ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১৪ জুন ২০২৫, ৩১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

ভারতের ইতিহাসে ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনার আসল কারণ যা জানা গেল

প্রকাশিত: ২২:৫৭, ১৩ জুন ২০২৫

ভারতের ইতিহাসে ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনার আসল কারণ যা জানা গেল

ছবি: সংগৃহীত।

আহমেদাবাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে উড্ডয়নের ৩০ সেকেন্ডের মধ্যেই ভয়াবহ দুর্ঘটনার শিকার হলো এয়ার ইন্ডিয়ার একটি বোইং ৭৮৭ ড্রিমলাইনার। বিমানটি মাত্র ১৯০ মিটার বা ৬২৫ ফুট উচ্চতায় পৌঁছে আচমকাই নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একটি আবাসিক ভবনে বিধ্বস্ত হয়। এতে বিমানের ২৪২ জন যাত্রী ও ক্রু সকলেই নিহত হন বলে নিশ্চিত করেছে কর্তৃপক্ষ।

ফ্লাইট AI087 লন্ডনের উদ্দেশে যাত্রা করেছিল ১২ জুন দুপুর ১টা ৩৮ মিনিটে। কিন্তু উড্ডয়নের পরই বিমানটি গতি হারিয়ে মেঘানী অঞ্চলের একটি চিকিৎসকদের হোস্টেল ভবনে বিধ্বস্ত হয়। দুর্ঘটনার সময় হোস্টেলের ক্যান্টিনে থাকা শিক্ষার্থীরা অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে যান। বিধ্বস্ত বিমানের আগুনে পুড়ে যায় গোটা ভবন।

কি কারণে এই ভয়াবহ দুর্ঘটনা? তিনটি সম্ভাব্য ব্যাখ্যা দিলেন বিশেষজ্ঞরা:

১. টেক-অফ কনফিগারেশন ত্রুটি
বিশেষজ্ঞদের মতে, বোইং ৭৮৭-এর মতো হাইটেক বিমানের জন্য এটি একেবারেই অপ্রত্যাশিত। প্লেনটির ফ্ল্যাপস ও স্ল্যাটস হয়ত একেবারেই তোলা হয়নি বা অস্বাভাবিক অবস্থায় ছিল। এগুলো বিমানের লিফট তৈরি করতে সাহায্য করে। পাশাপাশি ল্যান্ডিং গিয়ারও তোলা হয়নি, যা প্লেনের ওপর বাড়তি চাপ সৃষ্টি করে।

২. ইঞ্জিনে ত্রুটি বা বার্ড স্ট্রাইক
সম্ভবত বিমানের থ্রাস্ট যথেষ্ট ছিল না। পাখি ঢুকে ইঞ্জিন বিকল হয়ে পড়তে পারে বলেও মনে করছেন তদন্তকারীরা।

৩. অতিরিক্ত ওজন ও গরম আবহাওয়ার প্রভাব
দুর্ঘটনার সময় আহমেদাবাদের তাপমাত্রা ছিল ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এত উচ্চ তাপমাত্রায় হাওয়ার ঘনত্ব কমে যায়, ফলে বিমানের লিফটও কমে যায়। তদুপরি, বিমানটির ওজন ছিল ২৪২ টনের মতো, যা কম গতির সঙ্গে বিপজ্জনক এক সমন্বয় তৈরি করে।

পাইলটরা কেন বুঝতে পারলেন না?

প্রশ্ন উঠছে—বোইং ৭৮৭-এর মতো উন্নত প্রযুক্তির বিমানে শত শত সেন্সর, অটো ওয়ার্নিং সিস্টেম থাকা সত্ত্বেও কেন এই কনফিগারেশন ত্রুটি ধরা পড়লো না? পাইলটদের কি এই সতর্কবার্তা দেখানোর সুযোগই ছিল না? নাকি ককপিট সিস্টেম ব্যর্থ ছিল?

তদন্ত চলছে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে

দুর্ঘটনার তদন্তে নেমেছে ভারতের DGCA, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের NTSB, যুক্তরাজ্যের AAIB ও বোইং কর্তৃপক্ষ। তারা ইতোমধ্যেই ফ্লাইট ডেটা রেকর্ডার ও ককপিট ভয়েস রেকর্ডার বিশ্লেষণ শুরু করেছে।

বিশেষজ্ঞরা এটিকে ভারতের বেসামরিক বিমান চলাচলের ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ ও প্রাণঘাতী দুর্ঘটনা হিসেবে উল্লেখ করছেন।

নুসরাত

×