ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

আজ যেখানে ঈদ

প্রকাশিত: ০৫:৩৭, ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৬

আজ যেখানে ঈদ

স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম অফিস ॥ সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে রোজা, ঈদ-উল-ফিতর ও ঈদ-উল-আযহা পালিত হয়ে থাকে দক্ষিণ চট্টগ্রামের ৫০ গ্রামের মানুষ। এ গ্রামগুলোতে আজ সোমবার পালিত হবে কোরবানির ঈদ। জেলার চন্দনাইশ উপজেলার জাহাগিরিয়া শাহ সুফী মমতাজিয়া দরবার শরীফ ও সাতকানিয়া মির্জাখিল দরবার শরীফের অনুসারীরা আজ ঈদ-উল-আযহা পালন করবেন। একই দরবারের অনুসারী সারাদেশে সহস্রাধিক গ্রাম রয়েছে। ওই গ্রামগুলোতেও ঈদ উদযাপিত হবে আজ। প্রসঙ্গত, চন্দনাইশের এ দরবার শরীফের অনুসারীরা হানাফি মাজহাব অনুযায়ী বিশ্বের যে কোন দেশে চাঁদ দেখার ওপর নির্ভর করে রোজা, দুই ঈদ এবং ধর্মীয় রীতিনীতি পালন করে থাকেন। আজ সোমবার সকালে জাহাগিরিয়া দরবার শরীফ প্রাঙ্গণে ঈদের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হবে। ঈদ-উল-আযহা পালিত হবে দরবারের অনুসারী পশ্চিম এলাহাবাদ, কাঞ্চননগর, মাইজপাড়া, জুনিঘোনা, আব্বাসপাড়া, সৈয়দাবাদ, দক্ষিণ কাঞ্চননগর, খনিয়ারপাড়া, হাশিমপুর, কেশুয়া, সাতবাড়িয়া, মোহাম্মদপুর, হারালা, বাঁশখালীর জলদি, কালিপুর, গুনাগরি, মিনজিরিতলা, ছনুয়া, সাধনপুর, আনোয়ারার তৈলারদ্বীপ, বাথুয়া, বোয়ালখালির চরনদ্বীপ, লোহাগাড়ার আমিরাবাদ, চুনতিসহ দক্ষিণ চট্টগ্রামের প্রায় ৫০ গ্রামে। মাদারীপুরে ৫০ গ্রামে নিজস্ব সংবাদদাতা মাদারীপুর থেকে জানান, মাদারীপুরের ৪ উপজেলার ৫০ গ্রামের হযরত সুরেশ্বর (রা) অনুসারীরা সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে সোমবার ঈদ-উল-আযহা উদযাপন করছেন। সুরেশ্বর দ্বায়রা শরীফের প্রধান গদীনসীন পীর ও আন্তর্জাতিক চাঁদ দেখা কমিটির সভাপতি আলহাজ খাজা শাহ্ সূফী সৈয়্যেদ নূরে আক্তার হোসাইন জানান, রবিবার ১১ সেপ্টেম্বর পবিত্র মক্কা শরীফে হজব্রত পালিত হয়। আজ সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের ৬৯টি দেশে ঈদ-উল-আযহা উদযাপন করছে। তাই সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে মিল রেখে শরীয়তপুর জেলার নড়িয়া উপজেলার সুরেশ্বর দ্বায়রা শরীফের প্রতিষ্ঠাতা হযরত জানশরীফ শাহ্ সুরেশ্বরীর (রা) মাদারীপুর ও শরীয়তপুর জেলাসহ বাংলাদেশের প্রায় দেড় কোটি ধর্মপ্রাণ মুসলমান আজ ঈদ-উল-আযহা উদযাপন করেছেন। শরীয়তপুর দ্বায়রা শরীফের মাদারীপুর জেলার প্রধান খাদেম ও পাঁচখোলা ইউপির প্রাক্তন চেয়ারম্যান আব্দুস সাত্তার মোল্লা জানান, মাদারীপুর সদর উপজেলার পাঁচখোলা, জাজিরা, মহিষেরচর, জাফরাবাদ, চরকালিকাপুর, তাল্লুক, বাহেরচরকাতলা, চরগোবিন্দপুর, আউলিয়াপুর, ছিলারচর, কুনিয়া, মস্তফাপুর, কালকিনির সাহেবরামপুর, আন্ডারচর, আলীনগর, বাঁশগাড়ী, খাসেরহাট, আউলিয়াপুর, রামারপোল, ছবিপুর, ছিলিমপুর, ক্রোকিরচর, সিডিখান, কয়ারিয়া, রমজানপুর, বাটামারা, রাজারচর, শিবচরের পাঁচ্চর, স্বর্ণকারপট্টিসহ মাদারীপুর জেলার চারটি উপজেলার ৫০ গ্রামের অর্ধ লক্ষাধিক ধর্মপ্রাণ মুসলমান বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনা ও ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে আজ ঈদ-উল-আযহা উদযাপন করছেন। ঈদ-উল-আযহা উপলক্ষে মাদারীপুর সদর উপজেলার পাঁচখোলা ইউনিয়নের চরকালিকাপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠ ও কালকিনির আন্ডারচর খানকায়ে শরীফ মাঠে সকাল ১০টায় ঈদের বৃহৎ জামাত অনুষ্ঠিত হবে। চরকালিকাপুর ঈদের জামাতে ইমামতি করবেন মাস্টার আবুল হাসেম মিয়া ও আন্ডারচর খানকায় শরীফ মাঠের ঈদের জামাতে ইমামতি করবেন মাওলানা মোকসেদ আলী মিয়া। মাদারীপুর সদর উপজেলার চরকালিকাপুর গ্রামের মোঃ হাশেম মাস্টার জানান, সুরেশ্বর দ্বায়রা শরীফের প্রতিষ্ঠাতা হযরত জান শরীফ শাহ্ সুরেশ্বরের (রা) মাদারীপুরের অনুসারীরা এক শ’ বছরেরও বেশি সময় ধরে সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে মিল রেখে রোজা রাখেন এবং ঈদ-উল-ফিতর ও ঈদ-উল-আযহা পালন করে আসছেন। সুরেশ্বর পীরের ভক্তদের মতে, ইসলাম ধর্মের সবকিছুই মক্কা শরীফ হয়ে বাংলাদেশে এসেছে। তাছাড়া মক্কা শরীফ থেকে বাংলাদেশের সময়ের পার্থক্য মাত্র ৩ ঘণ্টা। তাই মক্কাবাসীসহ মধ্যপ্রাচ্যের মুসলমানরা যেদিন রোজা রাখেন তারাও সেদিন থেকে রোজা করে থাকেন। তারা মনে করেন, ৩ ঘণ্টা সময়ের পার্থক্যের জন্য ২৪ ঘণ্টা পার্থক্য মানা যুক্তিযুক্ত নয়। উল্লেখ্য, সুরেশ্বর দরবার শরীফের প্রতিষ্ঠাতা হযরত জান শরীফ শাহ্ সুরেশ্বরীর (রা) অনুসারীরা ১৪৫ বছর পূর্ব থেকে সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে মিল রেখে রোজা রাখেন এবং ঈদ-উল-ফিতর ও ঈদ-উল-আযহা পালন করে আসছেন। মুন্সীগঞ্জের ৯ গ্রামে স্টাফ রিপোর্টার মুন্সীগঞ্জ থেকে জানান, ৯ গ্রামে সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে এবারও একদিন আগে সোমবার ঈদ-উল-আযহা উদযাপিত হচ্ছে। গ্রামগুলো হচ্ছেÑ সদর উপজেলার আনন্দপুর, শিলই, নায়েবকান্দি, আধারা, মিজিকান্দি, কালিরচর, বাংলাবাজার, বাঘাইকান্দির ও কংসপুরার একাংশ। গ্রামগুলোর জাহাগীর তরিকার পাঁচ হাজার মানুষ কয়েক বছর ধরে আগাম ঈদ উদযাপন করছে। বিগত বছরগুলোর মতো শিলই গ্রামে এই ঈদ জামাতে ইমামতি করবেন হাজী ডাঃ মনিরুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘পৃথিবীর যে কোন স্থানে নব চন্দ্র দেখা দিলে সেই অনুযায়ী ঈদ পালন করা উচিত। তাই আমরা ঈদ উদযাপন করছি। সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখেই ঈদ-উল-আযহা উদযাপন করবেন তারা।
×