
ছবি: সংগৃহীত
গ্যাসের সমস্যা খুবই অস্বস্তিকর। ভুল খাবার খেলে এই সমস্যা আরও বাড়তে পারে, আর এর মধ্যে কিছু ফলও রয়েছে। গ্যাসের সমস্যা থাকলে কিছু ফল এড়িয়ে চলা বা পরিমিত পরিমাণে খাওয়া বুদ্ধিমানের কাজ।
গ্যাসের সমস্যা থাকলে যে ফলগুলো সাধারণত এড়িয়ে চলতে বলা হয়, সেগুলো হলো:
-
আপেল: আপেলে ফ্রুক্টোজ (এক ধরনের চিনি) এবং উচ্চ মাত্রার ফাইবার থাকে। কিছু মানুষের ক্ষেত্রে এই ফ্রুক্টোজ এবং ফাইবার হজম করা কঠিন হয়, ফলে পেটে গ্যাস তৈরি হতে পারে।
-
নাশপাতি: আপেলের মতোই নাশপাতিতে প্রচুর পরিমাণে ফ্রুক্টোজ এবং সরবিটল (এক ধরনের চিনি অ্যালকোহল) থাকে, যা গ্যাসের কারণ হতে পারে।
-
তরমুজ: তরমুজে উচ্চ পরিমাণে ফ্রুক্টোজ থাকে। যাদের ফ্রুক্টোজ হজমে সমস্যা আছে (ফ্রুক্টোজ ম্যালাবসর্পশন), তাদের ক্ষেত্রে তরমুজ খেলে দ্রুত গ্যাস তৈরি হতে পারে।
-
আম: আমের মধ্যে ফ্রুক্টোজ বেশি পরিমাণে থাকে। অতিরিক্ত আম খেলে যাদের ফ্রুক্টোজ হজমে সমস্যা আছে, তাদের গ্যাস হতে পারে।
-
চেরি ও মিষ্টি ফল: চেরি, পিচ, প্লাম (আলুবোখারা) বা অন্যান্য মিষ্টি ফলে সরবিটল নামক প্রাকৃতিক চিনির মাত্রা বেশি থাকে। এটিও কারো কারো পেটে গ্যাস তৈরি করে।
-
শুকনো ফল: কিশমিশ, খেজুর, শুকনো অ্যাপ্রিকট বা কিসমিসের মতো শুকনো ফলগুলোতে ফাইবারের পরিমাণ অনেক বেশি থাকে। অতিরিক্ত ফাইবার হঠাৎ করে হজম করা কঠিন হলে গ্যাস বা পেট ফাঁপা হতে পারে।
কেন এই ফলগুলো গ্যাস তৈরি করে?
এই ফলগুলোতে থাকা ফ্রুক্টোজ, সরবিটল এবং কিছু নির্দিষ্ট ধরনের ফাইবার আমাদের ক্ষুদ্রান্ত্রে সম্পূর্ণরূপে হজম হতে পারে না। যখন এগুলো হজম না হয়ে বৃহদন্ত্রে পৌঁছায়, তখন সেখানে থাকা ব্যাকটেরিয়া এগুলোকে ভেঙে গ্যাস তৈরি করে। যাদের আইবিএস (Irritable Bowel Syndrome) বা অন্যান্য হজমজনিত সমস্যা আছে, তাদের ক্ষেত্রে এই ধরনের ফলের কারণে গ্যাস হওয়ার প্রবণতা বেশি।
করণীয়:
-
পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ: যদি এসব ফল আপনার প্রিয় হয়, তাহলে অল্প পরিমাণে খেয়ে দেখুন। এতেও সমস্যা হলে সম্পূর্ণ এড়িয়ে চলুন।
-
হজমের সময়: ফলগুলো খাবারের ঠিক আগে বা পরে না খেয়ে, খাবারের অন্তত এক ঘণ্টা আগে বা দু-ঘণ্টা পরে খান।
-
পানি পান: ফল খাওয়ার সময় পর্যাপ্ত পানি পান করুন, যা ফাইবার হজমে সাহায্য করে।
-
বিকল্প ফল: গ্যাসের সমস্যা কম হয় এমন ফল যেমন— কলা, বেরি (স্ট্রবেরি, ব্লুবেরি), লেবু, কমলা, পেঁপে, আনারস ইত্যাদি বেছে নিতে পারেন।
যদি আপনার গ্যাসের সমস্যা তীব্র হয় এবং কোনো ফল খেলে তা বাড়ছে বলে মনে হয়, তাহলে একজন পুষ্টিবিদ বা চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। তারা আপনার জন্য উপযুক্ত একটি ডায়েট প্ল্যান তৈরি করে দিতে পারবেন। তথ্যসূত্র: নেচার ডাইজেস্ট
সাব্বির