ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

পোকার আক্রমণে আমন চাষী দিশেহারা

প্রকাশিত: ০৫:৫৩, ২৭ অক্টোবর ২০১৬

পোকার আক্রমণে আমন চাষী দিশেহারা

স্টাফ রিপোর্টার, দিনাজপুর ॥ ধানের জেলা দিনাজপুরসহ উত্তরের ৩ জেলায় আমন ক্ষেতে দেখা দিয়েছে পোকার আক্রমণ। পোকার উপদ্রব থেকে মুক্ত হতে কীটনাশক প্রয়োগ করেও ভাল ফল পাচ্ছেন না কৃষকরা। এতে করে আমনের ফলন নিয়ে শঙ্কায় পড়েছেন তারা। কৃষকদের অভিযোগ, তাদেরকে সঠিকভাবে পরামর্শ প্রদান করছে না কৃষি বিভাগ। তবে কৃষি বিভাগ বলছে, পোকার আক্রমণ এখনও সহনীয় বা নিয়ন্ত্রণের পর্যায়ে রয়েছে। পোকা দমনে মনিটরিং ব্যবস্থা চালু রেখেছেন তারা। চলতি আমন মৌসুমে জেলায় ২ লাখ ৫৬ হাজার ৭৫০ হেক্টর জমিতে আমন ধান রোপণ করা হয়েছে। আর এই জেলাসহ পার্শ্ববর্তী পঞ্চগড় ও ঠাকুরগাঁও জেলা নিয়ে গঠিত দিনাজপুর কৃষি অঞ্চলে আমন ধান রোপিত হয়েছে ৪ লাখ ৯০ হাজার হেক্টর জমিতে। কৃষকদের কঠোর পরিশ্রম আর সঠিক পরিচর্যায় সবুজ সমারোহে পরিণত হলেও হঠাৎ করে কারেন্ট পোকা বা বাদাম গাছ ফড়িংয়ের আক্রমণে বিবর্ণ হয়ে পড়েছে এই অঞ্চলের বিস্তীর্ণ আমন ধান ক্ষেত। কৃষকরা জানান, চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে বৃষ্টিপাতের পরপরই এই পোকার আক্রমণ দেখা দেয় আমন ক্ষেতে। সঠিক সময়ে কীটনাশক স্প্রে করে অনেকেই তাদের ফসল রক্ষা করতে পারলেও অনেকের ফসল নষ্ট হয়ে গেছে। কৃষকদের মতে, এই পোকা কোন ফসলে আক্রমণ করলে দ্রুত তা ছড়িয়ে পড়ে পুরো ক্ষেতে। মাত্র এক সপ্তাহের ব্যবধানে ক্ষেতের পুরো ফসল নষ্ট করে দেয়। আক্রমণের সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা গ্রহণ করলেও ফলন কমে যায়। এ ব্যাপারে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর দিনাজপুর অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক জুলফিকার হায়দার আমন ধানে এই পোকার আক্রমণ হয়েছে স্বীকার করে জানান, এখনও এটি নিয়ন্ত্রণ বা সহনীয় পর্যায়ে রয়েছে। তিনি কৃষি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অসহযোগিতার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, সর্বক্ষণিকভাবে কৃষি কর্মকর্তারা মনিটরিং ব্যবস্থা চালু রেখেছে এবং কৃষকদেরকে পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে। মনিরামপুরে হাইব্রিড ধানে ফলন বিপর্যয় স্টাফ রিপোর্টার যশোর থেকে জানান, মনিরামপুরে বায়ার কোম্পানির এ্যারাইজ ধানী গোল্ড হাইব্রিড-৪ জাতের ধান চাষ করে কৃষকরা চরম ক্ষতির মুখে পড়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ওই জাতের ধান চাষ করে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের ক্ষেতে এখন কোন কোন গোছায় ধানের শীষ বেরিয়ে পাক ধরেছে, কোনটির কেবল শীষ বেরিয়েছে, থোড় এসেছে কোনটির, আবার কোনটির এখনও থোড়ই আসেনি। যে কারণে কৃষক তাদের চাষকৃত ফসলের কাক্সিক্ষত ফলন নিয়ে হতাশায় রয়েছেন। সরেজমিন উপজেলার মোবারকপুর গ্রামের একটি মাঠে দেখা যায়, কয়েকটি ক্ষেতে ধান গাছের কোনটির শীষ বেরিয়ে তাতে পাক ধরেছে, কোনটির শীষ বেরিয়েছে, কোন কোন গাছে কেবল থোড় এসছে আবার কোনটিতে এখনও থোড়ই আসেনি। এ নিয়ে কথা হয় ওই গ্রামের কয়েকজন ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের সঙ্গে। এ ব্যাপারে বায়ার কোম্পানির স্থানীয় পরিবেশক তরিকুল ইসলাম বলেন, ধানের বীজে ভেজাল কিনা কোম্পানির লোকজনই ভাল বলতে পারেন। মুঠো ফোনে বায়ার কোম্পানির যশোর এলাকার বিডিএম (বিজনেস ডেভেলপমেন্ট ম্যানেজার) মফিজুর রহমানের সঙ্গে কথা হলে তিনি বীজ নির্ভেজাল দাবি করে বলেন, বীজের টেকনিক্যাল বিষয়ে বোঝার জন্য কৃষি অফিসের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন। জানতে চাইলে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুশান্ত কুমার তরফদার বলেন, ভেজাল অথবা বীজের কলি তাত্ত্বিক (জেনেটিক সেগ্রিগেশন) তারতম্যের কারণে এরকম হতে পারে।
×