ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

রাইট ইস্যু-একীভূতকরণে মূলধন বাড়াবে মনোস্পুল ও পেপার প্রোসেসিং

প্রকাশিত: ১২:২৬, ২৫ অক্টোবর ২০২২; আপডেট: ১২:২৭, ২৫ অক্টোবর ২০২২

রাইট ইস্যু-একীভূতকরণে মূলধন বাড়াবে মনোস্পুল ও পেপার প্রোসেসিং

বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)

বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) নির্দেশনা অনুযায়ী, পরিশোধিত মূলধন ন্যূনতম ৩০ কোটি টাকায় উন্নীত করার উদ্যোগ নিয়েছে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি বাংলাদেশ মনোস্পুল পেপার ম্যানুফ্যাকচারিং এবং পেপার প্রসেসিং অ্যান্ড প্যাকেজিং। 

এজন্য কোম্পানি দুটি রাইট শেয়ার ইস্যু করার পাশাপাশি সহযোগী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে একীভূত হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর মধ্যে কোম্পানি দুটি তাদের পরিশোধিত মূলধন বাড়াবে। সম্প্রতি বিএসইসির কাছে কোম্পানি দুটি এ বিষয়ে আবেদন জানিয়েছে।

তবে রাইট শেয়ার ইস্যুর ক্ষেত্রে কোম্পানি দুটিকে স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত হওয়ার তিন বছরের শর্ত পূরণ করতে হবে। পরিশোধিত মূলধন ন্যূনতম ৩০ কোটি টাকায় উন্নীত করার লক্ষ্যে স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্তির তিন বছর হওয়ার শর্ত থেকে অব্যাহতি চেয়েছে বাংলাদেশ মনোস্পুল পেপার ম্যানুফ্যাকচারিং এবং পেপার প্রসেসিং অ্যান্ড প্যাকেজিং।

মনোস্পুল পেপারের চিঠিতে উল্লেখ হয়েছে, কোম্পানির পরিশোধিত মূলধন চলতি বছরের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে ৯ কোটি ৩৮ লাখ থেকে ৩০ কোটি টাকা করার জন্য বিএসইসির কাছ থেকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। 

তাই বিএসইসির আদেশ পালনে কোম্পানি প্রথম ধাপে ১:১ (১টি শেয়ারের বিপরীতে ১টি রাইট শেয়ার) অনুপাতে রাইট শেয়ার ইস্যু করে পরিশোধিত মূলধন বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিএসইসির বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, ঢাকা এবং চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই-সিএসই) কোম্পানির শেয়ার পুনঃ তালিকাভুক্তির তিন আর্থিক বছর পূর্ণ হওয়ার আগে কোম্পানি রাইট শেয়ার ইস্যু করার সীমাবদ্ধতা রয়েছে। 

বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দা এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের বিরূপ প্রভাবের পরেও মনোস্পুল পেপারের ব্যবসা ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতায় রয়েছে। 

এছাড়া, বিএসইসি নিয়ম এবং নির্দেশাবলী মেনে চলার মাধ্যমে কোম্পানিটি উপকৃত হচ্ছে, যা এর ব্যবসায়িক কার্যক্রমে ইতিবাচক প্রভাব ফেলছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে কোম্পানি বিএসইসির উল্লিখিত শর্ত মওকুফের জন্য আবেদন জানিয়েছে, যাতে রাইট শেয়ার ইস্যু করে কোম্পানিটি পরিশোধিত মূলধন বাড়াতে পারে।

কোম্পানিটি আরও জানিয়েছে, পরিশোধিত মূলধন ৩০ কোটি টাকার শর্ত মেনে চলার জন্য কোম্পানি ৯ কোটি ৩৮ লাখ ৮৮ হাজার ২৫৬ টাকা রাইট শেয়ার ইস্যুর মাধ্যমে প্রথম ধাপে উত্তোলন করবে। রাইট শেয়ার ইস্যুর খরচ মেটাতে ব্যাংক লোন পরিশোধ এবং ওয়ার্কিং ক্যাপিটালের প্রয়োজনীয়তা মেটাতে সেই তহবিল ব্যবহার করবে। 

পরিশোধিত মূলধন ১৮ কোটি ৭৭ লাখ টাকায় উন্নীত করার পরপরই পার্ল পেপার অ্যান্ড বোর্ড মিলসের সঙ্গে বাংলাদেশ মনোস্পুল পেপার ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানি একীভূতকরণের পদক্ষেপ নেওয়া হবে। এতে মনোস্পুল পেপারের পরিশোধিত মূলধন ৩০ কোটি টাকা বা তার বেশি হবে। তাই এ বিষয়ে বিএসইসির সহযোগিতা প্রয়োজন।

পেপার প্রসেসিং একইভাবে বিএসইসিকে জানিয়েছে, কোম্পানির পরিশোধিত মূলধন ১০ কোটি ৪৫ লাখ টাকা থেকে ৩০ কোটি টাকা করতে কোম্পানি প্রথম ধাপে ১:১ ( ১টি শেয়ারের বিপরীতে ১টি রাইট শেয়ার) অনুপাতে রাইট শেয়ার ইস্যু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। 

বিএসইসির বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, ডিএসই ও সিএসই তালিকাভুক্ত কোম্পানির শেয়ার পুনঃতালিকাভুক্তীর তিন আর্থিক বছর পূর্ণ হওয়ার আগে কোম্পানি রাইট শেয়ার ইস্যু করার সীমাবদ্ধতা রয়েছে। তাই কোম্পানি বিএসইসির উল্লিখিত শর্ত মওকুফের জন্য আবেদন জানাচ্ছি। এতে কোম্পানিটি পরিশোধিত মূলধন বাড়ানোর জন্য রাইট শেয়ার ইস্যু করতে পারবে।

কোম্পানিটি আরও জানিয়েছে, প্রথম ধাপে রাইট শেয়ার ইস্যু করে ১০ কোটি ৪৪ লাখ ৯৬ হাজার টাকা সংগ্রহ করবে। সংগ্রহকৃত টাকা কোম্পানিটি রাইট শেয়ার ইস্যুর খরচ, ব্যাংক লোন পরিশোধ এবং ওয়ার্কিং ক্যাপিটালের প্রয়োজনীয়তা মেটাতে ব্যবহার করবে। 

এছাড়া, রাইট শেয়ার ইস্যুর মাধ্যমে পরিশোধিত মূলধন ২০ কোটি ৯০ লাখ টাকা হওয়ার পরপরই মাগুরা পেপার মিলসের সঙ্গে একীভূতকরণের মাধ্যমে পরিশোধিত মূলধন ৩০ কোটি টাকায় উন্নীত করবে পেপার প্রসেসিং অ্যান্ড প্যাকেজিং।

পেপার প্রসেসিং অ্যান্ড প্যাকেজিং পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয় ১৯৯০ সালে। পরবর্তীতে ব্যবসায়িক পরিস্থিতি অবনতির কারণে কোম্পানিটি শেয়ারহোল্ডারদের লভ্যাংশ দিতে ব্যর্থ হয়। এর ফলে কোম্পানিটিকে মূল মার্কেট থেকে ওটিসি মার্কেটে স্থানান্তর করা হয়। প্রায় এক যুগ পর কোম্পানিটিকে মূল মার্কেটে ফেরানোর উদ্যোগ নেয় কোম্পানি কর্তৃপক্ষ। 

পরবর্তীতে বিএসইসির অনুমোদন সাপেক্ষে ২০২১ সালের ১৩ জুন কোম্পানিটি মূল মার্কেটে লেনদেন শুরু করে। বর্তমানে ‘এ’ ক্যাটাগরির এ কোম্পানির পরিশোধিত মূলধন ১০ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। সে হিসেবে কোম্পানিটির মোট শেয়ার সংখ্যা ১ কোটি ৪ লাখ ৪৯ হাজার ৬০০টি। 

এর মধ্যে কোম্পানিটির উদ্যোক্তা পরিচালকের হাতে ৩৫ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের হাতে ০.৫৪ শতাংশ ও সাধারণ বিনিয়োগকারীদের ৬৪.৪৬ শতাংশ শেয়ার আছে। সোমবার ডিএসইতে কোম্পানিটির শেয়ার সর্বশেষ ২৩৯.৭০ টাকায় লেনদেন হয়েছে।

বাংলাদেশ মনোস্পুল পেপার ম্যানুফ্যাকচারিংও পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয় ১৯৮৯ সালে। পরবর্তীতে ব্যবসায়িক পরিস্থিতির অবনতির কারণে কোম্পানিটিকে মূল মার্কেট থেকে ওটিসি মার্কেটে স্থানান্তর করা হয়। প্রায় এক যুগ পর ২০২১ সালের ১৩ জুন কোম্পানিটি মূল মার্কেটে লেনদেন শুরু করে। বর্তমানে ‘এ’ ক্যাটাগরির এ কোম্পানির পরিশোধিত মূলধন ৯ কোটি ৩৮ লাখ ৯০ হাজার টাকা। 

সে হিসেবে কোম্পানিটির মোট শেয়ার সংখ্যা ৯৩ লাখ ৮৮ হাজার ৮২৫টি। এর মধ্যে কোম্পানিটির উদ্যোক্তা পরিচালকের হাতে ৪৫ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের হাতে ০.৩৫ শতাংশ ও সাধারণ বিনিয়োগকারীদের ৫৪.৬৫ শতাংশ শেয়ার আছে। সোমবার ডিএসইতে কোম্পানিটির শেয়ার সর্বশেষ ৩৪১.২০ টাকায় লেনদেন হয়েছে।

এসআর

সম্পর্কিত বিষয়:

×