ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

রফতানি আয়ে সুবাতাস

প্রকাশিত: ০৫:২৪, ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৭

রফতানি আয়ে সুবাতাস

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ ২০১৭-১৮ অর্থবছরে দুই মাসে (জুলাই-আগস্ট) রফতানি আয় দাঁড়িয়েছে ৬৬২ কোটি ৮৬ লাখ ডলার। এর আগের অর্থবছরের একই সময়ে যা ছিল ৫৮২ হাজার কোটি ২৯ লাখ ডলার। অর্থাৎ রফতানিতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৩ দশমিক ৮৪ শতাংশ। গত দুই মাসের রফতানির লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৬১৪ কোটি ডলার। এ সময়ে রফতানি আয় লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়েছে ৭ দশমিক ৯৬ শতাংশ। এদিকে অর্থবছরে দুই মাসে পোশাক রফতানিতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৪ দশমিক ৫ শতাংশ। রবিবার রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) প্রকাশিত হালনাগাদ প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। ইপিবি’র প্রতিবেদনে দেখা যায়, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে রফতানি আয় অর্জিত হয়েছিল ৩ হাজার ৪৬৫ কোটি ৫৯ লাখ ডলার। ২০১৭-১৮ অর্থবছরের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩ হাজার ৭৫০ কোটি ডলার। অর্থবছরে প্রথম দুই মাসে (জুলাই-আগস্ট) রফতানি আয় দাঁড়িয়েছে ৬৬২ কোটি ৮৬ লাখ ডলার। এর আগের অর্থবছরের একই সময়ে যা ছিল ৫৮২ হাজার কোটি ২৯ লাখ ডলার। অর্থাৎ রফতানিতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৩ দশমিক ৮৪ শতাংশ। গত দুই মাসের রফতানির লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৬১৪ কোটি ডলার। এ সময়ে রফতানি আয় লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়েছে ৭ দশমিক ৯৬ শতাংশ। প্রতিবেদনের তথ্য মতে, দেশের পণ্য রফতানি আয়ের ৮০ শতাংশেরও বেশি আসে তৈরি পোশাক খাত থেকে। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে জুলাই-আগস্ট মাসে ৫৫২ কোটি ৪২ লাখ মার্কিন ডলারের পোশাক রফতানি করেছে বাংলাদেশ। তার আগের অর্থবছরের একই সময়ে ৪৮৪ কোটি ৩৮ লাখ ডলারের পোশাক রফতানি হয়েছিল। গত বছরের তুলনায় পোশাক রফতানিতে ১৪ দশমিক ৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে। জুলাই-আগস্ট মাসে রফতানির লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪৯৩ কোটি ৮২ লাখ ডলার। লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে ১১ দশমিক ৮৭ শতাংশ। গত দুই মাসে ২৬৫ কোটি ৫৪ লাখ ডলারের ওভেন পোশাক ও ২৮৬ কোটি ৮৮ লাখ ডলারের নীট পোশাক রফতানি হয়েছে। আগের অর্থবছরের তুলনায় নীট পোশাকে ১৬ দশমিক ২ শতাংশ ও ওভেন পোশাকে ১১ দশমিক ৯৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে। পাশাপাশি নীট ও ওভেন পোশাক রফতানিতে লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়েছে যথাক্রমে ১৬ দশমিক ৪ ও ৭ দশমিক ৬৯ শতাংশ। এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিজিএমইএর সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান বলেন, সম্প্রতি বিভিন্ন কারণে সক্ষমতা হারিয়ে প্রায় ১ হাজার ২০০টি কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। বিশেষ করে এ্যাকোর্ড, এ্যালায়েন্স এর পরিদর্শনের পর কিছু কারখানা আংশিক, সাময়িক ও পূর্ণাঙ্গভাবে বন্ধ হয়ে গেছে। ব্যাংক ঋণ ও বাড়িভাড়াসহ অন্যান্য ব্যয় মিটিয়ে অনেকের পক্ষে টিকে থাকা সম্ভব হচ্ছে না। এছাড়া চট্টগ্রাম বন্দর নিয়ে কঠিন সঙ্কটের মুখে পোশাক শিল্প। তারপরও পোশাক রফতানি আয়ে প্রবৃদ্ধি ও লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়েছে। কিন্তু আমরা দুশ্চিন্তায় আছি সামনের দিনগুলো নিয়ে। বিজিএমইএ প্রেসিডেন্ট বলেন, পোশাক তৈরির উপকরণ বোঝাই জাহাজকে পণ্য খালাসের জন্য দিনের পর দিন অপেক্ষা করতে হচ্ছে, পণ্য খালাস করতে না পারায় কন্টেনার ভাড়া বাবদ বন্দর ও জাহাজ কোম্পানিতে অতিরিক্ত জরিমানা প্রদান করতে হচ্ছে। তিনি বলেন, টানা আড়াই মাসের বেশি সময় ধরে বন্দরে জাহাজজট চলমান থাকার পরিস্থিতির সঙ্গে এখন যুক্ত হয়েছে জাহাজীকরণ জটিলতাÑ রফতানি কন্টেনার না নিয়েই জাহাজের বন্দর ছেড়ে যাওয়ার ঘটনা, যা ইতিহাসে কখনই ঘটেনি। এ পরিস্থিতি অব্যাহত থাকলে বিদেশী ক্রেতারাও সময়মতো পোশাক পাবে না। অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে রফতানি লক্ষ্যমাত্রা ও প্রবৃদ্ধি অর্জনে রেকর্ড গড়েছে মাছ রফতানিতে। এই সময়ে মাত্র ৮ কোটি ৭০ লাখ ডলারের রফতানি লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে আয় এসেছে ১২ কোটি ৪৯ লাখ ডলার। লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়েছে ৪২ দশমিক ৬৯ শতাংশ। গত বছরের একই সময়ে এ খাতে ৮ কোটি ৯০৫ লাখ ডলার আয় আসে। সে হিসেবে প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে ৩৯ দশমিক ৬৪ শতাংশ। এছাড়া জুলাই-আগস্ট মাসে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রফতানিতে আগে অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৯ দশমিক ৪৫ শতাংশ। আয় হয়েছে ২৪ কোটি ৮১ লাখ ডলার, যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৯ দশমিক ৮৩ শতাংশ কম। প্লাস্টিক পণ্যে প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে ৫ দশমিক ৭৪ শতাংশ। এই সময়ে আয় এসেছে ১ কোটি ৬৭ লাখ ডলার, যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৩০ দশমিক ৮৮ শতাংশ কম। গত দুই মাসে পাট ও পাটজাত পণ্যে রফতানি আয়ের লক্ষ্যমাত্র অর্জিত হয়নি। তবে আগের অর্থবছরের তুলনায় প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে ১০ দশমিক ৩৪ শতাংশ। এ সময়ে ১৭ কোটি ২৭ লাখ ডলারের লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে আয় এসেছে ১৫ কোটি ৫৩ লাখ ডলার।
×