স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহী ॥ গোদাগাড়ী উপজেলার সাঁওতাল পল্লীতে এক গৃহবধূর মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র শুরু হয়েছে ভুতুড়ে গল্প। প্রতিবেশী একজনের পালিত ‘ভুত’ ওই গৃহবধূকে হত্যা করেছে এমন গুজব নিয়ে ওই গ্রামে সাঁওতালদের মধ্যে চলছে তর্ক-বিতর্ক। প্রচলিত সব ধারণা উপেক্ষা করে এখন এ হত্যাকারী সনাক্তে দুইপক্ষের কবিরাজি থেরাপি শুরু হয়েছে। কথিত ওই কবিরাজরা যার পক্ষে রায় দেবেন তা মেনে নিতে হবে। এমন ঘটনার সূত্রপাত নিয়ে এখন হৈ চৈ শুরু হয়েছে দেউপাড়া ইউনিয়নের আদিবাসী অধ্যুষিত কান্তপাশা ইদলপুর গ্রামে।
জানা গেছে, একমাস আগে ওই গ্রামের আদিবাসী খগেন মিঞ্জর স্ত্রী প্রেমোলা টপ্পো (৪৫) ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়। তার মৃত্যুর পর এ ঘটনা নিয়ে এলাকায় সৃষ্টি হয় নানা ভৌতিক কাহিনীর। কেউ কেউ এ ঘটনাকে অন্য খাতে প্রবাহিত করতে মৃত্যুর পরের দিন থেকে শুরু করে অপপ্রচার।
প্রেমোলা টপ্পো ক্যান্সারে মারা গেলেও সে গ্রামের কথিত কবিরাজ রামেশ্বর জানায়, প্রেমোলা টপ্পো ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়নি, তাকে কমল কবিরাজ টপ্পোর পোষা ভুতে কথিত মেরে ফেলেছে।
এই ঘটনায় কমল টপ্পোকে খগেন ডেকে পাঠায়। কমল টপ্পো খগেন মিঞ্জের বাড়িতে গেলে তার স্ত্রীর হত্যার অভিযোগ তোলা হয়। এতে কমল টপ্পো হতবাক হয়ে যায়। খগেন দাবি করে তোমার পোষা ভুত আমার স্ত্রীকে হত্যা করেছে। এ নিয়ে তাদের মধ্যে শুরু হয় বাগ্বিতণ্ডা। এক পর্যায়ে কমল টপ্পো সেখান থেকে বেরিয়ে আসতে চাইলে তাকে বেধড়ক পেটানো হয়।
এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সর্বশেষ মঙ্গলবার গ্রামের মন্টু মিঞ্জ, অমূল্য মিঞ্জ ও অজয় গ্রাম্য সালিশের ডাক দেয়। সালিশের শর্ত প্রেমোলা টপ্পোকে কমল টপ্পোর পোষা ভুত হত্যা করেছে, তার আসল রহস্য জানার জন্য খগেন টপ্পো পাঁচজন কবিরাজ নিয়ে আসবে। কমল টপ্পোও হাজির করবে পাঁচ কবিরাজ। গ্রামের লোকজন আরও ১০ জন কবিরাজ নিয়ে আসবে। মোট ২০ কবিরাজের সমন্বয়ে সালিশ বসবে। তারা সিদ্ধান্ত দেবে হত্যাকারী কে। আর সালিশের সিদ্ধান্ত মেনে নিতে হবে। কবিরাজি সালিশের দিন তারিখ ঠিক না হলেও এ নিয়ে ওই গ্রামের আদিবাসীদের কাছ থেকে তোলা হচ্ছে সালিশের খরচ।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: