ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

ঢাকায় দ্বিপাক্ষিক বৈঠক

নির্মাণ, উৎপাদন ও বনায়ন খাতে শ্রমিক নেবে মালয়েশিয়া

প্রকাশিত: ০৫:১৬, ১৬ নভেম্বর ২০১৬

নির্মাণ, উৎপাদন ও বনায়ন খাতে শ্রমিক নেবে মালয়েশিয়া

কূটনৈতিক রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশ থেকে খুব শীঘ্রই কর্মী নেয়ার বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করে মালয়েশিয়ার মানবসম্পদ মন্ত্রী রিচার্ড রায়ট আনাক জায়েম বলেছেন, বাংলাদেশ থেকে খুব শীঘ্রই কর্মী নেবে মালয়েশিয়া। প্রাথমিক পর্যায়ে নির্মাণ শ্রমিক, প্লান্টেশন (বনায়ন) ও ম্যানুফেকচারিং (উৎপাদন) খাতে কর্মী নেয়া হবে। মঙ্গলবার রাজধানীর একটি হোটেলে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসির সঙ্গে অনুষ্ঠিত এক দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে এসব কথা জানান মালয়েশিয়ার মানবসম্পদমন্ত্রী। প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মস্থান মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ঢাকার একটি হোটেলে মঙ্গলবার মালয়েশিয়ার মানবসম্পদমন্ত্রী রিচার্ড রায়ট আনাক জায়েমের সঙ্গে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসি দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে মিলিত হন। বৈঠকে মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানোর বিষয়ে সার্বিক আলোচনা হয়। আলোচনা শেষে তারা জানান, খুব শীঘ্রই বাংলাদেশ থেকে নির্মাণ শ্রমিক, প্লান্টেশন ও ম্যানুফেকচারিং খাতে মালয়েশিয়ায় কর্মী নেয়া শুরু হবে। প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো আগের রিক্রুটিং এজেন্সির তালিকার মাধ্যমে কর্মী প্রেরণ নিশ্চিত করার জন্য বৈঠকে আলোচনা হয়। সরকার নির্ধারিত ব্যয়ে মালয়েশিয়া সরকার ও বাংলাদেশ সরকার কর্মী পাঠানোর বিষয়ে একমত প্রকাশ করেন। বৈঠকে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসি বলেন, মালয়েশিয়ায় জনশক্তি রফতানিতে দালালচক্র নির্মূল করার জন্য আমরা বদ্ধপরিকর। মালয়েশিয়া বাংলাদেশের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ শ্রমবাজার। দক্ষ ও আধাদক্ষ কর্মী পাঠানোর জন্য বাংলাদেশ প্রস্তুত আছে। ইতোমধ্যে কর্মী পাঠানোর কৌশল নিয়ে উভয়পক্ষ একাধিকবা বৈঠক করেছে। জনশক্তি রফতানিতে গুটিকয়েক রিক্রুটিং এজেন্সিকে সুযোগ না দিয়ে পূর্বে পাঠানো ৭৪৫টি রিক্রুটিং এজেন্সি হতে অভিজ্ঞ ও স্বনামধন্য রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে কর্মী পাঠানো নিশ্চিত করা হবে। এতে করে অভিবাসন ব্যয় হ্রাস পাবে এবং সরকার নির্ধারিত অভিবাসন ব্যয়ে কর্মী পাঠানো যাবে। বৈঠক শেষে মালয়েশিয়ার প্রতিনিধিদলের সম্মানে মধ্যাহ্নভোজের আয়োজন করা হয়। এছাড়া মন্ত্রীদ্বয়ের মধ্যে স্মারক বিনিময় হয়। মালয়েশিয়ার ৯ সদস্যের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন মালয়েশিয়ার মানবসম্পদমন্ত্রী রিচার্ড রায়ট আনাক জায়েম। প্রতিনিধিদলের অন্য সদস্যরা হলেনÑ ঢাকায় নিযুক্ত মালয়েশিয়ার হাইকমিশনার নুর আশিকিন বিনতে মোহাম্মদ তায়েব, মানবসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপ-মহাসচিব শাহনিয়ার বিন দারুসমান, ইমিগ্রেশনের মহাপরিচালক হাজী মুস্তাফার বিন হাজী আলী, শ্রম অধিদফতরের মহাপরিচালক জেফরি বিন জোয়াকিম, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিদেশী শ্রমিক ব্যবস্থাপনা শাখার উপসচিব জামিরি বিন মাত জিন, অভিবাসন দফতরের পরিচালক খায়রুল খায়ের বিন ইয়াহিয়া, মানবসম্পদ মন্ত্রণালয়ের মুখ্য সহকারী সচিব শাহাবুদ্দিন বিন আবু বকর ও মানবসম্পদমন্ত্রীর বিশেষ কর্মকর্তা রবার্ট আনাক দাপন। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ১০ সদস্যের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসি। বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের অন্য সদস্যরা হলেন- মন্ত্রণালয়ের সচিব বেগম শামছুন নাহার, জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইট) মহাপরিচালক সেলিম রেজা, মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব জাবেদ আহমেদ প্রমুখ। উল্লেখ্য, বাংলাদেশ থেকে কর্মী নেয়ার বিষয়ে আলোচনার জন্য মঙ্গলবার মালয়েশিয়ার এই প্রতিনিধি দল ঢাকায় আসেন। বুধবার প্রতিনিধি দল ঢাকা ছাড়বেন। চলতি বছরের ১৮ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় মালয়েশিয়ার কর্মী পাঠাতে জিটুজি প্লাস চুক্তিতে সই করে বাংলাদেশ। প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসি মালয়েশিয়ার মানবসম্পদমন্ত্রী রিচার্ড রায়ট আনাক জায়েম উভয়দেশের পক্ষে চুক্তিতে সই করেন। যদিও চুক্তির ১২ ঘণ্টার মধ্যেই মালয়েশিয়া জানায়, এই মুহূর্তে তারা আর কোনো কর্মী নেবে না। এতে কর্মী পাঠানোর প্রক্রিয়া ঝুলে যায়। সাত মাস পর গত সেপ্টেম্বরে সেই নিষেধাজ্ঞা তুলে নির্মাণ (কনস্ট্রাকশন), বনায়ন (প্ল্যান্টেশন) ও উৎপাদন (ম্যানুফ্যাকচারিং) খাতে কর্মী নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয় মালয়েশিয়া। মঙ্গলবার দুই দেশের মধ্যে সম্পাদিত জিটুজি প্লাস চুক্তির আলোকেই শীঘ্রই বাংলাদেশ থেকে কর্মী নেয়ার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
×