বিডিনিউজ ॥ বেশ অনেকটা সময় পেরিয়ে যাওয়ায় মন্ত্রিসভায় রদবদল হতে পারে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে সোমবার সচিবালয়ে মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠক থেকে বের হয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী কাদের এই আভাস দেন।
নতুন রাজনৈতিক জোট গঠনের প্রেক্ষাপটে সংসদে বিরোধী দলের ভূমিকায় থাকা জাতীয় পার্টি মন্ত্রিসভা থেকে বেরিয়ে গেলে নতুন মুখ দেখা যাবে কিনা তা জানতে চান সাংবাদিকরা।
জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘কেবিনেটের রিশাফল তো হয়ই, একটা হবে, অনেকদিন তো হয়ে গেছে। সেখানে কারা থাকবেন, কারা থাকবেন না সেটা তো একান্তভাবে প্রধানমন্ত্রীর এখতিয়ার, এটা আমরা কেউ জানি না।’
শীঘ্রই তা হচ্ছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আই ডোন্ট নো এগজাক্টলি; আমি জানি না। যখন হবে চাঁদ উঠলে সবাই দেখবে।
জাতীয় পার্টির সরকার ছাড়ার সম্ভাবনার বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, এটা তাদের ব্যাপার, তারা সরকার থেকে যাবে কি যাবে না। তবে আমার মনে হয় না, খুব তাড়াতাড়ি তারা সরকার থেকে চলে যাচ্ছে।
আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে ‘ঐকমত্যের সরকারে’র এই মন্ত্রিসভায় এইচ এম এরশাদের নেতৃত্বে জাতীয় পার্টি থেকে এক মন্ত্রী ও দুই প্রতিমন্ত্রী রয়েছেন।
২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের পর গঠিত বর্তমান সরকারের মন্ত্রিসভায় প্রথম ও সর্বশেষ রদবদল করা হয়েছিল গত বছরের জুলাইতে। এর মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত ছিল দলের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামকে স্থানীয় সরকার থেকে সরিয়ে জনপ্রশাসনের মন্ত্রী করা।
এছাড়া স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী ইয়াফেস ওসমানকে পূর্ণ মন্ত্রী করা হয়। নতুন করে মন্ত্রী করা হয় নুরুল ইসলাম বিএসসিকে, প্রতিমন্ত্রী করা হয় তারানা হালিম ও নূরুজ্জামান আহমেদকে।
রবিবার সংবাদ সম্মেলন করে একাধিক সংগঠনের জোট ও নিবন্ধিত একটি দল নিয়ে জাতীয় পার্টির নেতৃত্বে সম্মিলিত জাতীয় জোট (ইউএনএ) নামে ‘ইসলামী মূল্যবোধের’ নতুন এক জোটের আত্মপ্রকাশের কথা জানান এরশাদ।
জাতীয় পার্টির সঙ্গে আওয়ামী লীগের সম্পর্কে কোন টানাপোড়েন আছে কিনা জানতে চাইলে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, এরশাদ সাহেবের মনে কি আছে, সেটা তাকেই জিজ্ঞেস করুন। আমাদের সঙ্গে কোন টানাপোড়েন এই মুহূর্তে নেই।
এরশাদের নতুন জোটের বিষয়ে তিনি বলেন, জাতীয় পার্টির অধিকার আছে, তারা আলাদা জোট করতে পারে, এটা তাদের অধিকার। এবং এরশাদ সাহেব যদি মনে করেন, তিনি জোট করবেন ৬০ দল কেন ১৬০ দলের জোটও তিনি করতে পারেন।
এরশাদের এই জোটকে ‘সংখ্যাতত্ত্বের চমক’ হিসেবে বর্ণনা করে এর রেশ কাটতে অপেক্ষা করার পরামর্শ দেন ওবায়দুল কাদের।
নির্বাচনের আগে এদেশের রাজনীতিতে অনেক কিছুই ঘটবে; রাজনীতিতে অনেক ভাঙ্গা-গড়া হবে, জোট হবে আবার জোট ভাঙ্গবে, আবার জোট থেকে সরে যাবে, কেউ আবার যোগ দেবে। সবকিছু মিলিয়ে নির্বাচনের সামনে এটা খুব স্বাভাবিক ঘটনা।
তবে রাজনীতিতে, বিশেষ করে জোটের ক্ষেত্রে শেষ কথা বলতে কিছু নেই। নির্বাচনের আগে যে জোট হয় এ জোটের ব্যাপারে এখনও দেড় বছর বাকি। এই দেড় বছরে বুড়িগঙ্গা, শীতলক্ষ্যায় কত জল গড়িয়ে যাবে।
আওয়ামী লীগের সঙ্গে জাতীয় পার্টির ‘জোটগত’ অবস্থান করে কাদের বলেন, আসলে এটা আপনাদের ভুল ধারণা যে জাতীয় পার্টি মহাজোটে আছে। জাতীয় পার্টি তো মহাজোটে নেই, এখন না গত ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে জাতীয় পার্টি আলাদাভাবে নির্বাচন করেছে।
জাতীয় পার্টি ঐকমত্যের সরকারের আছে, মহাজোটের সরকারে না, এটা অত্যন্ত ক্লিয়ার এবং লাউডার।