ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

অবশেষে ইউএনও ধরিয়ে দিলেন চিরকুট

প্রকাশিত: ০৬:৪৫, ১৪ জুন ২০১৭

অবশেষে ইউএনও ধরিয়ে দিলেন চিরকুট

হাসিব রহমান, ভোলা ॥ অনশনসহ ২৬ দিন ধরে লালমোহনে প্রশাসন থেকে শুরু করে রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের কাছে ঘুরে স্বামীর ও তার পরিবারের স্বীকৃতি না পেয়ে অন্তঃসত্ত্বা দিপ্তি রানী দাসকে ভোলা ছাড়তে হলো! লালমোহনের ইউএনও সামসুল আরেফিন সামাজিকভাবে দায়িত্ব নিলেও শেষে পর্যন্ত তিনি দিপ্তি রানীর প্রতারক স্বামী উজ্জ্বল চন্দ্র দাসকে খুঁজে বের করার সিদ্বান্ত দিয়ে একটি চিরকুট ধরিয়ে দেন। আর তাকে খুঁজে বের করতে হবে প্রতারণার শিকার অসহায় দিপ্তি রানীকে। শুধু তাই নয়, উজ্জ্বলের পিতা প্রভাবশালী ধনকুব কালি পদ দাস দিপ্তি রানীকে লালমোহন থেকে বিতারিত করতে আদালতে তার বিরুদ্ধে মামলাও করেছেন। এদিকে প্রশ্ন উঠেছে, ইউএনও জানলো কিভাবে উজ্জ্বলের ঠিকানা? আর উজ্জ্বলের ঠিকানা তিনি জেনে থাকলে কেন তাকে ধরে আনার দায়িত্ব না নিয়ে দায়িত্ব দিপ্তির ঘাড়ে দিলেন? এ রকম নানা প্রশ্ন উঠেছে ইউএনওর ভূমিকা নিয়ে। মঙ্গলবার দুপুরে ভোলা প্রেসক্লাবে এসে সাংবাদিকদের কাছে দিপ্তি রানী তার জীবনের চরম অনিশ্চয়তা কথা জানান। দিপ্তি রানী লালমোহনে অনেকটা পুলিশী নিরাপত্তার মাঝেও জিম্মিদশায় থাকার পর সাংবাদিকদের কাছে তিনি তার অতীত ও বতর্মানের সব ঘটনা খুলে বলেন। তিনি জানান, তিনি গাজীপুর ইউটা নামক একটি গার্মেন্টসে চাকরি করতেন। উজ্জ্বল পাশেই হোরাইজান নামক একটি গার্মেন্টসে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে চাকরি করতেন। পাশাপাশি বাসায় বসবাস করায় গত দেড় বছর আগে তাদের সম্পর্ক হয়। তারপর উজ্জ্বল বিয়ের প্রস্তাব দেয়। উজ্জ্বল তাকে হিন্দু ধর্ম অনুসারে মন্দিরে বিয়ে করে। বিয়ের পর এক বছর এক ঘরে সংসার করে। এর মাঝে দিপ্তি একবার অন্তঃসত্ত্বা হলে সেই সন্তান উজ্জ্বল নষ্ট করে দেয়। এরপর দ্বিতীয়বার অন্তঃসত্ত্বা হলে দিপ্তি উজ্জ্বলের কাছে তার পরিবারে কাছ থেকে সামাজিক স্বীকৃতি চায়। তা না দিয়ে একাই দিপ্তিকে উজ্জ্বলের মা-বাবার কাছ থেকে স্বীকৃতি আনতে লালমোহনে বাড়ির ঠিকানা দেয়। তারপর সুকৌশলে উজ্জ্বল আত্মগোপনে কয়েক দিন থেকে দিপ্তির সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ রাখে। পরে তার সব নম্বর বন্ধ করে দেয়। কোন উপায় না দেখে দিপ্তি মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরে কোন সহায়তা না পেয়ে একাই উজ্জ্বলের বাবা কালপদ দাসের ঘরের দরজায় ৫ মে অনশন করে। সেখান থেকে রাত ১২টায় লালমোহনের ইউএনও নিরাপত্তার জন্য উদ্ধার করে লালমোহন পৌর সভার ৬নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর রনজয় কুমার দাসের বাড়িতে পুলিশ প্রহরায় তাকে রাখেন। ইউএনও তাকে সামাজিকভাবে ঘরে তুলে দেয়ার আশ্বাস দিলেও শেষ পর্যন্ত সোমবার কাউন্সিলরের বাড়ি থেকে ডেকে দিপ্তিকে বলেন, তার স্বামীকে খুঁজে দিতে। তার স্বামী উজ্জ্বল শরিয়তপুর ব্রজেশ্বর, নড়িয়া জনতা ব্যাংকের পাশ্বে রয়েছে বলে একটি ঠিকানা চিরকুট লিখে ধরিয়ে দেন। তার স্বামীকে আনলেই দিপ্তিকে ঘরে তুলে দেবেন। তাছাড়া তার কিছু করার নাই।
×