ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

অবৈধ এনওসিসহ নৌ অধিদপ্তরের অনিয়ম তদন্তে দুটি কমিটি পুনর্গঠনের দাবি

প্রকাশিত: ২৩:৪৪, ৫ ডিসেম্বর ২০১৬

অবৈধ এনওসিসহ নৌ অধিদপ্তরের অনিয়ম তদন্তে দুটি কমিটি পুনর্গঠনের দাবি

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সমুদ্রগামী জাহাজের নাবিকদের নামে অবৈধ এনওসি দিয়ে ‘আকাশপথে কথিত মানব পাচারের ঘটনা’র সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করে অবিলম্বে উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন নতুন তদন্ত কমিটি গঠনের আহ্বান জানিয়েছেন সামাজিক আন্দোলনের কর্মীরা। এছাড়া নৌ পরিবহন অধিদপ্তরের অনিয়ম-দুর্নীতি তদন্তে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নির্দেশে গঠিত কমিটি বাতিল করে বিশেষজ্ঞদের সমন্বয় সচিব পর্যায়ের কমিটি গঠনের দাবি জানান তাঁরা। সোমবার রাজধানীর পুরান পল্টনের মণি সিংহ সড়কের মুক্তি ভবনে সিটিজেন্স রাইট্স মুভমেন্ট আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই দাবিসহ সাত দফা জরুরি দাবি উত্থাপন করা হয়। এতে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান সংগঠনের মহাসচিব তুসার রেহমান। লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠকের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করে নৌ অধিদপ্তরের একজন কর্মকর্তা জাহাজের নাবিকদের এনওসি দিয়ে বিনাভিসায় বিমানে বিদেশ যাওয়ার সুযোগ করে দিয়েছেন। বিষয়টি জরুরি তদন্তের জন্য পুলিশের বিশেষ শাখা (ইমিগ্রেশন) অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের কাছে আবেদন করেছেন। কিন্তু চাঞ্চল্যকর এ ঘটনায় দফায় দফায় তদন্ত কমিটি পুনর্গঠন করা হলেও দীর্ঘ ছয় মাসে প্রতিবেদন দেয়া হয়নি। সর্বশেষ পুনর্গঠিত কমিটির আহ্বায়ক চট্টগ্রাম নৌ বাণিজ্য দপ্তরের মূখ্য কর্মকর্তা মো. শফিকুল ইসলামও তদন্তের নামে কালক্ষেপন করছেন বলে সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়। তুসার রেহমান বলেন, সিটিজেন্স রাইট্স মুভমেন্টের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ৫ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে নৌ পরিবহন অধিদপ্তরের বিরুদ্ধে উত্থাপিত অনিয়ম-দুর্নীতির তদন্তের নির্দেশ দেয়া হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে নৌ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) মো. রফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে এক সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়। কিন্তু কমিটি এখনও প্রতিবেদন দেয়নি। অভিযুক্তদের রক্ষায় দুটি কমিটিই তদন্তের নামে দীর্ঘ কালক্ষেপন করছে। তিনি আরো বলেন, দক্ষিণ কোরিয়ার অর্থ সহায়তায় প্রায় ৪০০ কোটি টাকার চলমান জিএমডিএসএস প্রকল্পের পরিচালককে চার্টার অব ডিউটিজ লঙ্ঘন করে একসঙ্গে আটটি দায়িত্ব পালনের সুযোগ দেয়া হচ্ছে। এছাড়া অধিদপ্তরের নারায়ণগঞ্জ ও বরিশাল কার্যালয়ের শিপ সার্ভেয়াররা (জাহাজ জরিপকারক) অধিকাংশ কর্মদিবসে ঢাকায় প্রধান কার্যালয়ে অবস্থান করে প্রত্যেকে গত বছর দেড় হাজারের বেশি নৌযান সার্ভে (ফিটনেস পরীক্ষা) দেখিয়েছেন বলে সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে উত্থাপিত সাত দফা দাবির মধ্যে আরো রয়েছে- অভ্যন্তরীণ নৌযান চালকদের পরীক্ষা বোর্ড ভেঙ্গে দিয়ে মেরিন একাডেমি, বুয়েট ও নৌ অধিদপ্তরের রাজস্বখাতের বিশেষজ্ঞদের সমন্বয় নতুন বোর্ড গঠন, পরীক্ষা বোর্ডের সদস্য নন, মেরিণ একাডেমি অথবা বুয়েটের এমন কর্মকর্তাদের দিয়ে নৌযান চালকদের পরীক্ষার প্রশ্নপত্র প্রস্তুত, জিএমডিএসএস প্রকল্প চলাকালীন প্রকল্প পরিচালককে অন্য সকল দায়িত্ব থেকে প্রত্যাহার, গ্রহণযোগ্য বিশেষজ্ঞদের সমন্বয় নৌযানের নকসা অনুমোদন কমিটি পুনর্গঠন এবং যৌক্তিক কারণ ছাড়া সকল কর্মদিবসে জাহাজ জরিপকারকদের কর্মস্থলে উপস্থিতি বাধ্যতামূলক করে আদেশ জারি। অন্যান্যের মধ্যে সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন পানিসম্পদ বিশেষজ্ঞ প্রকৌশলী ম. ইনামুল হক, যাত্রী অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সেকেন্দার হায়াৎ, নিরাপদ সড়ক ও নৌপথ বাস্তবায়ন জোটের সদস্যসচিব রফিকুল ইসলাম সবুজ, পরিবেশকর্মী পংকজ বারুরী এবং নৌ, সড়ক ও রেলপথ রক্ষা জাতীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক আশীষ কুমার দে।
×