স্টাফ রিপোর্টার, যশোর অফিস ॥ যশোরে মাদক, সন্ত্রাস ও জঙ্গীবিরোধী সমাবেশে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদ প্রতিরোধে ঘুরে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশের সব শ্রেণীপেশার মানুষ। সবাই সোচ্চার হয়েছে বলেই জঙ্গীবাদ নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হয়েছে। জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে দেশের আলেম ওলামারাও সোচ্চার হয়েছেন। তারা রাজপথে ব্যানার, প্ল্যাকার্ড নিয়ে মানববন্ধনে বলছে, তারা সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে। তারাও শান্তি চায়। আমরা জঙ্গীবাদ নির্মূল করতে পারিনি। কিন্তু নিয়ন্ত্রণ করতে পেরেছি। আমরা জঙ্গীবাদ নির্র্মূল করতে পারিনি দেশী-বিদেশী ষড়যন্ত্রের কারণে। দেশী-বিদেশী ষড়যন্ত্রকারীরা থেমে নেই। তাদের মোকাবেলা করেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় যশোর জিলা স্কুল মাঠে জেলা পুলিশ আয়োজিত মাদক, সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদবিরোধী মহাসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী উল্লেখ করেন, বাংলাদেশ পুলিশ দক্ষতার সঙ্গে জঙ্গীবাদ নিয়ন্ত্রণ করছে। চট্টগ্রামের এ্যাসল্ট সিক্সটিন অপারেশনের উদাহরণ দিয়ে মন্ত্রী বলেন, পুলিশ সদস্যরা দক্ষতার সঙ্গে জঙ্গী আস্তানা তছনছ করে দিয়েছে। সেখানে চারজন জঙ্গী নিহত হয়েছে। পুলিশের দক্ষতা আরও বৃদ্ধি করার জন্য সরকার কাজ করছে। পুলিশের জনবল বৃদ্ধির উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
খুলনা রেঞ্জের ডিআইজি এসএম মনির-উজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে প্রধান অতিথি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, যদি কেউ সংখ্যালঘুদের ওপর অত্যাচার করে তাদের আইনের হাতে তুলে দেয়া হবে। কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। বাংলাদেশ সব ধর্মের মানুষের দেশ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ধর্ম যার যার, রাষ্ট্র সবার। কেউ যদি ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের নির্যাতন করে তাকে শাস্তি পেতেই হবে।
মন্ত্রী বলেন, আজকের মহাসমাবেশে যারা মাদক ব্যবসা ছেড়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরছেন তাদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি। পাশপাশি আরও যারা আত্মসমার্পণ করতে চান তাদেরও সুযোগ দেয়া হবে। সকলের ঐক্যবদ্ধ প্রয়াসে আমরা মাদক, সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদ মুক্ত বাংলাদেশ গড়তে চাই।
মহাসমাবেশে যশোরের ৮৬৬জন মাদক ব্যবসায়ী স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের কাছে আত্মসমর্পণ করেন। তারা মন্ত্রীর কাছে অঙ্গীকার করেন আর মাদক ব্যবসা করবে না। স্বাভাবিক জীবনযাপনে ফিরে যাবেন।
অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল আরও তিনটি প্রকল্পের উদ্বোধন করেন। সেগুলো হচ্ছে যশোর পৌর এলাকায় সিসিটিভি কর্যক্রমের উদ্বোধন, পৌরসভায় বসবাসকারী মুক্তিযোদ্ধাদের হোল্ডিং ট্যাক্স মওকুফ এবং হ্যালো যশোর পুলিশ নামক এ্যাপস উদ্বোধন।
মহাসমাবেশে বক্তব্য রাখেন বিশেষ অতিথি জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ইসমাত আরা সাদেক, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলন, সাধারণ সম্পাদক ও সদর উপজেলা চেয়ারম্যান শাহীন চাকলাদার, যশোর-৩ আসনের সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদ, যশোর-২ (চৌগাছা-ঝিকরগাছা) এ্যাডভোকেট মনিরুল ইসলাম মনির, যশোর-৫ আসনের সংসদ সদস্য স্বপন ভট্টাচার্য্য, পৌরসভার মেয়র জহিরুল ইসলাম চাকলাদার রেন্টু, প্রেসক্লাব যশোরের সভাপতি জাহিদ হাসান টুকুন ও ইমাম পরিষদের সম্পাদক মাও. বেলায়েত হোসেন। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন যশোরের পুলিশ সুপার আনিসুর রহমান।