ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

চুকনগর গণহত্যা স্মরণ

বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় এলে এ দেশ বধ্যভূমিতে পরিণত হবে ॥ নাসিম

প্রকাশিত: ০৫:৫৪, ১ এপ্রিল ২০১৭

 বিএনপি-জামায়াত  ক্ষমতায় এলে  এ দেশ বধ্যভূমিতে  পরিণত হবে ॥ নাসিম

স্টাফ রিপোর্টার, খুলনা অফিস ॥ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য, কেন্দ্রীয় ১৪ দলের মুখপাত্র এবং স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম এমপি জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, ২০১৯ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ ও নিরপেক্ষ হবে। ওই নির্বাচনে বিএনপিকে হারিয়ে জননেত্রী শেখ হাসিনাকে পুনরায় ক্ষমতায় আনতে হবে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় না এলে বিএনপি-জামায়াত বাংলাদেশকে বধ্যভূমিতে পরিণত করবে। কোন অবস্থাতেই পাকিস্তানের দোসরদের ক্ষমতায় আসতে দেয়া যাবে না। তিনি দলের নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে জনগণের সঙ্গে থেকে নৌকার পক্ষে কাজ করার আহ্বান জানান। ১৪ দলের মুখপাত্র মোহাম্মদ নাসিম খালেদা জিয়াকে উদ্দেশ করে বলেন, ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে না এসে জ্বালাও-পোড়াও মানুষ হত্যা করেছেন। সাহস থাকে সহিংসতার পথ পরিহার করে আগামী সংসদ নির্বাচনে আসুন। তিনি বলেন, ক্ষমতায় থেকে বিএনপি-জামায়াত জঙ্গীবাদের জন্ম দিয়েছে। সেই জঙ্গীবাদকে উস্কে দিয়ে দেশের উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রা ব্যাহত করতে তারা এখন অপতৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। জঙ্গীদের উস্কে দিয়ে খালেদা জিয়া শেখ হাসিনার উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করতে পারবে না। জঙ্গীদের ক্ষমা করা হবে না। জঙ্গী দমন করেই বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, যাবে। বাংলাদেশ থেকে পাকিস্তানের ও জঙ্গীবাদের দোসরদের মূলোৎপাটন করা হবে। মোহাম্মদ নাসিম আরও বলেন, জননেত্রী শেখ হাসিনা তার নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি পালন করে যাচ্ছেন। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের প্রতিশ্রুত বাস্তবায়ন করেছেন। ষড়যন্ত্র চক্রান্ত করে পদ্মা সেতুর কাজ বন্ধের চেষ্টা করা হয়েছে। সকল ষড়যন্ত্র প্রতিহত করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদ্মা সেতু বাস্তবায়ন করছেন। সরকারে বিভিন্ন উন্নয়ন কার্যক্রমের কথা উল্লেখ করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে বিদ্যুত, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, সড়ক ব্যবস্থাসহ সকল ক্ষেত্রে উন্নয়ন হয়। সকল স্তরের মানুষের কর্মসংস্থান হয়। আর বিএনপি ক্ষমতায় থেকে কি করেছে তাও সকলেই জানে। তিনি জনগণকে আগামী নির্বাচনে নৌকায় ভোট দেয়ার আহ্বান জানান। তিনি শুক্রবার বিকেলে খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার চুকনগর গণহত্যা স্মৃতিস্তম্ভ চত্বরে চুকনগর গণহত্যা স্মরণে আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন। কেন্দ্রীয় ১৪ দলের উদ্যোগে ১৪ দল খুলনা এই সমাবেশের আয়োজন করে। সমাবেশ আয়োজনে সহযোগিতা করেছে চুকনগর ’৭১ গণহত্যা স্মৃতি পরিষদ। ১৪ দল খুলনার সমন্বয়কারী মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান মিজান এমপির সভাপতিত্বে ডুমুরিয়া উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গাজী আবদুল হাদী ও মহানগর আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক মাহবুব আলম সোহাগের পরিচালনায় সমাবেশে বিশেষ অতিথি ছিলেন নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান এমপি, সাম্যবাদী দলের সভাপতি সাবেক শিল্পমন্ত্রী দিলীপ বড়ুয়া, জাসদের (ইনু) সাধারণ সম্পাদক শিরিন আক্তার এমপি, জাসদের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক প্রধান এমপি, গণতন্ত্রী পার্টির সাধারণ সম্পাদক সোলাইমান হোসেন, সাতক্ষীরা-১ আসনের সংসদ সদস্য ওয়ার্কার্স পার্টির কেন্দ্রীয় নেতা মোস্তফা লুৎফুল্লাহ, ন্যাপের নজরুল মজিদ বেলাল, বাসদের আহ্বায়ক রেজাউর রশিদ, গণআজাদী লীগের সাধারণ সম্পাদক এসকে শিকদার, খুলনা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হারুনুর রশিদ প্রমুখ। সভায় বক্তব্য রাখেন চুকনগর গণহত্যায় বেঁচে যাওয়া সেই দিনের শিশু সুন্দরী। তিনি কথা বলতে গিয়ে একপর্যায়ে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েন। এ সময় ১৪ দলের স্থানীয় অন্যান্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান বলেন, বিএনপি হচ্ছে বাংলাদেশের ন্যাস্টি পার্টি। বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করে ক্যান্টনমেন্ট থেকে এই দলের জন্ম হয়। একাত্তরের পরাজিত শক্তিকে নিয়ে জিয়াউর রহমান এই দল গঠন করেন। ’৭১ ও ’৭৫ এবং শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশে তার জনসভায় গ্রেনেড হামলাসহ পরবর্তী নানা ষড়যন্ত্রের বিবরণ দিয়ে নৌপরিবহনমন্ত্রী বলেন, একাত্তরের ঘাতক ও তাদের দোসররা বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য নানাভাবে অপতৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের সকল ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত প্রতিহত করতে হবে। জননেত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করার জন্য দলের সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। জাতীয় সংসদে ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ার পর গত ২৫ মার্চ জাতীয়ভাবে গণহত্যা দিবস পালন করা হয়। ওই দিন কেন্দ্রীয় ১৪ দলের উদ্যোগে ঢাকার মিরপুর বধ্যভূমিতে স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হয়। ঢাকার বাইরে ১৪ দল খুলনার ডুমুরিয়ার চুকনগর গণহত্যা স্মৃতিস্তম্ভ চত্বরে চুকনগর গণহত্যায় শহীদদের স্মরণে সমাবেশ আয়োজন করে। উল্লেখ্য, মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে মে মাসে খুলনার চুকনগরে বৃহৎ গণহত্যা সংঘটিত হয়। ভারতে পালিয়ে যাওয়ার উদ্দেশ্যে বিভিন্ন এলাকা থেকে চুকনগর বাজার ও সংলগ্ন এলাকায় জড়ো হওয়া ১০ সহস্রাধিক নর-নারী ও শিশুকে একই দিনে নির্বিচারে হত্যা করা হয়।
×