ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

দেশে করোনা শনাক্ত ১১ হাজার ছাড়াল

প্রকাশিত: ২২:৫৬, ২২ জানুয়ারি ২০২২

দেশে করোনা শনাক্ত ১১ হাজার ছাড়াল

স্টাফ রিপোর্টার ॥ দেশে করোনা শনাক্তের সংখ্যা ১১ হাজার ছাড়িয়েছে। তবে নমুনা সংগ্রহের বিপরীতে করোনা শনাক্তের হার বেড়েছে বেশি। একইসঙ্গে গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যুর সংখ্যাও বেড়েছে। রোগী শনাক্তের পাশাপাশি দেশের হাসপাতালগুলোতে রোগী ভর্তির সংখ্যাও অস্বাভাবিকভাবে বাড়ছে। এদিকে আশঙ্কাজনকহারে সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় তা প্রতিরোধে শুক্রবার থেকে আগামী ৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত দেশের সব স্কুল-কলেজ বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে সরকার। একইসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে নিজ নিজ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে বলা হয়েছে। এছাড়া করোনা টিকার সনদ ও নেগেটিভ সনদ নিয়ে মেলা ও জনসমাগমে যোগ দিতে বলা হয়েছে। এর আগে ১৩ জানুয়ারি থেকে ১১ দফা বিধিনিষেধ জারি করেছে সরকার। সেই বিধিনিষেধ এখনও অব্যাহত রয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় (বৃহস্পতিবার সকাল আটটা থেকে শুক্রবার সকাল আটটা পর্যন্ত) করোনায় ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এই সময়ে নতুন করে শনাক্ত হয়েছেন ১১ হাজার ৪৩৪ জন। আগের সাতদিনে দেশে যথাক্রমে ১০৮৮৮, ৯৫০০, ৮৪০৭, ৬৬৭৬, ৫২২২, ৩৪৪৭, ৪৩৭৮, ৩৩৬৯, ২৯২৬ ও ২৪৫৮ জন রোগী শনাক্ত হয়। গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা সংগ্রহের বিপরীতে করোনা শনাক্তের হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৮ দশমিক ৪৯ শতাংশে। যা গতবছরের ৪ আগস্টের পর সর্বোচ্চ। সেদিন শনাক্ত হার ছিল ২৯ দশমিক ৪০ শতাংশ। আগের সাতদিনে করোনা শনাক্তের হার ছিল ২৬ দশমিক ৩৭ শতাংশ, ২৫ দশমিক ১১ শতাংশ, ২৩ দশমিক ৯৮, ২০ দশমিক ৮৮, ১৭ দশমিক ৮২ শতাংশ, ১৪ দশমিক ৩৫ শতাংশ ও ১৪ দশমিক ৬৬ শতাংশ। করোনায় এ পর্যন্ত দেশে ২৮ হাজার ১৯২ জনের মৃত্যু হয়েছে, শনাক্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৬ লাখ ৬৮ হাজার ৬১৬ জনে। গত বৃহস্পতিবার জানানো হয়, আগের ২৪ ঘণ্টায় করোনায় ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। আগের সাতদিনে করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন যথাক্রমে ১০, ৮, ৭, ৬, ১০, ৪ ও ২ জন। হাসপাতালে রোগী ভর্তির সংখ্যা বাড়ছে ॥ করোনার উর্ধগতির মধ্যে দেশের হাসপাতালগুলোতে ‘আশঙ্কাজনক হারে’ রোগী ভর্তি হচ্ছেন বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। শুক্রবার কোভিড পরিস্থিতি নিয়ে এক বিশেষ সংবাদ সম্মেলনে জাহিদ মালেক এ তথ্য জানান। দেশে কোভিড পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে উল্লেখ করে সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, প্রতিদিনই রোগী শনাক্তের হার বাড়ছে, যদিও মৃত্যুর হার এখনও কিছুটা কম। সংক্রমণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর কারণ, আমরা এখনও সেভাবে স্বাস্থ্যবিধি মানছি না। সরকার ১১ দফা বিধিনিষেধ দিয়েছে, তারপরও মানুষ সেটা মানছে না। হাসপাতালের বেড এক-তৃতীয়াংশ ভরে গেছে উল্লেখ করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, এটাও আশঙ্কাজনক। এভাবে বাড়লে ঢাকা শহরের সব হাসপাতালেই আর বেড পাওয়া যাবে না। হাসপাতালে যে অবস্থা চলছে সেটা আশঙ্কাজনক। আগে থেকেই সতর্ক হতে হবে। ঢাকা শহরে সিটি কর্পোরেশনের ভেতরেই এক হাজার মানুষ ভর্তি হয়েছে। বিভাগভিত্তিক রোগীর সংখ্যা বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ঢাকা বিভাগে মোট রোগী শনাক্ত হয়েছে ৭ হাজার ৯৬১ জন। এর মধ্যে শুধুমাত্র ঢাকা ও মহানগরীতে ৭ হাজার ২৯৬ জন। চট্টগ্রাম বিভাগে রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৫৯৬ জন। রাজশাহী বিভাগে নতুন আক্রান্ত হয়েছে ৪৭৫ জন। রংপুর বিভাগে ১৬৪ জন। খুলনা বিভাগে ৪১৯ জন এবং সিলেট বিভাগে আক্রান্ত হয়েছে ৪৪৫ জন। ময়মনসিংহ বিভাগে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন আরও ২২২ জনের করোনার সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার ২৪ দশমিক ৮৬। এ সময়ে বিভাগে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন একজন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, কোন দেশে নমুনা সংগ্রহের বিপরীতে করোনা শনাক্তের হার ৫ শতাংশের বেশি হলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে বলে মনে করা হয়ে থাকে। সেই হিসেবে গত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্তের হার ২৮ দশমিক ৪৯ শতাংশ, যা একেবারেই নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। তা স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা, করোনা সংক্রমণ রোধে মুখে মাস্ক পড়া বাধ্যতামূলকসহ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ওপর জোর দিয়েছেন। একইসঙ্গে করোনার লক্ষণ প্রকাশ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে নমুনা পরীক্ষার তাগিদ দেন তারা। গতবছরের ৮ মার্চ দেশে প্রথম ৩ জনের দেহে করোনা শনাক্ত হয়। এর ১০ দিন পর ওই বছরের ১৮ মার্চ দেশে এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে প্রথম একজনের মৃত্যু হয়।
×