ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১৪ জুন ২০২৫, ৩১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

বিধ্বস্ত হওয়া বিমানের ক্রু ছিলেন মেয়ে, মা বারবার বলছেন; ‘লক্ষ্মী মেয়ে, ফিরে আয়, তোর মা অপেক্ষা করছে’

প্রকাশিত: ০১:৩৬, ১৪ জুন ২০২৫; আপডেট: ০১:৩৭, ১৪ জুন ২০২৫

বিধ্বস্ত হওয়া বিমানের ক্রু ছিলেন মেয়ে, মা বারবার বলছেন; ‘লক্ষ্মী মেয়ে, ফিরে আয়, তোর মা অপেক্ষা করছে’

মুম্বাইয়ের ঝুহু-কলিওয়াড়া বস্তির সরু গলিতে শোকের ছায়া। এয়ার ইন্ডিয়ার দুর্ঘটনাকবলিত বিমানে ক্রু হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন ৩৪ বছর বয়সী সাইনীতা চক্রবর্তী। সেই মর্মান্তিক দুর্ঘটনার পর থেকেই শোকস্তব্ধ তাঁর পরিবার।

“লক্ষ্মী মেয়ে, ফিরে আয়, তোর মায় অপেক্ষা করছে”— এই কথা বারবার বলছেন সাইনীতার মা রেমা চক্রবর্তী, চোখের পানি ধরে রাখতে পারছেন না তিনি। দুঃখে ভারাক্রান্ত রেমা এখনও মেনে নিতে পারছেন না মেয়ের মৃত্যু। পাশেই চুপচাপ বসে আছেন সাইনীতার বাবা অবীন চক্রবর্তী, নির্বাক, হারিয়ে যাওয়া একজন পিতার প্রতিচ্ছবি।

আবীন জানান, “সাইনীতা আমাদের খুব যত্ন নিত। পরিবারের খরচ, এমনকি মায়ের ক্যানসারের চিকিৎসার ব্যয়ও সে-ই বহন করত।” কথা বলতে বলতেই চোখে জল চলে আসে তাঁর।

অসংখ্য মানুষ আসছেন তাঁদের বাড়িতে প্রতিবেশী, বন্ধু, সাংবাদিক। প্রতিবার কেউ এলেই আবারও ভেঙে পড়ছেন রেমা। পরিবারটিকে সাহায্য করছেন এলাকার মানুষজন, কেউ খাবার এনে দিচ্ছেন, কেউ ফোন ধরছেন, আবার কেউ সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলছেন।

অবীন চক্রবর্তী যাচ্ছেন আহমেদাবাদ, যেখানে দুর্ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার হওয়া মরদেহ শনাক্ত করতে তাঁর ডিএনএ নমুনা দেওয়ার কথা রয়েছে। সঙ্গে থাকছেন তাঁদের এক প্রতিবেশী।

সাইনীতার এক সহকর্মী এবং বন্ধু হেমন্ত চন্দন বলেন, “ওর স্বপ্নই ছিল আকাশে ওড়া। ফ্লাইং ছিল ওর প্যাশন।”

সেই স্বপ্নই যে এমন এক পরিণতি নিয়ে আসবে, তা ভাবেননি কেউ। বাড়ির দরজার পাশেই আজও ঝুলছে সাইনীতার ব্যাগ, গিটার আর একটি ছোট প্লাস্টিকের বিমান, যা ওর উড়ে চলার প্রতীক ছিল একদিন, আজ তা যেন মায়ের চোখে নিঃশেষ আশার স্মারক।

রিফাত

×