অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ অর্থবছরের পাঁচ মাস পেরিয়ে গেছে অথচ এখন পর্যন্ত বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচীর (এডিপি) এক টাকাও ব্যয় করতে পারেননি সাত মন্ত্রণালয় ও বিভাগ। এগুলো হচ্ছে- সেতু বিভাগ, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়, ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং দুর্নীতি দমন কমিশন। এ ছাড়া এখনও দশ শতাংশের নিচে এডিপি বাস্তবায়ন হার রয়েছে আট মন্ত্রণালয় ও বিভাগের। এই পাঁচ মাসে মোট এডিপি বাস্তবায়ন হয়েছে ২১ শতাংশ। যা গত অর্থবছরে একই সময়ে ছিল ২০ শতাংশ। রবিবার মিট দ্য প্রেস অনুষ্ঠানে এসব তথ্য প্রকাশ করেন পরিকল্পনামন্ত্রী। রাজধানীর শেরেবাংলানগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে এ মিট দ্য প্রেস অনুষ্ঠিত হয়।
এতে পরিকল্পনা সচিব ভূঁইয়া সফিকুল ইসলাম, সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের (জিইডি) সদস্য ড. শামসুল আলম এবং পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা সচিব সুরাইয়া বেগমসহ পরিকল্পনা কমিশনের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
মিট দ্য প্রেস অনুষ্ঠানে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, বেতন বাড়লেই মূল্যস্ফীতিও বাড়বে। তাই যাদের বেতন বাড়বে তাদের বেতনের একটি অংশ কেটে রেখে বিনিয়োগ করার উদ্যোগ নিতে পারে সরকার। তিনি বলেন, যদি একবারে ৭৫ থেকে শতভাগ বেতন বেড়ে যায় তাহলে সবাই বাজারে যাবে আর বড় বড় চিংড়ি মাছ কিনবে। বাড়তি খরচে মূল্যস্ফীতি বাড়বে। অর্থনীতিতে সেভিংস ও ইনভেসমেন্ট টার্ন আনতে হবে। জাতীয় আয়কে বিনিয়োগে পরিণত করতে পারলেই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাড়বে। তিনি জানান, ইতোমধ্যেই একটি প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে, যা এখনও অনুমোদন দেয়া হয়নি। সেটি হচ্ছে রিকশা চালকসহ নিম্ন আয়ের মানুষদের আয়ের একটি অংশ জোর করে সরকারী ব্যবস্থাপনায় নেয়া হবে। সেই টাকা দিয়ে ফ্ল্যাট বা অন্য কোথাও বিনিয়োগ করা হবে।
পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, দশ শতাংশের নিচে অবস্থানকারী মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলো হলো- অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ ৩ দশমিক ৫ শতাংশ, নির্বাচন কমিশন সচিবালয় ৪ শতাংশ, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় ২ শতাংশ এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় ৯ শতাংশ, পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগ ১ দশমিক ৭ শতাংশ, ভূমি মন্ত্রণালয় ৩ দশমিক ২ শতাংশ, বাস্তবায়ন পরীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ ৬ দশমিক ২ শতাংশ এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় ৭ দশমিক ৯ শতাংশ।
এ বিষয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী আ ফ ম মুস্তফা কামাল বলেন, সেতু বিভাগের কাজ এখন শুরু হবে। কেননা বেশিরভাগ এলাকা তিন মাস পানির নিচেই থাকে। অন্য বিভাগ ও মন্ত্রণালয়গুলোর ক্ষেত্রে বেশিরভাগই কারিগরি সহায়তা প্রকল্প, তাই সময় লাগবে।
অন্যদিকে মিট দ্য প্রেস অনুষ্ঠানে জানানো হয়, বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচী (এডিপি) বাস্তবায়নে ১১টি সমস্যা চিহ্নিত করেছে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়। সমস্যাগুলো হচ্ছেÑ ভূমি অধিগ্রহণ, ওয়ার্ক প্ল্যান প্রণয়ন, নির্মাণ ক্ষেত্রে রেট সিডিউলের বার বার পরিবর্তন, স্থাপনা সম্পর্কিত সমস্যা, পরামর্শক/ফার্ম নিয়োগ, প্রকল্প পরিচালক নিয়োগ, জনবল নিয়োগ, প্রকল্পের ডিপিপির/টিপিপি সঠিক প্রণয়ন, প্রকল্প বাস্তবায়ন ও মনিটরিং, চাহিদার তুলনায় এডিপিতে কাক্সিক্ষত বা অপর্যাপ্ত বরাদ্দ এবং বৈদেশিক সাহায্যপুষ্ট প্রকল্পে অর্থ প্রাপ্তি সমস্যা। সমস্যাগুলোর বিষয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘ইতোমধ্যেই প্রকল্প পরিচালক বদলির বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী চাইলে বদলি করতে পারবেন। কিন্তু অন্য ক্ষেত্রে যে কোন সময় পিডি বদল করতে হলে কমিটির সুপারিশ নিতে হবে।