ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

ভারতকে হারাতে ‘রিচার্জ’ হচ্ছেন মাশরাফিরা

প্রকাশিত: ০৬:০৮, ১৩ জুন ২০১৭

ভারতকে হারাতে ‘রিচার্জ’ হচ্ছেন মাশরাফিরা

‘আমরা করব জয়।’-এ গানটি বহুদিন আগে থেকেই বাংলাদেশ দলের সঙ্গে অঙ্গাঅঙ্গিভাবে জড়িয়ে গেছে। আগে জিতলেই ক্রিকেটাররা সবাই মিলে ড্রেসিংরুমে গানটি করতেন। এখন বড় কোন প্রাপ্তি মিললে গানটি গাওয়া হয়। আগে গানটি গাওয়ার পর পার্টিও হত। কিন্তু এখন? নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে জেতার পর রোজার দিন থাকায় ক্রিকেটাররা কোন পার্টি করেননি। ক্রিকেটাররা রোজা রেখেছেন। বাংলাদেশ দলের প্রধান কোচ এতটাই খুশি হয়েছেন, ক্রিকেটারদের তিনদিন বিশ্রাম দিয়েছেন। আর সেই বিশ্রাম নিয়ে মাশরাফিরাও যেন সেমিফাইনাল খেলতে নামার আগে ‘রিচার্জ’ হয়ে নিচ্ছেন। সেমিফাইনালটি হবে কার সঙ্গে? ভারতের সঙ্গে। ভারতকে হারাতে তাই ‘রিচার্জ’ হচ্ছেন বাংলাদেশ ক্রিকেটাররা। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে গ্রুপ পর্বের ম্যাচটি শেষ হয়েছে শুক্রবার। এরপর শনিবার বাংলাদেশ ক্রিকেট দল কার্ডিফেই ছিল। ইংল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়া ম্যাচ দেখেছে। কার্ডিফ ঘুরে বেড়িয়েছে। কার্ডিফের সোফিয়া গার্ডেন বাংলাদেশকে শুধুই দিয়েছে। ২০০৫ সালে অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়েছে দল। এবার নিউজিল্যান্ডকে হারিয়েছে। ঐতিহাসিক জয় মিলেছে। এখানে জিতে দল সেমিফাইনালেও উঠে গেছে। কার্ডিফ তাই বাংলাদেশের জন্য ‘লাকি’ ভেন্যুই হয়ে গেল। জেতার পরের দিন ক্রিকেটাররা বিশ্রামেই ছিলেন। রবিবার ক্রিকেটাররা বার্মিংহ্যামে যান। বাংলাদেশ যে সেমিফাইনাল ম্যাচ বার্মিহ্যামেই খেলবে। সেদিন কার্ডিফ থেকে বার্মিংহ্যাম যাওয়ায় খানিক ক্লান্ত ছিলেন ক্রিকেটাররা। তাই বিশ্রামে ছিলেন। খেলা যেহেতু বৃহস্পতিবার। হাতে আরও দুইদিন আছে। তাই সোমবারও ক্রিকেটারদের বিশ্রাম দেওয়া হয়। সেই বিশ্রামের দিনে শুধু জিম করে কাটান ক্রিকেটাররা। আর হোটেলে থাকেন। একটু ঘুরাঘুরি করে নিজেদের ‘রিচার্জ’ করে নেন। আজ থেকে শুরু হয়ে যাবে সেমিফাইনালে খেলতে নামার জন্য অনুশীলন। সোমবার পর্যন্ত বিশ্রামের পেছনে আরেকটি কারণও আছে। এ দিনটিতে শ্রীলঙ্কা-পাকিস্তান ম্যাচ হয়। এই ম্যাচটির আগে যে নিশ্চিত ছিল না সেমিফাইনালে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ কোন দল। তাই পরিকল্পনা করে এগিয়েও যাওয়া সম্ভব হচ্ছিল না। পাশাপাশি ক্রিকেটারদেরও একটু বিশ্রাম হয়ে গেল। তবে শ্রীলঙ্কা-পাকিস্তান ম্যাচের এক ইনিংস শেষ না হওয়ার আগেই বোঝা হয়ে যায়, সেমিফাইনালে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ হচ্ছে ভারত। আর তাই পরিকল্পনাও শুরু হয়ে যায়। এখন আজ থেকেই ভারতকে হারানোর প্রস্তুতি পুরোদমে শুরু করে দেবে বাংলাদেশ। এপ্রিলের শেষ দিক থেকে এখনও ইংল্যান্ডে আছে বাংলাদেশ দল। দলের ক্রিকেটাররা। দীর্ঘ ৪৬ দিন হয়ে গেছে। সামনে আরও কয়েকটা দিন থাকতে হবে। বৃহস্পতিবার সেমিফাইনাল ম্যাচ আছে। যদি সেটিও জিতে যায় বাংলাদেশ, তাহলে ১৮ জুন যে ফাইনাল হবে, সেই পর্যন্ত থাকতে হবে। তার মানে আপাতত সবমিলিয়ে ৫০ দিন ইংল্যান্ডে থাকতে হচ্ছে বাংলাদেশ দলকে। এমন অবস্থায় ক্রিকেটাররাও স্বাভাবিকভাবে খানিক অবসাদগ্রস্থ হয়ে যাওয়ার কথা। তবে স্ত্রী-সন্তানরা ক্রিকেটারদের সঙ্গে থাকায় খানিক অবসাদগ্রস্থতা দুর হয়েছে। আবার সেমিফাইনালে ওঠায় মনের ভেতর আনন্দ আছে। শান্তি আছে। এ বিষয়গুলোও অবসাদ দুর করে দেওয়ার জন্য টনিক হিসেবে কাজ করছে। টানা হারতে থাকলে এতদিন যে ইংল্যান্ডে আছে দল, এটিই বড় হয়ে ধরা দিত। সেই এপ্রিলের ২৭ তারিখে ইংল্যান্ডে এসেছে বাংলাদেশ দল। সাসেক্সে এসে শুরুতে ১০দিন প্রস্তুতি ক্যাম্প করেছে। দুটি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলেছে। এরপর আয়ারল্যান্ডে তিনজাতি সিরিজ খেলতে গেছে। সেখানে তিনজাতি সিরিজ খেলে স্বস্তি মিলেছে। নিউজিল্যান্ডকে হারানোতে দুর্দান্ত খেলেছে বাংলাদেশ। এরপর চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতেতো সেমিফাইনালেই উঠে গেল দল। এখন একটি ম্যাচ জিতলেই ফাইনালে উঠে যাবে বাংলাদেশ। সেই ম্যাচটির আগে বিশ্রাম নিয়ে ‘রিচার্জ’ হচ্ছেন ক্রিকেটাররা। সেই ম্যাচটি ভারতের বিপক্ষে। যে ভারতকে হারাতে সবসময়ই চায় বাংলাদেশ। দলটির সঙ্গে সবসময়ই ভাল খেলেও বাংলাদেশ। এবার আরও ভাল খেলে জিততে চায় বাংলাদেশ। জিততে ‘রিচার্জ’ও হয়ে নিচ্ছেন ক্রিকেটাররা।
×