ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

বাঁশখালীতে বালু উত্তোলনের হিড়িক

প্রকাশিত: ০৫:০৭, ২১ নভেম্বর ২০১৭

বাঁশখালীতে বালু উত্তোলনের হিড়িক

নিজস্ব সংবাদদাতা, বাঁশখালী, ২০ নবেম্বর ॥ চট্টগ্রামের বাঁশখালী পাহাড়ের পাদদেশের বিভিন্নস্থানে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের হিড়িক পড়েছে। এ কাজে জড়িয়ে পড়েছে স্থানীয় প্রভাবশালী মহলের বিশাল সিন্ডিকেট। এ নিয়ে সুপ্রীমকোর্ট বিভাগের হাইকোর্টের আদেশ মানছে না এ সিন্ডিকেট। পাহাড়ের পাদদেশে বেয়ে আসা ছড়া হতে বালু উত্তোলনের ফলে একদিকে যেমন বিনষ্ট হচ্ছে পরিবেশ, অন্যদিকে পাহাড় ধসে বিশাল ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে বনভূমি। এদিকে উপজেলার বিভিন্নস্থানে বালু উত্তোলনের খবর পেয়ে সম্প্রতি উপজেলার সাধনপুর ইউপির সাহেবেরহাট এলাকায় ইউনিয়ন পরিষদ সংলগ্ন ছড়া হতে অবৈধভাবে বিপুল পরিমাণ বালু উত্তোলনের দৃশ্য দেখা যায়। স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এখানে বালু উত্তোলনের কাজে রয়েছে একটি ১২ সদস্যের বিশাল সিন্ডিকেট। সিন্ডিকেটের আড়ালে রয়েছে প্রশাসনের কতিপয় ব্যক্তি। তাছাড়া থানা পুলিশকে ম্যানেজ করে এ সিন্ডিকেট বালু উত্তোলন করছে বলেও স্থানীয়দের অভিযোগ। এ ব্যাপারে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন চৌধুরী খোকার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ বিষয়ে অবগত নন বলে জানান। সরেজমিন পরিদর্শনকালে দেখা যায়, উপজেলার সাধনপুর ইউপির সাহেবেরহাট এলাকার সদ্য জেল ফেরত আবুল বশর ও এরশাদের নেতৃত্বে পাহাড়ের পাদদেশে ছড়া থেকে বিশাল অংশজুড়ে উত্তোলন করে বিক্রির উদ্দেশে স্তূপ করে রেখেছে। এ সিন্ডিকেটের পাশাপাশি রয়েছে ছোটখাট অনেক বালু ব্যবসায়ী। প্রতিদিন ১ থেকে ২শ’ ট্রাক বালু বিক্রি করে তারা। ট্রাকযোগে নেয়া হচ্ছে বিভিন্ন এলাকায়। প্রতি ট্রাক বালু ২ থেকে আড়াই হাজার টাকা মূল্যে বিক্রি করা হয়। এদিকে প্রাকৃতিক সম্পদ বিনষ্ট করে অধিক মুনাফার আশায় প্রভাবশালী বালু উত্তোলন সিন্ডিকেটে জড়িয়ে পড়ছে। সিন্ডিকেটে রয়েছে রাজনৈতিক দলের কতিপয় নেতা ও প্রশাসনের ব্যক্তিবর্গ। এ ব্যাপারে বাণীগ্রাম সাধনপুর ইউপির উপভূমি অফিসের তহশিলদার দিদারুল আলম বাদী হয়ে কয়েক মাস পূর্বে বাঁশখালী থানায় একটি মামলা দায়েরও করেছিলেন। উক্ত মামলায় থানা পুলিশ বালু উত্তোলনকারী সিন্ডিকেটের মূল হোতা আবুল বশর ও এরশাদকে আটক করে আদালতে সোপর্দ করলে তাদের জেল হাজতে প্রেরণ করেন। এদিকে আবুল বশর ও এরশাদ উক্ত মামলা থেকে জামিনে বেরিয়ে এসে পুনরায় বেপরোয়া বালু উত্তোলনের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর। এ ব্যাপারে সদ্য যোগদানকৃত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাসুদুর রহমান মোল্লার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, উপজেলার বিভিন্নস্থানে বালু উত্তোলনকারীদের তালিকা প্রণয়ন করা হচ্ছে। শ্রীঘ্রই এদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা হবে। তাছাড়া সাধনপুর সাহেবেরহাট এলাকায় বালু উত্তোলনের খবর পাওয়া মাত্র পুলিশ পাঠিয়ে বন্ধ করে দেয়া হচ্ছে বলেও তিনি জানান।
×