ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

শোলাকিয়ায় কড়া নিরাপত্তায় ঈদের নামাজ আদায়

প্রকাশিত: ০৪:০১, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৬

শোলাকিয়ায় কড়া নিরাপত্তায় ঈদের নামাজ আদায়

নিজস্ব সংবাদদাতা, কিশোরগঞ্জ, ১৫ সেপ্টেম্বর ॥ দেশের সর্ববৃহৎ ঈদগাহ ময়দান কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায় কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থায় শান্তিপূর্ণভাবে ঈদ-উল-আযহার জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। ঈদের দিন ভোর থেকেই চলা গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিতে ভিজেই মুসল্লিরা এ ঈদগাহে নামাজ আদায় করেন। সকাল ৯টায় শুরু হওয়া ১৮৯তম ঈদের জামাতে ইমামতি করেন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন আলেম মুফতি ফরীদউদ্দীন মাসঊদ। এ ঈদগাহে জেলা প্রশাসক মোঃ আজিমুদ্দিন বিশ্বাস, পুলিশ সুপার আনোয়ার হোসেন খান, জেলার পিপি শাহ আজিজুল হক, সদর ইউএনও আব্দুল্লাহ আল মাসউদসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ ও প্রশাসনের উর্ধতন কর্মকর্তারা নামাজ আদায় করেন। ঈদের রাত থেকে চলা মুষলধারের বৃষ্টি উপেক্ষা করে শোলাকিয়ায় জামাতে অংশ নিতে ভোর থেকেই মুসল্লিরা মাঠে আসতে থাকেন। সকালে ভৈরব ও ময়মনসিংহ থেকে দুটি স্পেশাল ট্রেন ও বাসযোগে দূর-দূরান্তের মুসল্লিরা এসে জামাতে যোগ দেন। অনেকেই একদিন আগেই মাঠের মিম্বর, আত্মীয়স্বজনের বাড়ি, হোটেল ও আশপাশে এসে অবস্থান নেন। তবে ঈদ-উল-আযহায় কোরবানির বাধ্যবাধ্যকতা থাকায় এমনিতেই ঈদ-উল-ফিতরের তুলনায় মুসল্লিদের পরিমাণ কম হয়। এবার জঙ্গী হামলার আশঙ্কা ও বৈরী আবহাওয়ার কারণে মুসল্লির পরিমাণ কয়েক শ’ হবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে। এদিকে, গত ঈদ-উল-ফিতরের দিন মাঠের অদূরেই জঙ্গী হামলার ঘটনার কথা মাথায় রেখে প্রতিটি মুসল্লিকে মাঠে ঢোকার সময় মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে দেহ তল্লাশি করা হয়। পাতলা জায়নামাজ ছাড়া অন্য কিছু সঙ্গে নিয়ে কোন মুসল্লি ঈদগাহে ঢুকতে পারেননি। এই প্রথম মাঠের মুসল্লিদের সার্বিক নিরাপত্তায় তিন প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছিল। এছাড়াও র‌্যাব, পুলিশ, এপিবিএনসহ সাদা পোশাকের ছয় শতাধিক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত ছিল। আর পর্যাপ্ত সিসি টিভি ক্যামেরা ও ওয়াচ টাওয়ার দিয়ে পুরো মাঠ ও আশপাশ এলাকা কঠোর নজরদারিতে রাখা হয়। নামাজ শেষে শোলাকিয়ার গ্র্যান্ড ইমাম আল্লামা ফরীদউদ্দীন মাসঊদ বিশেষ মোনাজাতে গত ঈদ-উল-ফিতরের দিন সকালে ঈদগাহের পাশে জঙ্গী হামলায় নিহত দুই পুলিশ সদস্য ও গৃহবধূ ঝর্ণা রানী ভৌমিকের আত্মার শান্তি কামনা করেন। চট্টগ্রাম স্টাফ রিপোর্টার চট্টগ্রাম অফিস থেকে জানান, মঙ্গলবার চট্টগ্রামে পালিত হয়েছে ঈদ-উল-আযহা। এদিন নগরী ও জেলার সর্বত্র বিভিন্ন ঈদগাহ ও মসজিদে নামাজ আদায় করেন ধর্মপ্রাণ মানুষ। নামাজ শেষে আল্লাহর সন্তুষ্টি আদায়ের জন্য তারা পশু কোরবানি দেন। ঈদের জামাতে একটি সুখী সমৃদ্ধ ও জঙ্গীবাদমুক্ত দেশ কামনায় মোনাজাতও করা হয়। চট্টগ্রাম নগরীতে সিটি কর্পোরেশন ও জেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে অনুষ্ঠিত হয় ১৬২টি ঈদ জামাত। তবে বরাবরের মতো এবারও প্রধান জামাতটি হয় জমিয়তুল ফালাহ জাতীয় মসজিদ ময়দানে। এখানে অনুষ্ঠিত হয় দুটি জামাত। প্রথমটিতে ইমামতি করেন মসজিদের সিনিয়র পেশ ইমাম মাওলানা নুর মোহাম্মদ সিদ্দিকী। দ্বিতীয় জামাতে ইমামতি করেন পেশ ইমাম মুফতি মোহাম্মদ জালালুদ্দিন। জেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে সবচেয়ে বড় জামাতটি অনুষ্ঠিত হয় এমএ আজিজ স্টেডিয়ামসংলগ্ন জিমনেসিয়াম মাঠে। জমিয়তুল ফালাহ ঈদের নামাজ আদায় করেন প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসি, বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান সাবেক মন্ত্রী আব্দুল্লাহ আল নোমান, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোসলেম উদ্দিন আহমেদ, সাবেক মেয়র মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন, মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরী প্রমুখ। ফরিদপুর নিজস্ব সংবাদদাতা ফরিদপুর থেকে জানান, ফরিদপুরের সর্ববৃহৎ ঈদ জামাত সদরপুর উপজেলার আটরশির বিশ্ব জাকের মঞ্জিলে অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রচ- বৃষ্টির মধ্যে সকাল ১০টায় অনুষ্ঠিত বৃহত্তর এ জামাতে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে লাখো ধর্মপ্রাণ মুসল্লি শরিক হন। ঈদ জামাত শেষে মোনাজাত পরিচালনা করেন পীরজাদা খাজা মাহফুজুল হক মুজাদ্দেদী ছাহেব ও পীরজাদা মোস্তফা আমীর ফয়সল মুজাদ্দেদী। কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগার নিজস্ব সংবাদদাতা কেরানীগঞ্জ থেকে জানান, কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগার উদ্বোধনের পর কারা অভ্যন্তরে এই প্রথম বন্দীরা ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্যে উন্নতমানের খাবার খেয়ে ঈদ-উল-আযহা উৎযাপন করল। এ ব্যাপারে জেল সুপার নেসার আলম বলেন, সকালে কয়েদীদের নিয়ে ঈদের নামাজ আদায় করা হয়। পরে সকালের নাস্তা হিসেবে তাদের পায়েস ও মুড়ি পরিবেশন করা হয়। দুপুরে বড় রুই মাছ, আলুরদম ও সাদা ভাত খেতে দেয়া হয় আর রাতে কয়েদীদের মাঝে বিশেষ খাবার হিসেবে পোলাও, গরুর মাংস, খাসির মাংস, সালাদ ও পান-সুপারি পরিবেশন করা হয়।
×