ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

ঠাকুরগাঁও সীমান্তে দু’দেশের লাখো মানুষের মিলন মেলা

প্রকাশিত: ০৫:৩৮, ২ ডিসেম্বর ২০১৭

ঠাকুরগাঁও সীমান্তে দু’দেশের লাখো মানুষের মিলন মেলা

নিজস্ব সংবাদদাতা, ঠাকুরগাঁও, ১ ডিসেম্বর ॥ জেলার হরিপুর উপজেলার কোঁচল ও চাঁপাসার এবং ভারতের নাড়গাঁও ও মাকারহাট সীমান্তের তাঁরকাটার এপারে-ওপারে প্রায় ৩ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে শুক্রবার দুই বাংলার লাখো মানুষের মিলন মেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বর্ষ পঞ্জিকা অনুযায়ী হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন প্রতিবছর শ্রী শ্রী জামর কালির জিউ (পাথরকালী) পূঁজা উপলক্ষে এ মেলা উদযাপন করেন। আর এ পূঁজা উপলক্ষে প্রতি বছরের এই দিনে দুই দেশের দূর-দূরান্ত থেকে স্বজনরা ভিড় করেন সীমান্তের ৩৪৫ ও ৩৪৬ নম্বর পিলার এলাকায়। প্রতি বছরের ন্যায় এবারও শুক্রবার সকাল থেকে দূর-দূরান্ত থেকে দুই দেশের স্বজনরা সীমান্তে সমবেত হতে থাকে। স্বজনদের সঙ্গে দেখা ও কথা বলার জন্য সকাল থেকে সীমান্তের এপারে-ওপারে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করতে দেখা যায় দুইদেশের হাজার হাজার মানুষকে। শেষ পর্যন্ত দুপুর ১২টায় স্বজনদের ধরে রাখতে পারেনি দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী। তারকাঁটার গেট না খুললেও অনানুষ্ঠানিকভাবেই তারকাঁটার এপারে-ওপারে দাঁড়িয়ে স্বজনদের দেখা ও কথা হয় একে অপরের সঙ্গে। আদান-প্রদান হয় নানা রকমের খাদ্য ও পণ্য সামগ্রী। পীরগঞ্জ উপজেলার দানাশপুর গ্রামের ভানুমতি (৫০) এবার দেখা করেছেন তার মেয়ে লাক্ষèী রাণীর সঙ্গে। আদরের ছোট মেয়ে থাকেন ভারতের নদিয়া গ্রামে। ১৫ বছর পর মেয়ের দেখা পেয়ে প্রথমে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। স্বজনদের সঙ্গে দেখা করতে আসা দিনাজপুর জেলার কাহারোল উপজেলার বাসিন্দা হাজেরা বেগম (৬৫) জানান, এবার দেখা করেছেন তার ছোট ভাই মুসার সঙ্গে। স্বাধীনতার সময় আমার বিয়ে হয়। সর্বশেষ ২০ বছর আগে বাবা-মা ও ভাই-বোনদের সঙ্গে আমার দেখা হয়েছিল। ২০ বছর পর আজ ভাই-বোনদের সঙ্গে দেখা পেয়ে খুব আনন্দ পেয়েছি। ভারতের স্বজনদের সঙ্গে দেখা করতে আসা রহিমা, শাকির. মাজেদা, লক্ষীরানী, গিতাদেবী সরেন মাড্ডীসহ একাধিক ব্যক্তি তারকাঁটার এপার-ওপারে দাঁড়িয়ে নিজ নিজ স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে এবং কাঁটাতারের ফাঁক দিয়ে মিষ্টি ও কাপড়-চোপড় দিতে পেড়ে আনন্দ অনুভূতির কথা ব্যক্ত করেন। হরিপুর থানার অফিসার ইনচার্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্জ রুহুল কুদ্দুছ বলেন, কড়া প্রহরা সত্ত্বেও অনেকে তারকাঁটার এপারে-ওপারে দাঁড়িয়ে বিভিন্ন স্থানে কথা বলেছেন ও খাদ্য বিনিময় করার ঘটনা ঘটেছে। এ ব্যাপারে শ্রী শ্রী জামর কালির জিউ (পাথরকালী) পূঁজা কমিটির সভাপতি নগেন কুমার পাল বলেন, এবার স্থানীয় প্রশাসন, বিজিবি ও বিএসএফ’র পক্ষ থেকে সীমান্তে সমবেত হতে বাধা না দেয়ার কারণে অন্য বছরের তুলনায় এবার দু-দেশের স্বজনরা সহজেই তারকাঁটার এপার-ওপারে দাঁড়িয়ে কথা বলেছেন ও খাদ্য বিনিময় করেছেন এবং প্রশাসনের সর্বাত্বক সহযোগিতায় প্রতিবারের ন্যায় এবারও আমাদের এ পূঁজা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়েছে।
×