পোশাক শিল্পে উৎসে কর না বাড়ানোর দাবি বিজিএমইএর

স্টাফ রিপোর্টার ॥ পোশাক শিল্প খাতে উৎসে কর না বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন বিজিএমইএ নেতারা। বাজেটে উৎসে কর বৃদ্ধির ঘোষণা আসায় শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানাল তৈরি পোশাক শিল্পের মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ। বিষয়টি নিয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী, অর্থমন্ত্রী, প্রয়োজনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গেও দেখা করবেন বলে জানিয়েছেন বিজিএমইএ সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান। তিনি বলেন, বাজেটে শিল্পকে উৎসাহিত করতে কিছু পদক্ষেপ নেয়া হলেও এর পরিপন্থী কিছু পরিকল্পনাও দেখা যাচ্ছে। সব ধরনের রফতানিতে উৎসে কর্তিত করের হার দশমিক ৬০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে এক দশমিক ৫০ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে, যার অর্থ দাঁড়ায় প্রত্যক্ষ কর ১৫০ শতাংশ বৃদ্ধি। এটা শিল্পের বিকাশের সঙ্গে সম্পূর্ণ সাংঘর্ষিক। রান প্লাজা দুর্ঘটনার পর ২০১৪-১৫ অর্থবছরে পোশাক খাতে উৎসে কর ধরা হয় শূন্য দশমিক ৩ শতাংশ। চলতি অর্থবছর তা বাড়িয়ে এক শতাংশ করার প্রস্তাব করা হলেও পোশাক ব্যবসায়ীদের দাবির মুখে তা পরে তা কমানো হয়। আর এবার বাজেটে তা বাড়িয়ে এক দশমিক ৫০ শতাংশ করার কথা বলা হয়েছে। সিদ্দিকুর রহমান বলেন, রানা প্লাজা দুর্ঘটনার পর পোশাক খাত যে পরিস্থিতির মধ্যে পড়েছে, সে অবস্থা থেকে এখনও উত্তরণ ঘটেনি। তাই ২০১৪-১৫ অর্থবছরের মতো শূন্য দশমিক ৩ শতাংশ হারে উৎসে কর চালু রাখার দাবি জানান তিনি। আর তা সম্ভব না হলে গত বছরের মতো শূন্য দশমিক ৬ শতাংশ রাখতে বলেন। পোশাক খাতের ‘দুরবস্থার’ বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, বিশ্ব বাজারে পোশাক পণ্যের দরপতন অব্যাহত আছে। অপরদিকে প্রতি বছর উৎপাদন খরচ ৮ থেকে ১০ শতাংশ হারে বাড়ছে। আবার প্রতিযোগী দেশগুলোর তুলনায় ডলারের বিপরীতে টাকার মান শক্তিশালী হতে থাকায় লোকসানের আরেক কারণ হিসেবে দেখা দিয়েছে। গত চার বছরে ডলারের বিপরীতে টাকার মান ৭ দশমিক ৬৬ শতাংশ হারে শক্তিশালী হওয়ার পাশাপাশি এ্যাকর্ড, এ্যালায়েন্স ও ন্যাশনাল এ্যাকশন প্ল্যানের দেয়া কারখানা সংস্কার পরিকল্পনা বাস্তবায়নে ক্ষুদ্র ও মাঝারি প্রতিষ্ঠানগুলোর পাঁচ থেকে ১০ কোটি টাকা ব্যয় হচ্ছে বলে তিনি দাবি করেন। এ পরিস্থিতিতে উৎসে কর বৃদ্ধি পোশাক খাতকে আরও সঙ্কটে ফেলবে। বিভিন্ন কারণে সক্ষমতা হারিয়ে ইতোমধ্যে ৬১৮টি কারখানা বন্ধ হয়েছে, আরও ৩১৯টি বন্ধ হওয়ার পথে। এভাবে করের বোঝা বাড়লে কারখানা টিকে থাকতে পারবে না বলে মনে করেন বিজিএমইএ সভাপতি। প্রস্তাবিত বাজেটে পোশাক খাতে কর্পোরেট কর ৩৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২০ শতাংশে আনা হয়েছে। বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, আমরা এ উদ্যোগকে স্বাগত জানাই। তবে আমাদের দাবি ছিল এ করহার ১০ শতাংশে নিয়ে আসা।