
ছবিঃ সংগৃহীত
রাশিয়া ও ইউক্রেন আজ তুরস্কের ইস্তাম্বুল শহরে দ্বিতীয় দফার সরাসরি শান্তি আলোচনায় বসছে। ২০২২ সালের পর এটি তাদের দ্বিতীয় আনুষ্ঠানিক বৈঠক হলেও, যুদ্ধ থামানো নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে এখনও গভীর মতপার্থক্য রয়ে গেছে। এদিকে যুদ্ধ চলছেই, বরং আরও বেড়েছে হামলার তীব্রতা।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প উভয় দেশকে শান্তির পথে আসার আহ্বান জানালেও এখনো কোনো কার্যকর সমঝোতা হয়নি। হোয়াইট হাউজ হুঁশিয়ারি দিয়েছে, যদি দুই পক্ষ শান্তির ব্যাপারে ‘একগুঁয়েমি’ চালিয়ে যায়, তবে যুক্তরাষ্ট্র যুদ্ধ থেকে ‘সরে আসবে’।
গত ১৬ মে অনুষ্ঠিত প্রথম দফার আলোচনায় যুদ্ধের সবচেয়ে বড় বন্দি বিনিময় ঘটেছিল, তবে যুদ্ধবিরতি বা শান্তির কোনো বাস্তব অগ্রগতি হয়নি। রাশিয়ার প্রতিনিধিত্ব করছেন ক্রেমলিন উপদেষ্টা ভ্লাদিমির মেডিনস্কি, যিনি প্রথম দফার পর বলেছিলেন, "যুদ্ধ ও আলোচনার প্রক্রিয়া একসাথে চলতে হয়।"
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি নিশ্চিত করেছেন, দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী রুস্তেম উমেরভ নেতৃত্ব দেবেন ইউক্রেনীয় প্রতিনিধি দলে। তাঁর সঙ্গে থাকবেন উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও গোয়েন্দা বিভাগ ও সেনাবাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তারা।
আলোচনার প্রাক্কালে ইউক্রেন এক উচ্চাভিলাষী হামলা চালিয়েছে রাশিয়ার সাইবেরিয়ার পারমাণবিক সক্ষম বোমারু বিমানঘাঁটি এবং অন্যান্য সামরিক ঘাঁটির উপর। অপরদিকে রাশিয়া ইউক্রেনের দিকে ৪৭২টি ড্রোন নিক্ষেপ করেছে, যা রাতের সবচেয়ে বড় হামলার রেকর্ড।
রাশিয়া বলছে, তারা প্রথমে শান্তিচুক্তির সম্ভাব্য রূপরেখা তৈরি করবে, এরপর যুদ্ধবিরতি নিয়ে কথা বলবে। ইউক্রেন বলছে, তারা এখনো রাশিয়ার খসড়া মেমোরেন্ডাম পায়নি, তবে রাশিয়া জানিয়েছে, তারা ইউক্রেনের খসড়া পেয়েছে এবং সোমবার প্রতিক্রিয়া দেবে।
ইউক্রেনের শান্তি রূপরেখা অনুসারে:
শান্তিচুক্তির পর ইউক্রেনের সামরিক শক্তির ওপর কোনো সীমাবদ্ধতা থাকবে না।
রাশিয়ার অধিকৃত ইউক্রেনীয় ভূখণ্ডকে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি দেওয়া হবে না।
রাশিয়াকে যুদ্ধের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।
বর্তমান যুদ্ধের ফ্রন্টলাইন থেকেই অঞ্চলভিত্তিক আলোচনা শুরু হবে।
রাশিয়া বর্তমানে ইউক্রেনের প্রায় এক-পঞ্চমাংশ ভূখণ্ড নিয়ন্ত্রণ করছে, যার পরিমাণ প্রায় ১,১৩,১০০ বর্গকিমি – যা যুক্তরাষ্ট্রের ওহাইও অঙ্গরাজ্যের সমান।
প্রসঙ্গত, ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেনে পূর্ণমাত্রার আক্রমণ শুরু করেন, পূর্ব ইউক্রেনে রুশপন্থী বিদ্রোহীদের সঙ্গে ইউক্রেনীয় সেনাদের দীর্ঘ আট বছরের সংঘাতের পর। যুক্তরাষ্ট্রের তথ্য অনুযায়ী, এই যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় ১২ লাখের বেশি মানুষ নিহত ও আহত হয়েছে।
সূত্রঃ রয়টার্স
নোভা