ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

যৌথভাবে এমআইটির সঙ্গে কাজ করবে তথ্য প্রযুক্তি বিভাগ

প্রকাশিত: ০৪:৪৩, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

যৌথভাবে এমআইটির সঙ্গে কাজ করবে তথ্য প্রযুক্তি বিভাগ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ম্যাসাচুসেট্স ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির (এমআইটি) সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করবে তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগ। এমআইটির সহযোগিতায় আধুনিক প্রযুক্তিতে (ফ্রন্টিয়ার টেকনোলজি) আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স, ডিপ লার্নিং, বিগ ডেটা, ইন্টারনেট অব থিংসের ওপর গবেষণা কার্যক্রম চালানো হবে। এতে তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে দেশ অনেক এগিয়ে যাবে। সরকার ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে আধুনিক প্রযুক্তির সমাবেশ ঘটানোর জন্য নানা উদ্যোগ বাস্তবায়ন করছে। আমরা আধুনিক ও অভিনব প্রযুক্তিতে কাজ করতে চাই। এমআইটির সঙ্গে কার্যকর ও টেকসই অংশীদারিত্বের মাধ্যমে যৌথ গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করে দেশের তথ্যপ্রযুক্তিকে সমৃদ্ধ করা হবে। শনিবার সকালে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল আয়োজিত ‘ইনোভেশন এ্যান্ড অন্ট্রাপ্রেনিওরশিপ ইন ডিজিটাল এজ’ শীর্ষক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এ কথা বলেন। কর্মশালায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব শ্যাম সুন্দর সিকদারের সভাপতিত্বে অতিরিক্ত সচিব হারুনুর রশিদ, অতিরিক্ত সচিব পার্থ প্রতিম দেব, অতিরিক্ত সচিব সুশান্ত কুমার সাহা, আইসিটি ডিভিশনের চীফ স্ট্রাটেজিক অফিসার জামিল আজহারসহ তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের উর্ধতন কর্মকর্তাসহ দেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাত সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়িক নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। কর্মশালায় প্রতিমন্ত্রী বলেন, গত ৮ বছরে তথ্যপ্রযুক্তির ব্যাপক উন্নয়ন ও অগ্রগতি ঘটেছে। সরকার তথ্যপ্রযুক্তির উন্নয়নে নানা কর্মসূচী বাস্তবায়ন করেছে। দেশে দক্ষ জনবল তৈরি করার জন্য হাতে নেয়া হযেছে প্রশিক্ষণ কর্মসূচী। প্রশিক্ষণ নিয়ে এ সেক্টরে অনেকে ভাল করছেন। ২০২১ সালের আগেই দেশে ৭০ হাজার তথ্যপ্রযুক্তিবিদ তৈরি করা হবে। উদ্ভাবনে সফলতা আনয়ন, উদ্যোক্তা সৃষ্টি এবং ভেঞ্চার ক্যাপিটাল ইকো সিস্টেম গড়ে তুলতে আমাদের সরকার ইনোভেশন ডিজাইন এ্যান্ড অন্ট্রাপ্রেনিওরশিপ একাডেমি (আইডিয়া) শীর্ষক এক অনন্য প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। এ প্রকল্প গবেষণা ও উদ্ভাবনে শিল্প-শিক্ষার্থী-শিক্ষক-সরকারের সঙ্গে সমন্বয়ের পাশাপাশি উদ্ভাবনী কার্যক্রমী প্রণোদনা সৃষ্টি করবে এবং দেশে একটি বৈশ্বিক স্টার্টআপ কালচার সৃষ্টিতে ভূমিকা রাখবে। তথ্যপ্রযুক্তি সেবার মান বাড়ানোর ওপর সরকার গুরুত্ব দিয়েছে। আইসিটি খাতের সম্ভবনাকে কাজে লাগিয়ে দেশ এগিয়ে যাবে। এমআইটির সহযোগিতায় ডাটাবেজ প্রস্তুত এবং তথ্যপ্রযুক্তি স্বয়ংক্রিয়করণ কর্মসসূচীর আওতায় বৈজ্ঞানিক ডাটাবেজ, মানবসম্পদ উন্নয়ন ডাটাবেজ, ফিন্যান্সিয়াল ডাটাবেজ, লাইব্রেরি ডাটাবেজ ও মেডিক্যাল ডাটাবেজ করা হবে। সারাদেশে অপটিক্যাল ফাইবার নেটওয়ার্কের মাধ্যমে এ সেবা মানুষের কাছে পৌঁছে দেবে সরকার। তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে দক্ষ জনবল গড়ে তোলার জন্য গাজীপুরে হাইটেক পার্ক শিল্প স্থাপনের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন এলাকায় হাইটেক পার্ক স্থাপন, সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা ও পরিচালনার জন্য সময়োপযোগী কার্যক্রম হাতে নেয়া হয়েছে। বিভাগীয় পর্যায়ে আইটি ভিলেজ স্থাপনের সম্ভব্যতা যাচাই করে এলাকাভিত্তিক উন্নয়ন নিশ্চিত করার টেকনোলজি পার্ক বা আইটি ভিলেজ স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। কর্মশালায় এমআইটির কানেকশন সায়েন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডেভিড এম শয়ার ডিজিটাল অর্থনীতির ন্যায্য হিস্যা বুঝে নিতে বাংলাদেশের করণীয়, সুযোগ ও সম্ভাবনা উল্লেখ করে বলেন, ডিজিটাল অর্থনীতির সম্মানজনক অংশীদারিত্ব নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ সরকারের উদ্যোগ প্রশসংনীয়। কর্মশালায় বক্তারা বলেন, তথ্যপ্রযুক্তি খাতে শিক্ষিত তরুণদের অংশগ্রহণ বাড়াতে দেশের ৬৪ জেলার নির্বাচিত সরকারী-বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে আইসিটি ‘ক্যারিয়ার ক্যাম্প’ চলছে। তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগ এ ক্যারিয়ার ক্যাম্প কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। ক্যারিয়ার ক্যাম্পের উদ্দেশ্য হচ্ছে, দেশের শিক্ষিত তরুণদের তথ্যপ্রযুক্তিতে আগ্রহ বাড়ানো। একই সঙ্গে তাদের বিশ্বমানের প্রশিক্ষণ দিয়ে দক্ষ মানবসম্পদ হিসেবে গড়ে তোলা। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগের অধীন বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের (বিসিসি) লিভারেজিং আইসিটি ফর গ্রোথ এমপ্লয়মেন্ট এ্যান্ড গবর্নেন্স (এলআইসিটি) যৌথভাবে আইসিটি ক্যারিয়ার ক্যাম্প প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ করছে। দেশের ৬৪ জেলার নির্বাচিত বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে আগামী এক বছর ধরে এ কার্যক্রম চলবে। ম্যাসাচুসেট্স ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেট্স অঙ্গরাজ্যের ক্যামব্রিজে অবস্থিত একটি বেসরকারী প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। এমআইটি হিসেবে বিশ্বজুড়ে পরিচিত। এমআইটির ছাত্র ও শিক্ষক সম্মিলিতভাবে ৭৮টি নোবেল পুরস্কার এবং ৫০টি ন্যাশনাল মেডেল অব সায়েন্স অর্জন করেছেন। এমআইটি বিশ্বব্যাপী ডিজিটাল বিপ্লব ও গবেষণায় অন্যতম একটি প্রতিষ্ঠান। এ প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করলে বাংলাদেশ ২০২১ সালের আগেই তথ্যপ্রযুক্তিতে সমৃদ্ধ হয়ে উঠবে।
×