয়ে আদেশ ৭ মে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে নওগাঁর মোঃ রেজাউল করিম মন্টুসহ তিন রাজাকার ও খুলনার শেখ আব্দুর রহিমসহ ১০ রাজাকারের বিরুদ্ধে ফরমাল চার্জ দাখিল করা হয়েছে ট্রাইব্যুনালে। দুই জেলার এই ১৩ রাজাকরের বিরুদ্ধে অভিযোগ আমলে নেয়া হবে কি হবে না সে বিষয়ে আদেশ প্রদান করা হবে ৭ মে। চেয়ারম্যান বিচারপতি মোঃ শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে তিন সদস্যবিশিষ্ট আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ বৃহস্পতিবার এ আদেশ প্রদান করেছেন। এ সময় প্রসিকিউশন পক্ষে উপস্থিত ছিলেন প্রসিকিউটর সৈয়দ হায়দার আলী, প্রসিকিউটর হৃষিকেশ সাহা, প্রসিকিউটর আবুল কালাম ও প্রসিকিউটর শেখ মুশফেক কবির। প্রসিকিউটর আবুল কালাম জনকণ্ঠকে বলেন, আমরা নওগাঁর মোঃ রেজাউল করিম মন্টুসহ তিন রাজাকারের বিরুদ্ধে তিনটি অভিযোগ দাখিল করেছি ট্রাইব্যুনালে। এই তিন আসামি হলেনÑ নওগাঁর মোঃ রেজাউল করিম মন্টু (৬৮), মোঃ নজরুল ইসলাম (৬৪), মোঃ শহিদ ম-ল (৬২) ও মোঃ ইসহাক (৬২)। আসামিদের মধ্যে মোঃ ইসহাক (৬২) তদন্ত চলার সময়ই গ্রেফতার অবস্থায় মারা যান। অন্যদিকে মোঃ নজরুল ইসলাম পলাতক রয়েছেন। আসামিরা নওগাঁর (সাবেক রাজশাহী জেলার নওগাঁ মহকুমা) বদলগাছী থানায় অপরাধ সংঘটন করে। সাতজনকে হত্যাসহ অবৈধভাবে আটক, নির্যাতন, অপহরণ, লুণ্ঠন ও অগ্নিসংযোগে সম্পদ ধ্বংসের অভিযোগ রয়েছে। আসামি রেজাউল করিম মন্টু ১৯৮৬ থেকে ১৯৯১ সাল পর্যন্ত জামায়াতে ইসলামী জয়পুরহাট জেলার আমির ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র মন্টু তখন থেকেই জামায়াতের রাজনীতিতে সক্রিয়। ‘মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে তিনি নিজ বাড়িতে চলে আসেন এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে অস্বীকার করে পাকিস্তানী দখলদার বাহিনীকে সহযোগিতা করার জন্য সশস্ত্র রাজাকার বাহিনীতে যোগ দেন। ১৬ ডিসেম্বর দেশ স্বাধীন হলে আত্মগোপনে গিয়েছিলেন মন্টু।’ মামলার বাকি আসামিরাও জামায়াতের সমর্থক। তাদের বিরুদ্ধে যে তিনটি অভিযোগ আনা হয়েছে সেগুলো হলোÑ প্রথম অভিযোগ-১. ১৯৭১ সালের ৭ অক্টোবর বিকেল আনুমানিক ৪টা থেকে রাত সাড়ে ৭টা পর্যন্ত সময়ে আসামিরা নওগাঁর বদলগাছী থানার পাহাড়পুর ইউনিয়নের রানাহার গ্রামে হামলা চালিয়ে স্বাধীনতার পক্ষের নিরীহ-নিরস্ত্র সাহেব আলী, আকাম উদ্দিন, আজিম উদ্দিন ম-ল, মোজাফফর হোসেনকে হত্যাসহ ওই সময় ১০-১২টি বাড়ি লুট করে অগ্নিসংযোগ করে বলে এ অভিযোগে বলা হয়েছে। অভিযোগ-২. ১৯৭১ সালের ৮ অক্টোবর দুপুর আনুমানিক দেড়টা থেকে বিকেল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত সময়ে আসামিরা নওগাঁর বদলগাছী থানার পাহাড়পুর ইউনিয়নের খোজাগাড়ী গ্রামে হামলা চালিয়ে স্বাধীনতার পক্ষের নিরীহ-নিরস্ত্র মোঃ নুরুল ইসলামকে হত্যা করে। এ সময় তারা ১৫-২০টি বাড়ি লুণ্ঠনের পর অগ্নিসংযোগ করে। অভিযোগ-৩. ১৯৭১ সালের ৮ অক্টোবর বিকেল আনুমানিক ৫টা থেকে পরদিন ৯ অক্টোবর আনুমানিক বিকেল ৫টা পর্যন্ত সময়ে নওগাঁর বদলগাছী থানার পাহাড়পুর ইউনিয়নের মালঞ্চা গ্রামে হামলা চালিয়ে স্বাধীনতার পক্ষের মোঃ কেনার উদ্দিন এবং মোঃ আক্কাস আলীকে অবৈধভাবে আটক করে নির্যাতন করে। পরে অপহরণ করে জয়পুরহাটের কুঠিবাড়ি ব্রিজে নিয়ে হত্যা করে। এই সময়ের মধ্যে আসামিরা ৪০ থেকে ৫০টি বাড়ি লুণ্ঠনের পর অগ্নিসংযোগ করে। খুলনার ১০ রাজাকার ॥ প্রসিকিউটর শেখ মুশফেক কবির জনকণ্ঠকে বলেন, আমরা খুলনার ১০ রাজাকারের বিরুদ্ধে ফরমাল চার্জ ট্রাইব্যুনালে জমা দিয়েছি। আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আমলে নেবে কি নেবে না সে বিষয়ে আদেশের জন্য ৭ মে দিন নির্ধারণ করা হয়েছে।
×