ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

ঝালকাঠিতে জয়িতাকে মামলা দিয়ে হয়রানির অভিযোগ

প্রকাশিত: ০৬:০৬, ৪ নভেম্বর ২০১৭

ঝালকাঠিতে জয়িতাকে মামলা দিয়ে হয়রানির অভিযোগ

নিজস্ব সংবাদদাতা, ঝালকাঠি, ৩ নবেম্বর ॥ জেলার নির্বাচিত শ্রেষ্ঠ জয়িতা ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে ১৪টি মামলা দিয়ে হয়রানির অভিযোগ পাওয়া গেছে এক ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে। এমনকি ওই জয়িতাকে হত্যার ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। রাজাপুর উপজেলার সাতুরিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা সিদ্দিকুর রহমানের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ করেন জয়িতা হেলেনা বেগম। শুক্রবার সকালে ঝালকাঠি প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি ইউপি চেয়ারম্যান সিদ্দিকুর রহমানকে গ্রেফতার এবং বিচারের দাবি জানান। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান ২০১৩ সালে জেলার অর্থনৈতিক ক্যাটাগরিতে নির্বাচিত শ্রেষ্ঠ জয়িতা হেলেনা বেগম। লিখিত বক্তব্যে তিনি অভিযোগ করেন, ২০০২ সালে সাতুরিয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ তারাবুনিয়া গ্রামে তিনি ‘তারাবুনিয়া দুস্থ নারী কল্যাণ সমিতি’ নামে একটি সংগঠন গড়ে তোলেন। হেলেনা বেগম ওই সংগঠেনের সভাপতি নির্বাচিত হন। গ্রামের দুস্থ নারীদের সংগঠিত করে তিনি সেলাই প্রশিক্ষণ দেন। সমিতির ১২০ সদস্যের তৈরি হস্তশিল্পসামগ্রী রাজধানী ঢাকার অভিজাত এলাকার বিপণিবিতানে সরবারাহ করে আসছেন। সাতুরিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সিদ্দিুকুর রহমানের সঙ্গে গত বছরের ২২ মার্চের ইউপি নির্বাচনের সময় বিরোধ শুরু হয় তার। নির্বাচন না করায় হেলেনা বেগমের ওপর ক্ষিপ্ত হয় সিদ্দিকুর রহমান। চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে হেলেনা বেগম ও তার পরিবারের ওপর নানাভাবে নির্যাতন শুরু করা হয়। গত ২৪ মে ইউপি চেয়ারম্যান সিদ্দিকুর রহমান ও তার সহযোগী মাহামুদ, জাকির এবং মনু জয়িতা হেলেনা বেগমের ছেলে নাজমুল হাসান রাহাতকে মারধর করে। এতে সে আহত হলে মারধরের ঘটনা ধামাচাপা দিতে পুলিশ খবর দিয়ে চার পিস ইয়াবা রাহাতের পকেটে গুঁজে দিয়ে তাকে পুলিশের হাতে তুলে দেয়া হয়। রাজাপুর থানা পুলিশ রাহাতকে গ্রেফতার দেখিয়ে ইয়াবাসহ আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠায়। এ ঘটনার পর হেলেনা বেগম বাদী হয়ে ঝালকাঠির সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ইউপি চেয়ারম্যান সিদ্দিকুর রহমানসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে রাহাতকে মারধর এবং ইয়াবা গুঁজে দেয়ার অভিযোগে একটি নালিশী মামলা দায়ের করেন। আদালত অভিযোগ গ্রহণ করে তা তদন্তের জন্য বরিশাল পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) নির্দেশ দেয়। ওই মামলায় পিবিআই সিদ্দিকুর রহমানের বিরুদ্ধে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করে। প্রতিবেদনে রাহাতকে মারধরের অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় আদালত সিদ্দিকুর রহমানের নামে সমন জারি করে। হেলেনা বেগম মামলা দায়ের করার কারণে ক্ষিপ্ত হয়ে গত পাঁচ মাসে সিদ্দিকুর রহমান তার নিজস্ব লোকজন দিয়ে হেলেনা বেগম এবং তার ছেলের নামে নানা অভিযোগে ১৪টি মামলা ও অভিযোগ দায়ের করে। মামলা করার পর লোকজন দিয়ে হেলেনা বেগমকে হত্যার ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে বলেও সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে আবেগাপ্লুত হয়ে হেলেনা বেগম বলেন, সিদ্দিক চেয়ারম্যান এক সময় ডাকাত দলের সদস্য ছিল। একটি ডাকাতি মামলায় তার সাত বছরের জেল হয়। এখনও তার স্বভাব চরিত্র ডাকাতের মতো। যে কোন সময় চেয়ারম্যান আমার ওপর হামলা করতে পারে। আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছে চেয়ারম্যান সিদ্দিকুর রহমানকে গ্রেফতার এবং বিচারের দাবি করছি।এ বিষয়ে সাতুরিয়া ইউপি চেয়ারম্যান ও রাজাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান বলেন, আমি হেলেনা বেগমের নামে কোন মামলা করিনি। তিনি একটি মামলা করেছেন, ওই মামলার আসামিরা তার নামে মামলা করেছে। এছাড়া তার ছেলে একজন মাদকসেবী। এলাকার লোকজনকে মারধর করে, তারা ওর নামে মামলা করেছে। এসব মামলার পেছনে আমার কোন সহযোগিতা নেই।
×