ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

প্রাইভেট না পড়ায় ৯ ছাত্রীকে পেটাল শিক্ষক

প্রকাশিত: ০৫:৪২, ১৮ আগস্ট ২০১৭

প্রাইভেট না পড়ায় ৯ ছাত্রীকে পেটাল শিক্ষক

স্টাফ রিপোর্টার, বাগেরহাট ॥ চিতলমারী হাসিনা বেগম মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের এক শিক্ষকের নির্মম মারপিটের শিকার অষ্টম শ্রেণীর নয় ছাত্রীর মধ্যে অসুস্থ চারজনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভর্তি করা হয়েছে। অসুস্থদের দাবি, ‘স্যার’-এর কোচিং সেন্টারে প্রাইভেট না পড়ার কারণে তাদের ওপর এ নিষ্ঠুরতা চালানো হয়েছে। এমনই অভিযোগ তুলে ওই স্কুলের সহকারী প্রধান শিক্ষক শামিম হোসেনের বিরুদ্ধে আহত ছাত্রীর বাবা মোতালেব শেখ উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন। বৃহস্পতিবার সকালে এ ঘটনায় স্কুলের প্রধান শিক্ষক শৈলেন্দ্র নাথ বাড়ই জরুরী বৈঠক ডাকলেও কোন অভিভাবক বৈঠকে হাজির হননি। অভিযোগে জানা গেছে, চিতলমারী হাসিনা বেগম মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক মোঃ শামিম হোসেন গত বুধবার অষ্টম শ্রেণীর নয় ছাত্রীকে নির্মমভাবে মারপিট করেন। এদের মধ্যে চারজন অসুস্থ হয়ে পড়লে বৃহস্পতিবার সকালে মরিয়ম আক্তার (১৫), মুর্শিদা আক্তার (১৪), শাহানারা আক্তার (১৩) ও আঁখি আক্তার (১৫) নামের চার ছাত্রীকে উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভর্তি করা হয়। খবর জানাজানি হলে অভিভাবক মহলে চরম অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়ে। স্বাস্থ্য কেন্দ্রের মেডিক্যাল এ্যাসিস্ট্যান্ট সেফালি জানান, আহত ওই চার ছাত্রীকে জরুরী বিভাগে ভর্তি করা হয়। তারপর তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। মারপিটের শিকার ছাত্রীরা কান্নাজড়িত কণ্ঠে জানায়, উপজেলা রোডের বেসিক ব্যাংকের পশ্চিম পার্শ্বে পাশাপাশি শামিম স্যার ও আমিনুল স্যারের পৃথক দুটি কোচিং সেন্টার রয়েছে। শামিম স্যারের কোচিং সেন্টারে প্রাইভেট না পড়ার কারণে তিনি তাদের ওপর এ নিষ্ঠুরতা চালিয়েছেন। শরীরের বিভিন্ন জায়গায় বেত দিয়ে পিটিয়ে আহত করেছেন। অভিযোকারী বাবা মোঃ মোতালেব শেখ জানান, শামিম স্যার তার মেয়েসহ ওই ছাত্রীদের নির্মমভাবে পিটিয়েছেন। তিনি এ শিক্ষকের বিচার দাবি করেন। মোঃ শামিম হোসেন জানান, বুধবার টিফিন পিরিয়ডে বেশ কয়েজন শিক্ষার্থী বেসিক ব্যাংকের সামনে একটি কোচিং সেন্টারে গোলমাল (আড্ডা) করছে- এমন সংবাদের ভিত্তিতে তিনি চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী আবুল হোসেনকে নিয়ে ওই কোচিং সেন্টারে গিয়ে দেখেন ৮-৯ জন ছাত্রী সেখানে অবস্থান করছে। এ সময় তিনি তাদের স্কুল অফিসকক্ষে এনে সব শিক্ষকের সামনে শাসন করেন। তিনি এখন ভিলেজ পলিটিক্সের শিকার বলে দাবি করেন। হাসিনা বেগম মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শৈলেন্দ্র নাথ বাড়ই জানান, ছাত্রীদের মারপিটের ঘটনায় স্কুল অফিসকক্ষে জরুরী সভার আহ্বান করা হয়। কিন্তু অভিভাবকরা উপস্থিত না হওয়ায় আগামী রবিবার পুনরায় সভার দিন ধার্য করা হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আবু সাঈদ জানান, ছাত্রীদের মারপিটের বিষয়ে অভিভাবকরা একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। তাছাড়া তিনি মারপিটের প্রমাণ পেয়েছেন। অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
×