ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

ধর্মের নামে ভোট চাওয়া যাবে না ॥ ভারতীয় সুপ্রীমকোর্ট

প্রকাশিত: ০৫:৪৪, ৩ জানুয়ারি ২০১৭

ধর্মের নামে ভোট চাওয়া যাবে না ॥ ভারতীয় সুপ্রীমকোর্ট

জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ ভারতে ধর্ম, বর্ণ বা জাতপাতের নামে ভোট চাইতে পারবেন না রাজনীতিকরা। দেশটির সুপ্রীমকোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস ঠাকুরের নেতৃত্বে সাত সদস্যের এক ডিভিশন বেঞ্চ সোমবার ঐতিহাসিক এক রায়ে এ নির্দেশ দিয়েছে। খবর টাইমস অব ইন্ডিয়া ও বিবিসির। আদালত রুলে আরও বলেছে, এভাবে ভোট চাওয়া ‘দুর্নীতি চর্চা’ বলে বিবেচিত হবে এবং এমন কাজ বরদাশত করা হবে না। চলতি বছর গুরুত্বপূর্ণ পাঁচ রাজ্য পঞ্জাব, উত্তরপ্রদেশ, উত্তরাখ-, মণিপুর ও গোয়ায় বিধানসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। তার আগে সর্বোচ্চ আদালতের এই রায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন রাজনীতি সংশ্লিষ্টররা। বিশেষত উত্তরপ্রদেশের মতো রাজ্যে যেখানে মূলত জাত-সম্প্রদায়ের ওপর ভিত্তি করেই ভোটে লড়ে রাজনৈতিক দলগুলো। সেখানে এই নির্দেশে দলগুলো বেশ সমস্যায় পড়বে। সর্বোচ্চ আদালত জানায়, সংবিধানের ধর্মনিরপেক্ষতার আদর্শ বজায় রেখেই নির্বাচনে লড়াই করতে হবে। নির্বাচন একটি ধর্মনিরপেক্ষ প্রক্রিয়া। তাই জনপ্রতিনিধিকেও ধর্মনিরপেক্ষ হতে হবে। ধর্মীয় বিশ্বাসের মতো ব্যক্তিগত বিষয় প্রত্যেকের ইচ্ছা-অনিচ্ছার ওপর নির্ভরশীল। আর তাতে হস্তক্ষেপ চলতে পারে না। মহারাষ্ট্র রাজ্যে ১৯৯০ সালে দায়ের করা এক মামলার শুনানির সময় এই বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়। এই রায়ের মাধ্যমে সে দীর্ঘ আইনী প্রক্রিয়ার অবসান ঘটল। যদিও রায়ে ভিন্ন মত পোষণ করেছেন ডিভিশন বেঞ্চের সাত সদস্যের মধ্যে তিন বিচারপতি। প্রধান বিচারপতি টিএস ঠাকুর, বিচারপতি এমবি লোকুর, এস এ বোব্দি ও এল এন রাও নির্বাচন থেকে ধর্মকে বাদ দেয়ার পক্ষে। অন্যদিকে বিচারপতি এ কে গোয়েল, ইউ ইউ ললিত ও ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় মনে করেন, ধর্ম, বর্ণ ইত্যাদি নিয়ে আলোচনার অধিকারকে সংবিধানে নিশ্চয়তা দেয়া হয়েছে। বিষয়টি সুরাহা করতে পার্লামেন্টে আলোচনা করা উচিত বলে মনে করেন তারা। রায়ের পর বিজেপিকে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি এনসিপি। এনসিপি নেতা মজিদ মেমন বলেন, ‘এই রায়ের পর সবচেয়ে বেকায়দায় পড়তে পারে বিজেপি। কারণ, রাম মন্দির ইস্যুকে ফের চাঙ্গা করার চেষ্টা করছে তারা।’ বিজেপির সুব্রাহ্মনিয়াম স্বামীর দাবি, ‘বিজেপি কখনই ধর্মের ভিত্তিতে ভোট চায়নি।’ ভারতের নির্বাচনে ধর্ম ও জাতপাত অনেক সময়ই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। অনেক দলই প্রার্থী মনোনয়ন কিংবা প্রচারের সময় এই বিষয়গুলোকে বিবেচনার মধ্যে রাখে।
×