ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ১৯ মে ২০২৪, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

ফাঁস হয়ে গেল ইসরায়েলের সাথে ইন্দোনেশিয়ার গোপন সম্পর্কের তথ্য

প্রকাশিত: ১৮:৪৪, ৫ মে ২০২৪

ফাঁস হয়ে গেল ইসরায়েলের সাথে ইন্দোনেশিয়ার গোপন সম্পর্কের তথ্য

ইন্দোনেশিয়ার ইসরায়েলের সাথে আনুষ্ঠানিক কোনো সম্পর্ক নেই

অধিকাংশ মুসলিম দেশের মতো ইন্দোনেশিয়ারও ইসরায়েলের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক কোনো সম্পর্ক নেই। তবে একটি আন্তর্জাতিক তদন্তে ওঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। গোপনে ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি করেছে ইন্দোনেশিয়া। 

ওই তদন্ত অনুযায়ী, ইসরায়েলের অন্তত ৪টি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে স্পাইওয়্যার ও সাইবার নজরদারি প্রযুক্তি কিনেছে জনসংখ্যার দিক থেকে বৃহত্তম এই মুসলিম দেশটি। শুক্রবার (০৩ মে) কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল সিকিউরিটি ল্যাবের এক তদন্তে ইসরায়েলের সঙ্গে ইন্দোনেশিয়ার সম্পর্কের তথ্য বেরিয়ে এসেছে। তারা বলছে, ৪টি ইসরায়েলি প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান এন-এস-ও, কান-দিরু, উইন-টেগো ও ইন্টে-লেক্সারের সঙ্গে ইন্দোনেশিয়ার সরকারি অফিস ও সংস্থার যোগসূত্র পাওয়া গেছে। এ ছাড়া জার্মান প্রতিষ্ঠান ফিন-ফিশারের কাছ থেকেও নজরদারি প্রযুক্তি কিনেছে দ্বীপ দেশটি। এর আগে বিরোধীদের ওপর নজরদারি করতে বাহরাইন ও তুরস্ক ফিন-ফিশারের প্রযুক্তি ব্যবহার করেছিল।

অ্যামনেস্টি জানিয়েছে, ২০১৭ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে ইন্দোনেশিয়ার বিভিন্ন সরকারি অফিসে এ ধরনের অসংখ্য স্পাইওয়্যার আমদানি বা স্থাপন করা হয়েছে। ইন্দোনেশিয়ার পুলিশ এবং জাতীয় সাইবার ও ক্রিপ্টো এজেন্সির মতো প্রতিষ্ঠানের জন্য এসব নজরদারি স্পাইওয়্যার কেনা হয়েছে। অত্যন্ত আধুনিক প্রযুক্তির এসব স্পাইওয়্যার দিয়ে কারও ওপর নজরদারি করলে সেটা যেমন ধরা যায় না, আবারও কোনো প্রমাণ পাওয়াও প্রায় অসম্ভব।

তদন্তে দেখা গেছে, ইন্দোনেশিয়ার হয়ে এসব নজরদারি প্রযুক্তি কিনে দিয়েছে সিঙ্গাপুরের কয়েকটি মধ্যস্থতাকারী প্রতিষ্ঠান। ওই প্রতিষ্ঠানগুলোর মাধ্যমে আগেও ইন্দোনেশিয়া সরকারের জন্য নজরদারি প্রযুক্তি কেনার নজির রয়েছে। ইন্দোনেশিয়ার নিউজ ম্যাগাজিন টে-ম্পো, ইসরায়েলি সংবাদপত্র হারেতজ এবং গ্রিস ও সুইজারল্যান্ডভিত্তিক সংবাদ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের সহায়তায় কয়েক মাস ধরে এই তদন্ত চালানো হয়।

ইন্দোনেশিয়ার ইসরায়েলি স্পাইওয়্যার কেনার নজির এটাই প্রথম নয়। গেল বছর টে-ম্পো এক প্রতিবেদনে জানিয়েছিল, ইন্দোনেশিয়ার সরকার আলোচিত প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান এন-এস-ও’র পেগাসাস স্পাইওয়্যার ব্যবহার করেছে। ২০২১ সালে ইন্দোনেশিয়ার বেশ কয়েকজন জ্যেষ্ঠ সরকারি ও সামরিক কর্মকর্তার ওপর পেগাসাস ব্যবহার করে নজরদারি চালানো হয়েছিল বলে খবর প্রকাশিত হয়েছিল।

সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইনসহ কয়েকটি আরব দেশ ২০২০ সালে ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপনের পর তখন ইন্দোনেশিয়ার নামও শোনা গিয়েছিল। এরপর মাঝে বেশি কিছু শোনা না গেলেও সম্প্রতি ইসরায়েলের একজন কর্মকর্তা টাইমস অব ইসরায়েলকে জানান, ইন্দোনেশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে আলোচনা চলমান আছে। আবার দুই দেশের মধ্যে প্রতি বছর প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে প্রায় ৫০ কোটি ডলারের বাণিজ্য হয়ে থাকে জানিয়েছেন ইসরায়েল-এশিয়া সেন্টারের নির্বাহী পরিচালক রেবেকা জেফেরত।

 

এবি

×