বিশেষ প্রতিনিধি ॥ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপিকে মাঠের বাইরে রেখে ফাঁকা মাঠে গোল দেবে না আওয়ামী লীগ। নির্বাচনী মাঠে আওয়ামী লীগ দুর্বল নয়, শক্তিশালী প্রতিপক্ষ চায়। আমরা চাচ্ছি বিএনপি আসুক। আমরা শক্তিশালী প্রতিপক্ষকে পরাজিত করে আবারও বিজয়ী হতে চাই। আর আগামী নির্বাচনের সঙ্গে বিএনপিপ্রধান খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানার কোন সম্পর্ক নেই।
রাজধানীর মিরপুর ১৩ নম্বরে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের ২৯তম কঠিন চিবর দান ও শাক্যমনি বৌদ্ধবিহারের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন উপলক্ষে এক সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি এ কথা বলেন। পার্বত্য বৌদ্ধ সংঘ বাংলাদেশ ও শাক্যমনি বৌদ্ধবিহার পরিচালনা কমিটি ওই সভার আয়োজন করে। ‘বিএনপিকে নির্বাচন থেকে বাইরে রাখতে খালেদা জিয়ার গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি’- বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলামের এমন অভিযোগ নাকচ করে দিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, এ গ্রেফতারি পরোয়ানা কে জারি করেছে? সরকার, সরকারের পুলিশ বাহিনী, না আদালত? এ গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে আদালত। সরকার এ গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেনি। এটা আইনের ব্যাপার, এটা মামলা সংক্রান্ত বিষয়।
তিনি বলেন, আদালত যখন ষোড়শ সংশোধনীর রায় প্রদান করে তখন বাংলাদেশের বিচার বিভাগ স্বাধীন আর নিজেদের বেলায় হলে সরকারের দোষ! খালেদা জিয়া একটি মামলায় ১৫০ বার সময় নিয়েছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, এখন তো তিনি বিদেশে। দলের কাছে দুই মাসের ছুটি নিয়েছেন, কিন্তু হয়ে গেছে চার মাস। ফখরুল সাহেবও জানেন না খালেদা জিয়া কবে আসবেন। তাহলে তার জন্য আদালতের হাজিরা আর কতকাল বন্ধ রাখতে হবে?
ওবায়দুল কাদের বলেন, নির্বাচনের সঙ্গে আদালতের আদেশের কী সম্পর্ক? বিএনপি একটি বড় দল। তাদের বাইরে রেখে ফাঁকা মাঠে গোল দেব না। উন্নয়ন ও অর্জনের বহু কর্ম আছে আওয়ামী লীগের। আমরা উন্নয়ন অর্জনে এমন অবস্থায় পৌঁছেছি, শেখ হাসিনার জনপ্রিয়তা এখন অভ্রভেদীর তুঙ্গে। একটি পদ্মা সেতু করে যা করেছেন শেখ হাসিনা, বিএনপি গোটা শাসনামলে তা করতে পারেনি। আর গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে আদালত। তাই শক্তিশালী প্রতিপক্ষকেই পরাজিত করবে আওয়ামী লীগ।
রোহিঙ্গা ইস্যুতে ওবায়দুল কাদের বলেন, রোহিঙ্গা স্রোত সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিতে আঘাত হানবে না। সাম্প্রদায়িক যে কোন সংঘাত মোকাবেলায় সরকার প্রস্তুত রয়েছে। ২৫ আগস্টের পর রোহিঙ্গা মুসলমানদের কান্না যখন বাংলাদেশের নদী-সাগরে মিলছে, তখন অনেকেই সংঘাতের আশঙ্কা করেছিলেন। কিন্তু শঙ্কা দূর হয়েছে সরকারের শক্ত অবস্থানের কারণেই।
বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের উদ্দেশে তিনি বলেন, শেখ হাসিনার সরকার দেশের সব মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিতকল্পে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। আপনারা মাথা উঁচু করে বেঁচে থাকুন, অন্যায়ের প্রতিবাদ করুন। ভবিষ্যতে কোন অবস্থায় যাতে রামু বৌদ্ধমন্দিরের সেই বিপর্যয়কর পরিস্থিতি না ঘটে এ বিষয়ে সরকার সজাগ ও সচেষ্ট। তিনি বলেন, যারা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করে তাদের কোন দল নেই। শেখ হাসিনা তাদের প্রতিরোধ করতে প্রস্তুত। সরকারের বাকি মেয়াদে পার্বত্য শান্তিচুক্তির শতকরা ৮০ ভাগ বাস্তবায়ন হবে বলেও উল্লেখ করেন ওবায়দুল কাদের।
পার্বত্য বৌদ্ধ সংঘের সভাপতি ভদন্ত প্রজ্ঞানন্দ মহাথেরোর সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য রাখেন সংসদ সদস্য কামাল আহমেদ মজুমদার, আওয়ামী লীগের উপ-দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, সাবেক রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল (অব) অনুপ কুমার চাকমা, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের প্যানেল মেয়র জামাল মোস্তফা, পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের সদস্য কে এস মং প্রমুখ।