ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ১১ মে ২০২৫, ২৮ বৈশাখ ১৪৩২

২০২২-২৩ অর্থবছর

৮৪ শতাংশ এডিপি বাস্তবায়ন

অর্থনৈতিক রিপোর্টার

প্রকাশিত: ০০:৩২, ২৩ জুলাই ২০২৩

৮৪ শতাংশ এডিপি বাস্তবায়ন

সদ্য সমাপ্ত ২০২২-২৩ অর্থবছরে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি)

সদ্য সমাপ্ত ২০২২-২৩ অর্থবছরে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) ৮৪ দশমিক ১৬ শতাংশ বাস্তবায়ন করতে পেরেছে সরকার, যা আগের ২০২১-২২ অর্থবছরের চেয়ে ৮ দশমিক ৫৮ শতাংশ পয়েন্ট কম। ওই অর্থবছরে বাস্তবায়িত হয়েছিল সংশোধিত বরাদ্দের ৯২ দশমিক ৭৪ শতাংশ। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন পরীবিক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) ওয়েবসাইটে এডিপি বাস্তবায়নের এই তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। 
আইএমইডির প্রতিবেদনে দেখা যায়, গত অর্থবছর উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে জড়িত সকল মন্ত্রণালয় ও বিভাগ মিলে মোট ব্যয় করতে পেরেছে ১ লাখ ৯৯ হাজার ৯৯ কোটি টাকা। আগের অর্থবছরে সারাদেশে উন্নয়ন কাজে ২ লাখ ৩ হাজার ৬৪৮ কোটি টাকা ব্যয় করা সম্ভব হয়েছিল। গেল অর্থবছর মূল এডিপির আকার ছিল ২ লাখ ৫৬ হাজার টাকা। বাস্তবায়ন সক্ষমতা বিবেচনায় নিয়ে মার্চ মাসে তা কাটছাঁট করে ২ লাখ ৩৬ হাজার ৫৬০ কোটি টাকায় নামিয়ে আনা হয়। 
কোভিড মহামারি পেরিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর মুহূর্তে ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে গত অর্থবছর কিছুটা সংকটে পড়ে দেশের অর্থনীতি। পরিস্থিতি সামাল দিতে চলমান প্রকল্পগুলোকে অগ্রাধিকার বিচারে এ, বি ও সি ক্যাটাগরিতে ভাগ করে অর্থায়নের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। কর্মকর্তারা বলছেন, ওই প্রক্রিয়াতেও অনেক প্রকল্পে চাহিদামতো অর্থ সরবরাহ করা সম্ভব হয়নি। কম গুরুত্বপূর্ণ অনেক প্রকল্প বাস্তবায়ন সাময়িক বন্ধ ছিল। এসব কারণে এডিপি বাস্তবায়ন সার্বিকভাবে পিছিয়ে পড়ে। 
বরাবরের মতোই গত অর্থবছরের শেষ মাস জুনে সবচেয়ে বেশি প্রায় ৫৩ হাজার কোটি টাকা ছাড় হয়। মে মাস পর্যন্ত অর্থ ব্যয় ছিল ১ লাখ ৪৬ হাজার কোটি টাকা, যা মোট বরাদ্দের ৬২ শতাংশ। আর জুনের ৩০ দিনের অর্থব্যয়ে মোট ব্যয় ২ লাখ কোটি টাকার কাছাকাছি পৌঁছায়, বাস্তবায়নের হার পৌঁছায় ৮৪ শতাংশে।  
এদিকে গত অর্থবছর প্রথমবারের মতো প্রকল্প সহায়তার চেয়ে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে ব্যয়ের হার কম দেখা গেল। এই সময়ে সরকারের নিজস্ব বরাদ্দ থেকে ৮১ দশমিক ৭৭ শতাংশ বা ১ লাখ ২৫ হাজার কোটি টাকা ব্যয় করা সম্ভব হয়েছে। আর প্রকল্প সহায়তা থেকে বাস্তবায়নের হার ছিল ৯০ শতাংশের বেশি। 
উন্নয়ন কর্মকা- পরিচালনাকারী ৫৮টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের মধ্যে ১৫টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগকে ১ লাখ ৫৯ হাজার ৭০৬ কোটি টাকার বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল গত অর্থবছর, যা মোট বরাদ্দের ৮৩ শতাংশ। এই বড় মন্ত্রণলায়গুলো তাদের বরাদ্দ থেকে গড়ে ৮২ শতাংশ খরচ করতে পেরেছে, যেখানে মোট এডিপির ৮৪ শতাংশ বাস্তবায়ন হয়েছে। বেশি বরাদ্দ পাওয়া মন্ত্রণালয়গুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ১০৩ শতাংশ বাস্তবায়ন করেছে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ, প্রায় ৯৭ শতাংশ অর্থ খরচ করেছে সেতু বিভাগ। তৃতীয় সর্বোচ্চ, ৯৩ শতাংশ ব্যয় করতে পেরেছে বিদ্যুৎ বিভাগ।

এছাড়া সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ বরাদ্দের ৯১ শতাংশ, রেল মন্ত্রণালয় ৯০ শতাংশ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় ৯০ শতাংশ, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় ৮৯ শতাংশ, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় ৮৭ শতাংশ, কৃষি মন্ত্রণালয়ের ৮৫ শতাংশ, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ৮২ দশমিক ৪৫ শতাংশ, স্থানীয় সরকার বিভাগ প্রায় ৮২ শতাংশ, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের ৭৭ শতাংশ, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় প্রায় ৭৬ শতাংশ, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের ৭১ শতাংশ এবং স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ ৬৮ শতাংশ ব্যয় করতে পেরেছে।

×