রাশিয়া ইউরোপে ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তোলার পরিকল্পনা বাতিল করতে শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। কারণ ইরান এর পরমাণু কর্মসূচী সীমিত করতে বিশ্ব শক্তিগুলোর সঙ্গে এক মতৈক্যে পৌঁছেছে। খবর ইয়াহুনিউজের।
মস্কো দীর্ঘদিন ধরেই ওই পরিকল্পনার বিরোধিতা করে এসেছে। কারণ সে পরিকল্পনাটিকে এর পরমাণু অস্ত্র ভা-ারের প্রতি এক হুমকি হিসেবে দেখে থাকে। যদি পরিকল্পনাটি নিয়ে এগিয়ে যাওয়া হয়, তা হলে মস্কো পাল্টা ব্যবস্থা নেবে বলে হুঁশিয়ার করে দিয়েছে। ওয়াশিংটন ইতোপূর্বে মস্কোকে আশ্বাস দিয়েছিল যে, ওই প্রতিরক্ষা ব্যূহ রাশিয়াকে লক্ষ্য করে গড়ে তোলা হচ্ছে না। ইরানের মতো ‘দুর্বৃত্ত’ রাষ্ট্রগুলোর বিরুদ্ধে নিরাপত্তা হিসেবেই গড়ে তোলা হচ্ছে। জুলাইয়ে স্বাক্ষরিত ওই চুক্তির আওতায় জাতিসংঘ, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন তাদের নিষেধাজ্ঞা শিথিল করার বিনিময়ে ইরান এর পরমাণু কর্মসূচী সীমিত করতে সম্মত হয়। সেই সময় থেকে মস্কো ক্ষেপণাস্ত্র ব্যূহ গড়ে তোলার বিরুদ্ধে উচ্চকণ্ঠ হয়ে উঠেছে। রাশিয়ার উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই রিয়াবকভ বলেন, আমরা ওই কর্মসূচী চালিয়ে যাওয়ায় বিশেষত এ দ্রুতগতিতে এর স্পষ্টত রাশিয়ার পরমাণু অস্ত্র ভা-ারকে লক্ষ্য করে তা চালিয়ে যাওয়ার কোন কারণ দেখতে পাই না। সর্বশেষ বিতর্ক মস্কো ও ওয়াশিংটনের মধ্যকার শীতল সম্পর্কের আরও অবনতি ঘটাতে পারে। ইউক্রেনের সংঘর্ষকে কেন্দ্র করে ওই সম্পর্ক ঠা-া লড়াইয়ের পর এখন সর্বনিম্ন পর্যায়ে অবনত হয়েছে।
রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ গত সপ্তাহে বলেন, প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ২০০৯ সালে এক মন্তব্যে সত্য কথা বলছিলেন না। এতে ওবামা বলেছিলেন, ইরানের পরমাণু ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচীজনিত ‘প্রকৃত হুমকি’ মোকাবেলার জন্যই ক্ষেপণাস্ত্র ব্যূহ গড়ে তোলার প্রয়োজন রয়েছে। ওই সময়ে ওবামা বলেন, যতদিন ইরানের হুমকি থাকবে, ততদিন আমরা সাশ্রয়ী ও কার্যকর এক ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তোলার পদক্ষেপ নেব। যদি ইরাকের হুমকি দূর হয়, তা হলে আমাদের নিরাপত্তা এক আরও শক্তিশালী এক ভিত্তি থাকবে এবং ইউরোপে ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যূহ গড়ে তোলার মূল কারণও দূর হবে। মস্কো বলছে, এসব মন্তব্যের অর্থ এই যে, ইরানের পরমাণু ইস্যুটির নিরসন হওয়ায় ওয়াশিংটনের এখন ক্ষেপণাস্ত্র ব্যূহ গড়ে তোলার পরিকল্পনা থেকে সরে যাওয়া উচিত।