ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

শরীয়তপুরের সলেমান ও ইদ্রিস আলীর বিরুদ্ধে যুক্তিতর্ক শুরু

প্রকাশিত: ০৫:৫১, ২৬ অক্টোবর ২০১৬

শরীয়তপুরের সলেমান ও ইদ্রিস আলীর বিরুদ্ধে যুক্তিতর্ক শুরু

স্টাফ রিপোর্টার ॥ একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে আটক শরীয়তপুরের সোলায়মান মোল্লা ওরফে সলেমান মৌলভী ও পলাতক ইদ্রিস আলীর বিরুদ্ধে প্রসিকিউশনপক্ষের যুক্তিতর্ক (আর্র্গুমেন্ট) শুরু হয়েছে। বুধবার পুনরায় যুক্তিতর্ক শুরু করার নির্দেশ দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। অন্যদিকে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ময়মনসিংহের খলিলুর রহমানসহ ৫ রাজাকারকে সেফ হোমে অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য প্রসিকিউশনের আবেদন মঞ্জুর করেছে ট্রাইব্যুনাল। আসামিদের ১৩-১৭ নবেম্বর একদিন করে জিজ্ঞাসাবাদ করা যাবে। চেয়ারম্যান বিচারপতি আনোয়ারুল হকের নেতৃত্বে তিন সদস্যবিশিষ্ট আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ আদেশ প্রদান করেছেন। প্রসিকিউশন পক্ষে ছিলেন প্রসিকিউটর জেয়াদ আল মালূম ও প্রসিকিউটর রিজিয়া সুলতানা বেগম চমন। আসামিদের বিরুদ্ধে একাত্তরে হত্যা, গণহত্যা, ধর্ষণ, নির্যাতনসহ চারটি অভিযোগ আনা হয়েছে। প্রতিবেদন প্রকাশ করা অভিযুক্তরা হলেন, শরীয়তপুর জেলার পালং উপজেলার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাশিপুর মুসলিম পাড়ার মৃত চাঁন মোল্লার ছেলে সোলায়মান মোল্লা (৮৪) ও একই থানার মাহমুদপুরের মৃত হামিক আলী সরদারের ছেলে ইদ্রিস আলী সরদার ওরফে গাজী ইদ্রিস (৬৭)। এই দুই আসামির বিরুদ্ধে ২৮ জনকে সাক্ষী ও সিজার লিস্টে আরও ৩ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে। এতে সাত খ-ে ৮৫২ পাতার চূড়ান্ত প্রতিবেদন প্রস্তুত করা হয়েছে। প্রথম অভিযোগে বলা হয়, ১৯৭১ সালের ২২ মে, আসামিরা পাকিস্তান দখলদার সেনাবাহিনীর ১০০ থেকে দেড় শ’ সদস্যসহ শরীয়তপুর জেলার পালং থানা এলাকায় কয়েকটি গ্রামে হামলা চালিয়ে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের কৃষক আব্দুস সামাদসহ প্রায় ২০০ হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষকে গুলি করে হত্যা করে ও বাড়ির মালামাল লুট করে। দ্বিতীয় অভিযোগে বলা হয়, ২৬ মে, ১৯৭১ সালে জেলার পালং থানার মালোপাড়া ও রুদ্রকর গ্রামে হামলা চালিয়ে মঠের পুরোহিতকে গুলে করে হত্যা করে ও গ্রামগুলো থেকে মামালাল লুট ও আগুনে পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয়। মালোপাড়া থেকে ৩০/৪৫ নারী ও পুরুষকে ধরে মাদারীপুর পাকিস্তান আর্মি ক্যাম্পে নিয়ে ৩ দিন আটকে রেখে নারীদের ধর্ষণ করে ছেড়ে দেয়। কিন্তু পুরুষদের গুলি করে হত্যা করে। তৃতীয় অভিযোগে বলা হয়, জুনে একই থানার শৈলেন্দ্র কৃষ্ণ পালের বাড়িতে হামলা চালিয়ে দুইজনকে হত্যা করে ও হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষদের নির্যাতন করে বেওনেট দিয়ে খুঁচিয়ে হত্যা করে। চতুর্থ অভিযোগে বলা হয়েছে, ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ থেকে ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত আসামিরা দখলদার বাহিনীর সহায়তায় এলাকায় হত্যা, গণহত্যা, ধর্ষণ, নির্যাতনসহ বিভিন্ন অপরাধ করে। এ সময় মানবতাবিরোধী অপরাধ করার মাধ্যমে মানুষের মধ্যে ভয়ভীতি ও আতঙ্কের সৃষ্টি করে পালং থানার এক থেকে দেড় হাজার মানুষকে দেশ ত্যাগ করে ভারতের শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় নিতে বাধ্য করে। ময়মনসিংহের ৫ রাজাকার ॥ একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ময়মনসিংহের খলিলূর রহমানসহ ৫ রাজাকারের সেফ হোমে অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য প্রসিকিউশনের আবেদন মঞ্জুর করেছে ট্রাইব্যুনাল। আসামিদেও ১৩-১৭ নবেম্বর একদিন করে জিজ্ঞাসাবাদ করা যাবে। চেয়ারম্যান বিচারপতি আনোয়ারুল হকের নেতৃত্বে তিন সদস্যবিশিষ্ট আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ আদেশ প্রদান করেছেন। আসামিরা হলেনÑ খলিলুর রহমান, আব্দুল মালেক, আব্দুল্লাহ, আক্কেল আলী ও আব্দুস সালাম।
×