স্টাফ রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশ থেকে ৪১৮ যাত্রী নিয়ে বিমানের প্রথম হজ ফ্লাইট সৌদি আরবের জেদ্দা বিমানবন্দরে পৌঁছেছে। সোমবার সৌদি সময় বেলা ১১টা ১২ মিনিট ও বাংলাদেশ সময় দুপুর ২টা ১২ মিনিটে জেদ্দার কিং আব্দুল আজিজ বিমানবন্দরের রানওয়েতে নামে ফ্লাইটটি। আন্তর্জাতিক ফ্লাইট ট্র্যাকিং ওয়েবসাইট ফ্লাইট স্ট্যাটাস বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। বিমানবন্দরে হজযাত্রীদের স্বাগত জানাতে বাংলাদেশী রাষ্ট্রদূত ছাড়াও সৌদি সিভিল এভিয়েশনের বিভিন্ন কর্মকর্তাসহ দুই দেশের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
প্রথম ফ্লাইটের পর আরও দুটি ফ্লাইট বিজি-৩০১১ দুপুর ১টা ৫৫ মিনিটে ৪১৮ জন, বিজি-৭০১১ সন্ধ্যা ৭টা ৫৫ মিনিটে ৪১৮ যাত্রী নিয়ে ঢাকা ছাড়ে। সিডিউল ফ্লাইটেও (বিজি-০০৩৫) রাত ৮টা ৪০ মিনিটে কজন হজযাত্রী নিয়ে জেদ্দার উদ্দেশে ঢাকা ছাড়ার সিডিউল ছিল।
এর আগে সোমবার সকালে বাংলাদেশ বিমানের বিশেষ (বিজি-১০১১) ফ্লাইটটি হজযাত্রীদের নিয়ে ঢাকার হযরত শাহজালাল বিমানবন্দর ছেড়ে যায়। এ সময় বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন ও ধর্মমন্ত্রী অধ্যক্ষ মতিউর রহমান বিমানবন্দরে হজ ফ্লাইটের উদ্বোধন করে হজযাত্রীদের বিদায় জানান। প্রথম হজ ফ্লাইটের উদ্বোধনকালে মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন জানান, এবারের প্রথম হজ ফ্লাইটে যাত্রীর সংখ্যা ৪১৮। চট্টগ্রাম এবং সিলেট থেকেও এ বছর যথারীতি প্রয়োজনীয়সংখ্যক হজ ফ্লাইট পরিচালনা করা হবে। গত শনিবার সকাল ১০টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আশকোনায় হজ ক্যাম্পে হজ কার্যক্রমের উদ্বোধন ঘোষণা করেন।
এ বছর হজ ফ্লাইট ও সিডিউল ফ্লাইটে মোট ৬৩ হাজার ৫৯৯ জন (ব্যালটি ও নন-ব্যালটি) ধর্মপ্রাণ মুসলমান হজ পালনে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সে জেদ্দা যাবেন। এসব হজযাত্রীকে ঢাকা-জেদ্দা-ঢাকা রুটে পরিবহনের জন্য বিমান ইতোমধ্যেই নিজস্ব সুপরিসর বোয়িং ট্রিপল সেভেন উড়োজাহাজ প্রস্তুত রেখেছে। এছাড়া ৪০৬ আসনের লিজের বোয়িং ৭৭৭-২০০ উড়োজাহাজে হজযাত্রীদের পরিবহন করা হবে। ঢাকা-জেদ্দা-ঢাকা রুটে চলাচলকারী বিমানের নিয়মিত সিডিউল ফ্লাইটেও কিছু হজযাত্রী পবিত্র ভূমিতে যাবেন। পবিত্র হজের গুরুত্ব ও ধর্মপ্রাণ মানুষের ধর্মীয় অনুভূতিকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স একটি নিরবচ্ছিন্ন হজ কার্যক্রম পরিচালনায় দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।
বাংলাদেশ থেকে এ বছর এক লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন হজযাত্রী পবিত্র হজব্রত পালনে সৌদি আরব যাবেন। এর মধ্যে বিমানে যাবেন মোট ৬৩ হাজার ৫৯৯ হজযাত্রী। সরকারী ব্যবস্থাপনায় যাবেন চার হাজার ৯০ জন। অবশিষ্ট ৫৯ হাজার ৫০৯ জন যাবেন বেসরকারী ব্যবস্থাপনায়। এ বছর ঢাকা-জেদ্দা-ঢাকা রুটে হজযাত্রীদের ইকোনমি ক্লাসে বিমান ভাড়া এক হাজার ৪৭৫ মার্কিন ডলার নির্ধারণ করা হয়েছে। এর সঙ্গে যোগ হবে অন্যান্য কর। ঢাকা থেকে জেদ্দা প্রতি ফ্লাইটের উড্ডয়নকাল হবে আনুমানিক সাত ঘণ্টা।
দুই মাসব্যাপী হজ ফ্লাইট পরিচালনায় সিডিউল ফ্লাইটসহ মোট ৩৪৬টি ফ্লাইট পরিচালনা করা হবে, যার মধ্যে ২৮৩টি ডেডিকেটেড এবং ৬৩টি সিডিউল ফ্লাইট। সোমবার (২৪ জুলাই) থেকে ২৬ আগস্ট পর্যন্ত (প্রি-হজ) মোট ১৭৭টি ফ্লাইট পরিচালনা করা হবে (ডেডিকেটেড ১৪৪ এবং সিডিউল ৩৩)। পোস্ট-হজে ১৬৯টি ফ্লাইট চলবে ৬ সেপ্টেম্বর থেকে ৫ অক্টোবর পর্যন্ত (ডেডিকেটেড ১৩৯ এবং সিডিউল ৩০)। হজ ফ্লাইট পরিচালনার জন্য বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ঢাকা-জেদ্দা উভয় স্থানেই বিশেষ ব্যবস্থার আয়োজন করেছে।
হজ ফ্লাইটের অন টাইম ডিপার্সারের জন্য গত কয়েকদিন ধরে কাজ করে আসছে বিমানের এয়ারপোর্ট সার্ভিস শাখা। শাখার জিএম নুরুল ইসলাম হাওলাদার ও ডিজিএম শেখ মাকসুদ রেজা জানান, হজ ফ্লাইটগুলো নির্বিঘœ করতে বিমানের গ্রাউন্ড সার্ভিসসহ এয়ারপোর্ট সার্ভিসের আট শতাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারীকে সদাতৎপর রাখা হয়েছে, যে কারণে এবারের হজ ফ্লাইটে সিডিউল বিপর্যয় বা লাগেজ বিড়ম্বনার সম্ভাবনা কম।
