ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

আলমগীর সাত্তার

সুপারম্যান হওয়ার পথে মানুষ

প্রকাশিত: ২১:৩৫, ২৫ জানুয়ারি ২০২২

সুপারম্যান হওয়ার পথে মানুষ

লেখাটি মূলত ডিএনএ (উঘঅ= উবড়ীুৎরনড়হপষরপ অপরফ) বিষয়ে। ছিলাম একজন বৈমানিক। কোন মনোবিজ্ঞানী অথবা নিউরোলোজি বিশেষজ্ঞ ডাক্তার লেখাটি লিখলে ভাল হতো। আমাদের দেশে ডিএনএ বিশেষজ্ঞরা অনেক সহজভাবে বিষয়টা নিয়ে লিখতে পারতেন। বাংলাদেশে তাঁদের কোন লেখা আমার দৃষ্টিগোচর হয়নি। তবে আমার লেখাটিও সম্পূর্ণ উপেক্ষা করা যাবে না। এর কারণ আমি তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করেছি, বিখ্যাত লেখক এবং জিনোলোজিস্ট এ্যাডম রুদারফোর্ডের (অফধস জঁঃযবৎভড়ৎফ) লেখা অ ইৎরবভ ঐরংঃড়ৎু ড়ভ ঊাবৎুড়হব ডযড় ঊাবৎ খরাবফ’ নামের বই থেকে। তিনি বিজ্ঞান বিষয়ে লেখালেখি করেন। জেনেটিকস্ বিজ্ঞানের ওপর তাঁর পিএইচডি ডিগ্রী আছে। ‘প্লেয়িং গড’, ‘দ্য বুক অব হিউম্যানস্’, ‘হিউম্যান এ্যান্ড এ্যানিমলস্’-এসব বই তাঁকে যথেষ্ট খ্যাতি এনে দিয়েছে। ‘এ ব্রিফ হিস্টরি অব এভরিওয়ান হু এভার লিভড’ বইখানা তো মাস্টারপিস। এ বইয়ের প্রশংসায় বিজ্ঞানীরা পঞ্চমুখ। বইখানার ভূমিকা লিখেছেন আর একজন জেনোলোজিস্ট সিদ্ধার্থ মুখার্জী। ‘ঊসঢ়বৎড়ৎ ড়ভ অষষ গধষধফরবং’ বইয়ের জন্য তিনি পুলিৎজার পুরস্কার লাভ করেছেন। লেখাটি লিখতে আমি সাহসী হয়েছি যখন দেখলাম, অর্থনীতিতে নোবেল পুরস্কার পাওয়া অভিজিৎ ব্যানার্জী রান্নাবান্নার বিষয়ের ওপর ডাউস আকৃতির একখানা বই লিখেছেন। আমি তাঁর মতো প্রতিভাবান অবশ্যই নই। কিন্তু ডিএনএ সম্পর্কিত বিষয়ে কিছু বলতে পারব না কেন? স্বীকার করি যে, আমার লেখায় ক্ষমাযোগ্য অল্পস্বল্প ভুলভ্রান্তি থাকতেই পারে। বিগত দেড়-দুশ’ বছর যাবত বা আরও কিছু আগে থেকেই বিজ্ঞানের উন্নতি হচ্ছিল। তা বেশ মন্থর গতিতে। গত বিশ-পঁচিশ বছর ধরে এই উন্নতির ধারা আশ্চর্যজনকভাবে গতিবেগ লাভ করেছে এবং তা আরও দ্রুততর হচ্ছে ক্রমশ। মোবাইল স্মার্টফোনের কথাই চিন্তা করা যাক। সেই পঞ্চাশ বছর আগে কলেরগান যন্ত্রটা এ্যাবসোলিট (ঙনংড়ষবঃব) হয়ে গেছে। এসেছে রেকর্ডপ্লেয়ার। ভেবেছি কি আশ্চর্যজনক এক যন্ত্র! আমার বলা কথা রেকর্ড করে আবার আমাকেই শোনাচ্ছে! এখন রেকর্ডপ্লেয়ারের কথা কেউ বলে না। এখন ওটাও এ্যাবসোলিট হয়ে গেছে। ফটো তোলার ক্যামেরায় এখন আর ফিল্ম ভর্তি করা লাগে না। এল ডিজিটাল ক্যামেরা। স্মার্টফোন ডিজিটাল ক্যামেরাকেও এ্যাবসোলিট করে দেবে। বিভিন্ন এ্যাপসের মাধ্যমে স্মার্টফোন পৃথিবীটাকেই হাতের মুঠোয় এনে দিয়েছে। এরোপ্লেনের কথাই চিন্তা করা যাক। আগামী চল্লিশ-পঞ্চাশ বছরের মধ্যে হাইপারসনিক অর্থাৎ শব্দের গতিবেগের চেয়ে পাঁচগুণেরও বেশি গতিবেগসম্পন্ন এরোপ্লেনে যাত্রীরা ভ্রমণ করবেন। এভিয়েশন সেক্টর, রকেট বিজ্ঞান, মেডিক্যাল সায়েন্স, কম্পিউটার বিজ্ঞান সর্বক্ষেত্রেই চোখ ধাঁধানো উন্নতি ঘটেছে এবং আরও বিস্ময়কর উন্নতি ঘটতে চলেছে। বিজ্ঞানের সব শাখা-প্রশাখার এমন অভাবনীয় উন্নতির কথা মনে রেখেও বলতে হবে, ডিএনএ সায়েন্স যার মধ্যে আছে ডিএনএ রিডিং, জিনোম সিকোয়েন্স বিশ্লেষণ, জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং ইত্যাদি। এসবের মাধ্যমে বিজ্ঞানের অন্যান্য শাখার উন্নতির ধারায় এমন গতিবেগ সঞ্চারিত হবে, যা আমাদের পক্ষে কল্পনা করাও সম্ভব নয়। এ্যাডম রুদারফোর্ড লিখেছেন, ডিএনএ সায়েন্স বিষয়ে অনেক গবেষক তাঁকে বলেছেন যে, তাঁরা তাঁদের গবেষণাপ্রাপ্ত তথ্যাদি প্রকাশ করতে সঙ্কোচবোধ করেন। কেননা তাঁদের প্রকাশিত তথ্যাদি প্রকাশের এক সপ্তাহের মধ্যে অন্যান্য গবেষক ওই একই বিষয়ে নতুন তথ্য নিয়ে উপস্থিত হচ্ছেন। ডিএনএ সায়েন্স এতটাই দ্রুত অগ্রসর হচ্ছে। ॥ দুই ॥ আমি যখন তৃতীয় বা চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্র ছিলাম তখন ‘জ্ঞানের আলো’ নামে দ্রুত পঠনের জন্য একখানা পাঠ্যবই ছিল। ওই বইয়ে উল্লেখ করা হয়েছিল, আমাদের দেশের মানুষের গড় আয়ু ২২ বছর মাত্র। এখন আমার জীবদ্দশায়ই সেই গড় আয়ু বেড়ে হয়েছে ৭৩ বছর। চিকিৎসা বিজ্ঞানের উন্নতির কারণেই এমনটা সম্ভব হয়েছে। আমাদের গড় আয়ু ৯০ বছরে পৌঁছাতে খুব একটা দীর্ঘকাল অপেক্ষা করতে হবে না। তারপর ডিএনএ বিজ্ঞানের সহায়তায় উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া ক্ষতিকারক জিনগুলো (এবহব) অপসারণ করতে পারলে আমরা সুস্থ এবং সবল দেহে কতদিন বাঁচব সে বিষয়ে ভবিষ্যদ্বাণী করা এখনই সম্ভব নয়। প্রত্যাশা করা যায় আগামী পঞ্চাশ বছরের মধ্যে গড় আয়ু দেড়শ’ বছরে পৌঁছে যাবে। প্রশ্ন করা যেতে পারে এর চেয়ে বেশি নয় কেন? হ্যাঁ, বেশিও হতে পারে। যাদের এখন বয়স অনেক কম তারা এ বিষয়ে হবে বেশি ভাগ্যবান। তবে মানুষের মৃত্যুর জন্য ডিএনএ-ই সবকিছু না। আরও অনেক ফ্যাক্টর আছে, যার ওপর ডিএনএ-এর কোন প্রভাব নেই। ডিএনএ-এর কল্যাণে শিশুমৃত্যুর হার যখন কমে যাবে তখন জনসংখ্যা বৃদ্ধির হারও কমে যাবে। মানুষ তখন দুটি ক্ষেত্র বিশেষ একটি সন্তান নিয়েই সন্তুষ্ট থাকবে। হিন্দু ধর্মালম্বীদের মাঝে মানুষের কোষ্ঠী লেখার প্রথা চলে আসছে বহুকাল ধরে। তবে কোষ্ঠীর ওপর বিশ্বাস এখন অনেক হ্রাস পেয়েছে। বিয়ের পাত্র-পাত্রী নির্বাচনে আগের দিনে কোষ্ঠীর ওপর খুব নির্ভরশীল ছিল হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা। এখন তারা ডিএনএ রিডিংয়ের ওপর হবে নির্ভরশীল। পাত্র বা পাত্রী আগ্রাসী বা বেপরোয়া স্বভাবের হবে কি না, কতটা মেধাবী হবে সবটাই পাওয়া যাবে জিনোম সিকোয়েন্সে বিশ্লেষণ করে। এতে গণকঠাকুর যারা কোষ্ঠী তৈরি করে দিয়ে ভাল আয়-উপার্জন করত তারা বেশ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এখন চরিত্র এবং ভাগ্যের ওপর গ্রহ-নক্ষত্রের প্রভাব মানুষ আর বিশ্বাস করতে চাইছে না। আগামী দিনে পাত্র বা পাত্রীপক্ষ বলবে-দেখি পাত্র বা পাত্রীর ডিএনএ রিডিংয়ের সার্টিফিকেট। এই প্যারাগ্রাফটি আমি সংযোজন করেছি কিছুটা রসিকতা করার জন্য। আমার মনে আছে, এখন থেকে চল্লিশ-পঞ্চাশ বছর আগে আমরা যখন বিদেশে ফ্লাইট নিয়ে যেতাম তখন আমাদের অর্থাৎ প্লেনের ক্রুদের এবং যাত্রীদের হেলথ কার্ড বহন করতে হতো। বিশ্বের প্রায় সব বিমানবন্দরে ওই কার্ড দেখাতে হতো। দেখাতে হতো যে, আমরা জলবসন্ত, কলেরা, ইয়োলো ফিভারের প্রতিরোধক ইনজেকশন বা টিকা নিয়েছি কিনা। এখন ওই হেলথ কার্ড প্রদর্শন করার নিয়ম শুধু ইতিহাস। তেমনি ভবিষ্যতে ডায়াবেটিস, হৃদরোগ, স্কিজোফ্রেনিয়া, ক্যানসার বলতে কোন রোগ থাকবে না যদি জিনোম সিকোয়েন্স বিশ্লেষণ করে আমরা চিকিৎসাসেবা গ্রহণ করি। এসব ছাড়া অন্য সব রোগের প্রতিরোধ ক্ষমতাও বৃদ্ধি পাবে। এ কথা মনে রাখতে হবে যে, আমাদের জেনেটিক ম্যাপ প্রতিনিয়ত পরিবর্তনশীল। আমাদের ডিএনএ-তে যদি এমন উপাদান থাকে যা আমাদের আগ্রাসী এবং বেপরোয়া স্বভাবের হওয়ার সম্ভাবনা থাকে তবে আমি যদি দীর্ঘদিন সংযমী হওয়ার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাই তাহলে ক্রমশ আমি সংযমী ও শান্ত প্রকৃতির মানুষ হয়ে উঠব। কারণ জেনেসিস্ট বিজ্ঞানীরা আবিষ্কার করেছেন যে, জেনেটিক ম্যাপ প্রতিনিয়ত পরিবর্তনশীল। আমি দীর্ঘদিন যদি সংযমী হওয়ার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাই তবে আমার মস্তিষ্কের নিউরন এবং সেলগুলো আস্তে আস্তে আমার ডিএনএ-এর কোষগুলোকে প্রভাবিত করবে এবং এর প্রভাবে আমার মস্তিষ্কেরও কিছুটা পরিবর্তন ঘটবে। এখন কোভিড-১৯ যেভাবে বিশ্বের মানুষের ওপর তাণ্ডব চালিয়েছে তা একদিন থাকবে না। বর্তমানের বিজ্ঞানীরা কোভিড-১৯ প্রতিরোধ করতে খুব দ্রুতই প্রতিরোধক টিকা আবিষ্কার করেছেন। বিজ্ঞানীরা এক প্রকার কোভিড-১৯-এর প্রতিরোধক টিকা আবিষ্কার করেছেন তো ধূর্ত কোভিডও নিজের রূপ পাল্টাচ্ছে। কোভিড-১৯ এবং বিজ্ঞানীদের মধ্যে যেন এক প্রকার প্রতিযোগিতামূলক খেলা চলছে। কোভিডই শেষ পর্যন্ত পরাজিত হবে- তা নিশ্চিতভাবেই বলা যায়। এক সময় প্লেগ রোগ এমন ব্যাপক ছিল যে, বিশ্বের অনেক দেশের লোকসংখ্যাই হ্রাস পেয়েছিল। কয়েক শ’ বছর যাবৎ প্লেগ রোগের প্রাদুর্ভাব চলেছিল। সেই প্লেগ রোগও এখন শুধু ইতিহাস। আমার ডিএনএ সংক্রান্ত দোষ-ত্রুটি সবকিছুই যে আমার বংশধররা পাবে এমন কিন্তু নয়। ডিএনএ বেশ সিলেকটিভ। ডিএনএ কোন ধরাবাঁধা নিয়মেই চলতে রাজি নয়, বরং নিজের খেয়াল-খুশি মতো চলতেই পছন্দ করে। দেখা গেল আমার ডিএনএ-এর ইতিবাচক গুণগুলো আমার বংশধররা পেল; কিন্তু খারাপগুলো পেল না। অধিকাংশ ক্ষেত্রে পরবর্তী বংশধররা ভালগুলোই পেয়ে থাকে। এর ফলেই আমাদের বংশধররা ডিএনএ-এর ভাল দিকটা পেয়ে থাকে বলে আগামী প্রজন্মের ছেলেমেয়েরা আমাদের চেয়ে মেধাবী এবং শারীরিকভাবে শক্ত-সমর্থ হচ্ছে। এ কারণেই হোমো সজপিয়েন অর্থাৎ বর্তমানের মানুষ এতটা উন্নতি সাধনে সক্ষম হয়েছে। আর এখন ডিএনএ-এর ব্যাপক গবেষণার ফলে পরবর্তী দু’-এক প্রজন্মের মধ্যেই মানুষ সুপারম্যান হওয়ার পথে এগিয়ে যাবে। ইউরোপের অস্ট্রিয়া বা হাঙ্গেরির একজন কৃষক দেখলেন, তার গম খেতের একটি জায়গায় কয়েকটি গমের চারা অন্যান্য গমের চারা থেকে বেশ খানিকটা উচ্চতায় বড় হয়েছে এবং ফলনও বেশি হয়েছে। ওই কৃষক এই বেশি উচ্চতা এবং বেশি ফলনের গমের চারাগুলোর ফলন আগামী মৌসুমের জন্য বীজ হিসেবে সংরক্ষণ করলেন। পরবর্তীতে ওই বীজ ব্যবহারের ফলে দেখলেন, সব গম গাছ উচ্চতায় বড় হয়েছে এবং ফলনও বেশি হয়েছে। মেনডিলিয়ান এবং মেন্ডেল (গবহফবষরধহ ্ গবহফবষ) নামের দুই বিজ্ঞানী ব্যাপারটা জানতে পেরে এর রহস্য আবিষ্কার করার জন্য গবেষণা শুরু করলেন। তাঁরা চিন্তা করে দেখলেন, ওই উঁচু লম্বা গাছের গমের বীজের মধ্যে এমন কিছু বৈশিষ্ট্য আছে, যা পরবর্তী গম গাছগুলো উত্তরাধিকার সূত্রে লাভ করছে। তাঁদের এই গবেষণা থেকে এসেছে ডিএনএ-এর ধারণা। এজন্য এই দু’জন বিজ্ঞানীকে ফাদার অব ডিএনএ বলে মনে করা হয়। ডিএনএ-এর সত্যিকারের গবেষণা বিগত শতাব্দীর ১৯৪০ থেকে শুরু করেন ব্রিটিশ বিজ্ঞানী ফ্রেড স্যাঙ্গার। ১৯৪৯ সালে তিনি তাঁর গবেষণা এবং পর্যবেক্ষণলব্ধ সব তথ্য প্রকাশ করেন। ১৯৫০ সালে তিনি তাঁর এই গবেষণা কাজের জন্য নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। ওই সময় ডিএনএ কোড রিডিং ছিল এক জটিল ব্যাপার। ফ্রেড স্যাঙ্গার ১৯৭৭ সালে ডিএনএ কোড রিডিংয়ের সহজ পদ্ধতি আবিষ্কার করে তা প্রকাশ করেন। এজন্য ১৯৮০ সালে তিনি দ্বিতীয়বার নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। ফ্রেড স্যাঙ্গার জন্মগ্রহণ করেছিলেন ১৯১৮ সালে এবং ৯৫ বছর বয়সে ২০১৩ সালে মারা যান। একটানা ৪০ বছর গবেষণার কাজ করে ৮০ বছর বয়সে তিনি কর্মজীবন থেকে অবসর গ্রহণ করেন। জীবনের শেষ ১৫ বছর নিজ বাড়ির আঙ্গিনায় তিনি ফুলের বাগান এবং ফুল গাছের পরিচর্যা করে কাটান। ফ্রেড স্যাঙ্গার অবসর গ্রহণ করার পর ডিএনএ সম্পর্কিত গবেষণা কার্যক্রম একটুও স্তিমিত হয়নি। বরং এর ব্যাপকতার হার আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে বড় প্রকল্প হচ্ছে ডিএনএ সম্পর্কিত গবেষণা। মানুষ মহাকাশ ভ্রমণে প্রচুর অর্থ ব্যয় করছে। মহাকাশ ভ্রমণ একটি সৌখিন প্রকল্প; কিন্তু একই সঙ্গে আকর্ষণীয়ও বটে। এ্যালন মাস্ক বর্তমান বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ বিজ্ঞানী এ কথা অস্বীকার করা যাবে না। তিনি মহাকাশ ভ্রমণ প্রকল্প, রকেট প্রকল্প, তেসলা গাড়ি নির্মাণ করে পৃথিবীর অন্যতম ধনশালী ব্যক্তি হয়েছেন। আমার বক্তব্য হলো মহাকাশ সম্পর্কে জানার চেয়েও উত্তম কাজ হলো, মানুষের নিজ নিজ দেহটাকে আরও ভাল করে জানার প্রচেষ্টা। তাই ডিএনএ গবেষণা কাজে অর্থবিত্ত লগ্নি করার চেয়ে অন্য কিছু ভাল কিছু হতে পারে না। সুস্থ এবং সবল একই সঙ্গে দীর্ঘায়ু লাভ করার চেয়ে কল্যাণকর কিছু আছে বলে আমার জানা নেই। চন্দ্রাভিযান ছিল মানুষের বোকামির আর একটা উৎকৃষ্ট উদাহরণ। চাঁদের মাটিতে পদার্পণ করার পর এ্যাসনটরা দেখতে পেলেন, চাঁদ হলো বিশাল আকৃতির একটি মাটির ডেলা। আমার ইচ্ছা ছিল জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং মেথডের মাধ্যমে শস্য, গাছপালা, ফলফলাদি, গবাদিপশুর উন্নত প্রজাতির উদ্ভাবন নিয়ে কিছু লিখব। কিন্তু ও বিষয়ের ব্যাপ্তি এতটাই বেশি যে, সীমিত আকারের এ লেখায় তা অন্তর্ভুক্ত করা সম্ভব হচ্ছে না। ভবিষ্যতে ওই বিষয়ে লেখার ইচ্ছা রইল। লেখক : বীরপ্রতীক, সাবেক বৈমানিক, কিলোফ্লাইট
×