
ছবি: সংগৃহীত
ভারত-শাসিত কাশ্মিরে বন্দুকধারীদের হামলার পর পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে সম্পর্কের চরম অবনতি ঘটেছে। উভয় দেশ পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে, এর মধ্যে ভারতের একতরফাভাবে সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিত করার সিদ্ধান্ত অন্যতম। এই পরিস্থিতিতে পাকিস্তান পূর্ণ শক্তি দিয়ে প্রতিক্রিয়া জানাতে প্রস্তুত। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পানির অধিকার রক্ষায় পাকিস্তান পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করতে পারে।
আজ শুক্রবার পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম এক্সপ্রেস ট্রিবিউনে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারতের জম্মু ও কাশ্মিরের পেহেলগামে পর্যটকদের ওপর হামলার পর ভারত সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নেয়। ভারতের এই পদক্ষেপের ফলে ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কের উত্তেজনা তীব্র হয়েছে।
পাকিস্তান জানিয়েছে, এই চুক্তি অনুযায়ী তাদের পানির প্রবাহ বন্ধ বা সরিয়ে নেওয়ার কোনো চেষ্টা যুদ্ধ ঘোষণার সমতুল্য হবে এবং এর জবাবে পাকিস্তান ‘সকল ধরনের প্রচলিত ও অপ্রচলিত শক্তি’ ব্যবহার করবে।
১৯৬০ সালে বিশ্বব্যাংকের তত্ত্বাবধানে স্বাক্ষরিত সিন্ধু পানি চুক্তি ছিল পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে বিরল এক সহযোগিতার উদাহরণ। পাকিস্তান এই চুক্তির আওতায় সিন্ধু নদী ও তার শাখাগুলোর পানি ব্যবহারের ওপর নির্ভরশীল, কারণ দেশটির কৃষি ব্যবস্থা প্রায় ৯০ শতাংশ পানি সরবরাহের উপর নির্ভরশীল।
ভারতের ক্যাবিনেট কমিটি অন সিকিউরিটি (সিসিএস) গত বুধবার পেহেলগাম হামলার পর চুক্তি ‘স্থগিত’ করার ঘোষণা দেয়। ভারত দাবি করছে, পাকিস্তান তাদের নিরাপত্তা উদ্বেগের সমাধান না করলে এই পদক্ষেপ অব্যাহত থাকবে।
পাকিস্তান এর প্রতিক্রিয়ায় জানিয়েছে, যদি ভারতের কোনো পদক্ষেপ পাকিস্তানের পানির প্রবাহ বন্ধ করে, তাহলে তা ‘যুদ্ধ’ হিসেবে গণ্য হবে এবং পাকিস্তান কোনো দ্বিধা ছাড়াই সামরিক শক্তি প্রয়োগ করবে। এমনকি, প্রতিরক্ষা বিশ্লেষকরা মনে করছেন, পাকিস্তান এই পরিস্থিতিতে পারমাণবিক অস্ত্র প্রয়োগের কথাও ভাবতে পারে। একজন বিশ্লেষক বলেন, ‘ভারত যদি পাকিস্তানের পানির অধিকার ক্ষুন্ন করে, পাকিস্তান তাতে হামলা করবে—এমনকি এটি পরমাণু হামলা হতে পারে।’
পাকিস্তানের সাবেক সিন্ধু পানি কমিশনার জামাত আলী শাহ ভারতের পদক্ষেপকে রাজনৈতিক কৌশল হিসেবে দেখছেন, যার উদ্দেশ্য পাকিস্তানের উপর চাপ সৃষ্টি করা এবং জনমত শান্ত করা। তিনি বলেন, এই চুক্তি স্থায়ী এবং একতরফাভাবে বাতিল করা সম্ভব নয়।
শিহাব