ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

পদ্মাপারে উচ্ছ্বাস

প্রকাশিত: ২৩:১৮, ২৫ মে ২০২২

পদ্মাপারে উচ্ছ্বাস

মীর নাসিরউদ্দিন উজ্জ্বল, মুন্সীগঞ্জ ॥ স্বপ্নের পদ্মা সেতু ২৫ জুন যানচলাচলের জন্য খুলে দেয়ার খবরে উচ্ছ্বসিত ও উজ্জীবিত অপেক্ষায় থাকা মানুষ ও প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা। মূল সেতুর কাজের অগ্রগতি ছাড়িয়েছে ৯৮ শতাংশ। সেতুজুড়ে চলছে রেলিংয়ের পাশাপাশি ল্যাম্পপোস্টের সঞ্চালন লাইন, দুই পারের সাব-স্টেশনে বিদ্যুত সংযোগের কাজ। বিশ্বব্যাংক টালবাহানা করে অর্থ প্রদানে সরে দাঁড়ালে, ২০১৫ সালের ১২ ডিসেম্বরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃঢ়তায় নিজস্ব অর্থায়নে মূল নির্মাণ শুরু হয় স্বপ্নের পদ্মা সেতুর। দীর্ঘ অপেক্ষার পর মঙ্গলবার ২৫ জুন সেতু খুলে দেয়ার প্রধানমন্ত্রীর নিশ্চিতের খবরে উচ্ছ্বসিত পদ্মা পারের মানুষ। লৌহজংয়ের কুমারভোগ বাসিন্দা লুৎফর রহমান বলেন, এই ভাললাগা ভাষায় বুঝাতে পারব না। বহু প্রতীক্ষিত সেতু খুলে দেয়ার দিন তারিখ হয়েছে, এই সংবাদ আমাদের বাঙালীর জাতির জন্য বিশেষ করে পদ্মা পারের মানুষের জন্য গৌরবের। মাওয়া এলাকার রাসেল মিয়া জানান, পদ্মা সেতু সমালোচকদের মুখে চুনকালি দিয়ে সেতুর উদ্বোধনের তারিখ ঘোষণা করার মধ্য দিয়ে দেশ পদ্মা সেতুর যুগে আরোহন করতে যাচ্ছে। মেদিনীম-লে গ্রামের ইকবাল হোসেন বলেন, পদ্মা সেতু চালুর মধ্য দিয়ে পুরো অঞ্চলের চেহারা বদলে যেতে শুরু করছে। অর্থনীতি ও সামাজিক ক্ষেত্রেও বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসছে। আর সেতুর কাজ শুরু থেকে ২০১৫ শেষ দিকের সঙ্গে ২০২২ সাল তুলনা বিস্ময়কর। চিন্তাকরা যায় না কত বেশি বদলে গেছে সেতুর দুই পার। কুমারভোগ চন্দেরবাড়ি এলাকায় ১/২টি দোকান ছিল। সেখানে এখন বহুতল মার্কেট। বিপণী বিতান, ব্যংক-বীমাসহ শতশত দোকান পাঠ। মুন্সীগঞ্জের লৌহজং ও শ্রীনগর পাশাপাশি দুইটি উপজেলায় ও শরীয়তপুরের জাজিরা এবং মাদারীপুরের শীবচর এই চার উপজেলায় বড় রকমের পরিবর্তন সাদা চোখেই স্পষ্ট। সবখানেই পদ্মা সেতুর জৌলুস। এর পাশাপাশি প্রায় সাড়ে ৫ বছর ধরে এই মহাযজ্ঞের সঙ্গে জড়িত সেতু সংশ্লিষ্ট সবাই দারুণ উজ্জীবিত। পদ্মা সেতুর প্রকল্প পরিচালক মোঃ শফিকুল ইসলাম জনান, সেতুর কাজ উদ্বোধন পর্যায়ে নিয়ে আসতে পারায় প্রকল্পের সকলেই খুশি। এই সেতু নতুন সক্ষমতা সৃষ্টি করেছে। যা দেশকে আরও এগিয়ে নেয়া সম্ভব হবে। এখানে কর্মরতরা যে অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পেরেছে এটি অনেক কিছু। এই সেতুতে কাজ করতে এসে অভিজ্ঞতায় অনেকের জীবনও পাল্টে গেছে। সেতুজুড়ে এখন চলছে শেষ পর্যায়ের কাজ। বিদেশ থেকে আসা এ্যালুমিনিয়ামের রেলিং স্থাপনের পাশাপাশি ল্যাম্পপোস্টের সঞ্চালন লাইন, দুই পারে সাব-স্টেশনে বিদ্যুত সংযোগের কাজ দ্রুত এগুচ্ছে নাম ফলক ও ৪০ ফুট উচ্চতার ম্যুরাল তৈরিও সম্পন্ন । আনন্দে ভাসছে ২১ জেলার মানুষ আবুল বাশার, শরীয়তপুর থেকে জানান, ২৫ জুন সকাল ১০টায় পদ্মা সেতুর উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা- সড়ক যোগাযোগ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের উদ্ধৃতি দিয়ে মঙ্গলবার গণমাধ্যমে এমন সংবাদ প্রকাশিত হলে নানা আবেগ-অনুভূতি ও আনন্দ-উল্লাস ছড়িয়ে পড়েছে শরীয়তপুরসহ দেশের দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলার মানুষের মধ্যে। শেখ হাসিনার নামে পদ্মা সেতুর নামকরণের বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে বিভিন্ন মহল থেকে দাবি জানালেও সড়ক যোগাযোগ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের পদ্মা নদীর নামেই পদ্মা সেতু হবে বলে বিষয়টি নিশ্চিত করেন। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, পদ্মা সেতু খুলে দেয়ার সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। ইতোমধ্যে পদ্মা সেতু দিয়ে গাড়ি পারাপারের টোল আদায়ের হার নির্ধারণ করে তা পদ্মা সেতুর দক্ষিণ পাশে জাজিরা প্রান্তেও সাঁটানো হয়েছে।
×