ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

এর মধ্যে রয়েছে ৫টি আঞ্চলিক পার্ক, ৫৫টি জলকেন্দ্রিক পার্ক ও ১৪টি ইকোপার্ক

ড্যাপের আওতায় হবে ৭৪ পার্ক

স্টাফ রিপোর্টার

প্রকাশিত: ০০:০৯, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২২; আপডেট: ১১:৪৭, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২২

ড্যাপের আওতায় হবে ৭৪ পার্ক

ড্যাপের অধীন নির্মিতব্য পার্ক-ইকোপার্কের নমুনা

ঢাকা মহানগর বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনা-ড্যাপের ২০১৬-৩৫ মেয়াদের প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছেগত ২৩ আগস্ট জারি করা নতুন অনুমোদিত এ পরিকল্পনায় ঢাকা মহানগরের এক হাজার ৫২৮ বর্গকিলোমিটার এলাকার জন্য বিদ্যমান পার্ক ও খেলার মাঠের বাইরেও পাঁচটি আঞ্চলিক পার্ক, ৫৫টি জলকেন্দ্রিক পার্ক ও ১৪টি ইকোপার্ক নির্মাণের প্রস্তাব করা হয়েছে

পাঁচটি আঞ্চলিক পার্ক হচ্ছে- আলীরটেক ইউনিয়নের ধলেশ্বরী নদীর তীরবর্তী চরবক্তাবলীতে ১৪৬.২২ একর জায়গায় নারায়ণগঞ্জ আঞ্চলিক পার্ক, ইয়ারপুর ইউনিয়নের দিয়াখালী ও তাজপুর মৌজায় ২০৭.১৭ একর জায়গায় সাভার আঞ্চলিক পার্ক, কায়েতপাড়া ইউনিয়নের পশ্চিমগাঁও, পূর্বগাঁও ও ছাতিয়ান মৌজায় ৬৪৫ একর জায়গায় রূপগঞ্জ ও কালীগঞ্জ আঞ্চলিক পার্ক, রুহিতপুর ও কলাতিয়া ইউনিয়নের মুগারপুর ও চর চামারদাহা মৌজায় ৫৪৫ একর জমিতে কেরানীগঞ্জ আঞ্চলিক পার্ক এবং গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সারুপাইতালি ও সুরাবাড়ী মৌজায় ২৮২ একর জায়গায় গাজীপুর আঞ্চলিক পার্কএ ছাড়া অনুমোদিত পরিকল্পনায় ১৪টি ইকোপার্কের প্রস্তাব করা হয়েছেএই পার্কগুলো হলো- গাজীপুর ভাওয়াল বন এলাকায় গাজীপুর ইকোপার্ক, উত্তরখানের স্নানঘাটা, তালনা, ভাতুরিয়া ও ছোট পলাশিয়া মৌজায় উত্তরখান জলকেন্দ্রিক ইকোপার্ক, জাঞ্জিরা-বক্তাবলী জলকেন্দ্রিক বিনোদনমূলক পার্ক, নাসিরাবাদ জলকেন্দ্রিক বিনোদনমূলক পার্ক, সাইনবোর্ড ইকোপার্ক, ঝালকুড়ি জলকেন্দ্রিক ইকোপার্ক, মেনিখালি ইকোপার্ক, তারাবোর মইকলিতে ভারগাও জলকেন্দ্রিক ইকোপার্ক, রূপগঞ্জ উপজেলায় জাঞ্জির ইকোপার্ক, কাটাসুর মৌজায় বুড়িগঙ্গা ইকোপার্ক, রূপগঞ্জে পিতলগঞ্জ ইকোপার্ক, জালকুড়ি ও দেউলাপারা মৌজায় জালকুড়ি ইকোপার্ক এবং গাজীপুরের ভুরুলিয়া মৌজায় জয়দেবপুর ইকোপার্ক

এ ছাড়া এ পরিকল্পনায় ৫৫টি জলকেন্দ্রিক পার্কের প্রস্তাবনা করা হয়েছেএর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে- মিরপুর বেড়িবাঁধের পাশে গোড়ানচটবাড়ী এলাকায়, ঢাকা উত্তর সিটির ৬ ও ৭ নম্বর ওয়ার্ডে শিয়ালবাড়ীতে, মিরপুর ও কালশী এলাকায় রাস্তার পাশে, হেমায়েতপুরের জামুর  মৌজায়, গাবতলী বাস টার্মিনালের পাশে, বাউনিয়া মৌজায় আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পাশে ও ঢাকা সেনানিবাসের পাশে, মিরপুর বাংলা কলেজ এলাকায়, কল্যাণপুর এলাকায়, ভাটারা মৌজায় মাদানী জলকেন্দ্রিক পার্ক, সাতারকুল মৌজায়, দক্ষিণখান ও উত্তরখান মৌজায় হবে জলকেন্দ্রিক বিনোদনমূলক পার্ক

এ ছাড়া হাউস বিল্ডিং এ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউট কল্যাণপুর এলাকায়, খিলগাঁও মৌজার সিপাহীবাগ এলাকায় ও হাজীপাড়া এলাকায়, সাভারের ধামসোনা ও গোলাপপ্রাম এলাকায়, জাহাঙ্গীরনগর হাউসিং সোসাইটি এলাকায়, মাতুয়াইল থানা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এলাকায় ও মাতুয়াইল মৌজায় হবে এসব জলকেন্দ্রিক ইকোপার্ক

ইকোপার্কের বৈশিষ্ট্য হিসেবে বলা হয়েছে- এই উদ্যোগের উদ্দেশ্য হবে অত্র অঞ্চলের পরিবেশ সংরক্ষণ, সাধারণ মানুষের জীবন ও জীবিকার উন্নয়নইকোপার্কের নির্ধারিত স্থানে বসতি থাকলে, তাদের উচ্ছেদ বা পুনর্বাসন না করে বরং আদি নিবাসে রেখে তাদের সঙ্গে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে ইকোপার্ক পরিচালনা করতে হবে

জলকেন্দ্রিক ইকোপার্কের মাধ্যমে এই এলাকার বাস্তুতন্ত্র সম্প্রসারিত হবে, পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা হবেযেমন- মাছ, পাখি ও অন্যান্য প্রাণীর প্রজননক্ষেত্র ও আশ্রয়স্থল হিসেবে গড়ে উঠবেআদি ও স্থানীয় পেশার (কৃষি, মাছ শিকার ইত্যাদি) সম্প্রসারণ হবে।  পর্যটন খাত থেকে পাওয়া মুনাফার প্রধান ভোক্তা হবে স্থানীয় বাসিন্দা ও স্থানীয় সরকার

নতুন স্থাপনা নির্মাণে স্থানীয় পচনশীল কাঁচামাল (বাঁশ, নলখাগড়া ইত্যাদি) ব্যবহার করতে হবেসংশ্লিষ্ট অঞ্চলের প্রাকৃতিক পরিবেশ বজায় রাখতে হবেকোনভাবেই নগরায়ন করা যাবে নাসরকারী উদ্যোগে এই অবকাঠামোগত ক্ষেত্রে (যোগাযোগ ব্যবস্থা ইত্যাদি) বিনিয়োগ করা হবে, সরকার পুরো কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করবে এবং ইকোপার্কের সামগ্রিক কার্যক্রম স্থানীয় জনগণের সমন্বয়ে পরিচালনা করবে

আঞ্চলিক পার্ক নির্মাণের প্রস্তাবনা ড্যাপে থাকায় বিষয়টিকে স্বাগত জানিয়েছেন জাহাঙ্গীরনগর নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের পরিকল্পানাবিদ অধ্যাপক ড. আদিল মুহাম্মদ খান।  তিনি বলেন,  ‘বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনায় পার্কের স্থান ও জমির পরিমাণ নির্দিষ্ট করে দেয়া আছে

এখন স্থানীয় কর্তৃপক্ষ কর্মপরিকল্পনা ঠিক করে পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করলেই এ মহানগরীকে বাসযোগ্য করে তোলা যাবে

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফরিদ আহাম্মদ বলেন, ‘ড্যাপ আমাদের উন্নয়ন কাজের গাইডলাইনড্যাপের সিদ্ধান্তগুলো সিটি কর্পোরেশনের সভায় আমরা উপস্থাপন করবসেখান থেকে একটা কর্মপরিকল্পনা সাজিয়ে পরবর্তীকালে আমরা বাস্তবায়ন করব

ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সেলিম রেজা বলেন, ‘ড্যাপের যে সব সিদ্ধান্ত আছে, আমরা অন্যসব সংস্থার সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে বাস্তবায়নের চেষ্টা করবতিনি জানান, ঢাকা শহরে গণপরিসরের সঙ্কট থাকার কারণে দ্রুত এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করবে উত্তর সিটি

×