অনলাইন ডেস্ক ॥ আগরতলাবাসীর জীবনরেখা শুকিয়ে যেতে বসেছে।
আগরতলার এবং সংলগ্ন এলাকার তৃষ্ণা মেটায় হাওড়া নদী। শুধু আগরতলা কেন, ৫৩ কিলোমিটার দীর্ঘ হাওড়া নদীর অববাহিকা অঞ্চলের আয়তন ৫৭০ বর্গ কিলোমিটার। অসংখ্য গ্রাম, জনপদের ভরসা এই হাওড়া। সেই নদীটাই ক্রমশ শুকিয়ে যাচ্ছে। দিনদিন কমে যাচ্ছে জলের প্রবাহ। সাধারণ মানুষ সেটা বুঝতেও পারছিলেন। আজ সেটাই নিশ্চিত করলেন রাজ্য বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি দফতরের মহাকাশ পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের প্রধান সায়েন্টিফিক অফিসার নটরাজ দত্ত। নটরাজবাবু অশনি সংকেত শুনিয়েছেন, ‘‘হাওড়া নদীর জলস্রোত দিনে দিনে কমে যাচ্ছে। অবস্থা এমন চলতে থাকলে এবং এখনই কোন প্রতিকার না করলে ভবিষ্যতে হারিয়ে যাবে হাওড়া নদী|
পাহাড়ি ত্রিপুরা থেকে শুরু হয়ে আগরতলা ছুঁয়ে পার্শ্ববর্তী বাংলাদেশ ঢুকে তিস্তায় গিয়ে মিশে গিয়েছে হাওড়া। পণ্য পরিবহণ থেকে পানীয় জল সব চাহিদাই পূরণ করে নদীটি। তবে নদীর অববাহিকার বেশ কিছু অংশে ক্ষুদ্র শিল্প থাকার ফলে নদীতে গিয়ে মিশেছে শিল্প-বর্জ্য। আগরতলা শহরকে বন্যা থেকে বাঁচাতে হাওড়ার গতিপথ পাল্টে দেওয়া হয়েছে| নটরাজবাবুর কথায়, ‘‘শহরকে উন্নত করতে হবে এটা যেমন ঠিক, তেমনি নদীকেও রক্ষা করতে হবে| হাওড়ার গতি পথ পাল্টে দেওয়ার ফলে জলের সঙ্গে পলি, বালি এবং অন্য কঠিন বর্জ্য নদীতে জমতে জমতে এর প্রশস্ততা অনেক কমে গিয়েছে, আরো কমছে দিনে দিনে। ফলে কমে যাচ্ছে জল প্রবাহ|
তাঁর বক্তব্য, রাজ্য সরকার এখনই যদি সঠিক সমীক্ষা করে এর সমাধান বের করতে না পারে তবে ভবিষ্যতে এই নদী হারিয়ে যাবে| গত পঞ্চাশ বছরের সমীক্ষা রিপোর্ট নিয়ে তুলনামূলক পর্যালোচনা করলেই বোঝা যাবে কী ভাবে পলি জমে নদী ভরাট হয়ে যাচ্ছে। অবিলম্বে প্রয়োজনীয় ড্রেজিং-এর ব্যবস্থা করা উচিত বলে তিনি মনে করেন। ত্রিপুরা স্পেস অ্যাপ্লিকেশন সেন্টারের পর্যবেক্ষণ-এ ধরা পড়েছে, রাজ্যের পাহাড়ি ঝোরা ও নালাগুলিও শুকিয়ে যাচ্ছে। ২০-২৫ বছর আগেও রাজ্যে সহস্রাধিক ঝোরার কথা শোনা যেত। হাওড়া নদীর দুই পাড় থেকে বিভিন্ন দূরত্বে মোট সাতটি ঝোরার জল হাওড়া নদীকে পুষ্ট রাখে। তার মধ্যে সব চেয়ে বড় ঝোরাটি হল ঘোড়ামারা ঝোরা। এর দৈর্ঘ্য ২৪.৮৭ কিলোমিটার। সব থেকে ছোটটি হল বরদোয়াল ঝোরা। তার দৈর্ঘ্য ৬.৮০ কিলোমিটার। ভূগর্ভ থেকে যথেচ্ছ জল তোলার ফলে জলের স্তর নেমে যাচ্ছে। শুকিয়ে যাচ্ছে ঝোরাগুলি। জলের উৎস শুকিয়ে যাওয়ার ফলে জল কমছে নদীতেও।
সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: