ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

গত কয়েক মাস মুরাদের মধ্যে পরিবর্তন লক্ষ্য করছি ॥ তথ্যমন্ত্রী

প্রকাশিত: ২৩:৩২, ৮ ডিসেম্বর ২০২১

গত কয়েক মাস মুরাদের মধ্যে পরিবর্তন লক্ষ্য করছি ॥ তথ্যমন্ত্রী

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশানুযায়ী প্রতিমন্ত্রী ডাঃ মুরাদ হাসান পদত্যাগপত্র মন্ত্রিপরিষদে জমা দিয়েছেন। আমি তার সুস্থতা এবং মঙ্গল কামনা করি। তিনি বলেন, কয়েক মাস ধরে তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ডাঃ মুরাদ হাসানের মধ্যে কিছুটা পরিবর্তন লক্ষ্য করেছি। মঙ্গলবার দুপুরে সচিবালয়ে সাংবাদিকরা তার দফতরে এলে তাদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, তার এই ঘটনাগুলো আসলে দুঃখজনক। মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী হিসেবে তিনি আমাদের কোন কাজে কখনও বাধা হয়ে দাঁড়াননি, বরং ডাঃ মুরাদ হাসান আমাকে সব সময় সহযোগিতা করে এসেছেন। সে জন্য তাকে আমি ধন্যবাদ জানাই। সেই সঙ্গে তথ্যমন্ত্রী বলেন, গত কয়েক মাস ধরে তার মধ্যে আমি কিছুটা পরিবর্তন লক্ষ্য করেছি। তার কিছু বক্তব্য ও ঘটনা সরকার এবং দলকে বিব্রত করেছে। সে কারণে প্রধানমন্ত্রী তাকে পদত্যাগ করার জন্য বলেছেন এবং সে অনুযায়ী তার স্বাক্ষরিত পদত্যাগপত্র তার জনসংযোগ কর্মকর্তা হিসেবে যিনি দায়িত্ব পালন করছিলেন তিনি ইতোমধ্যেই তা মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে নিয়ে গেছেন। মুরাদ হাসানের মধ্যে আপনি কি পরিবর্তন দেখেছিলেন জানতে চাইলে হাছান মাহমুদ বলেন- দেখুন, আমার কাছে মনে হয়েছে তিনি আগে যে রকম ছিলেন, গত তিন মাস ধরে একটা পরিবর্তন আমার কাছে মনে হচ্ছিল। বিভিন্ন ঘটনা ও কর্মকা-ে আমর সেটি মনে হচ্ছিল। দু-একটা পরিবর্তনের কথা যদি বলতেন- এ বিষয়ে তিনি বলেন, তিনি আগে যে রকম ছিলেন সেটা থেকে ভিন্ন মনে হয়েছে আমার। এটা আমার পারসোনাল অবজারভেশন, এটা তো আমি সবিস্তারে বলতে পারব না। কারণ, এটা অনুভবের বিষয়। সেটা আমি এখানে সেভাবে প্রকাশ করতে পারব না। তার মধ্যে তেমন অস্থিরতা দেখেছেন কিনা- জানতে চাইলে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, আমি তো চিকিৎসক নই আসলে। আমি ডাক্তার হলে বলতে পারতাম আসলে কি? তার সুস্থতা কামনা করছেন, তিনি কি কোন ধরনের অসুস্থতায় রয়েছেন- এ বিষয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, যে কোন মানুষের তো সুস্থতা কামনা করা যায়। আপনারও সুস্থতা আমি কামনা করতে পারি, আপনি যাতে অসুস্থ না হন। ডাঃ মুরাদ সংসদ সদস্য আছেন, দলেও তার পদ আছে। সেটি কিভাবে দেখছেন- এ বিষয়ে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, তিনি জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক, সেই বিষয়ে জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগ বলতে পারবে, তারাই সিদ্ধান্ত নেবেন। ‘সংবিধানে আছে কারও নৈতিক স্খলন হলে প্রধানমন্ত্রী যে কাউকে পদত্যাগ করতে বলতে পারেন। দলের বিষয়টি দল বৈঠক করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে। তিনি যেহেতু জেলা আওয়ামী লীগের কর্মকর্তা জেলা আওয়ামী লীগ সেই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে। এই মুহূর্তে এর বেশি কিছু বলা সমীচীন হবে বলে আমি মনে করি না। কয়েক মাস ধরে পরিবর্তন লক্ষ্য করেছেন, এত দিন তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়নি কেন- এমন প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, তিনি বেশ কিছু বক্তব্য দিয়েছেন, দলের সঙ্গে পরামর্শ না করেই দিয়েছেন। যেগুলোর কারণে আমাদেরও প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয়েছে। মুরাদ হাসান বলেছেন, তিনি প্রধানমন্ত্রীকে জানিয়েই বক্তব্য দেন- এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে হাছান মাহমুদ বলেন, আমার জানা নেই। আমি জানি না, প্রধানমন্ত্রীকে এ সমস্ত কথা বলেছেন। প্রধানমন্ত্রী সব সময় এই ধরনের কথা বলা পছন্দ করেন না। আমি প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত সহকারী হিসেবেও কাজ করেছি। দল বিব্রত হয়, সরকার বিব্রত হয়Ñ এই ধরনের কথা ও কর্মকা- প্রধানমন্ত্রী কখনও কারও জন্য অ্যালাউ করেন না। সংসদ সদস্য পদের বিষয়ে কি হবে- এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেন, সংসদ সদস্য জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন। সংসদ সদস্য তো কেউ চাইলেই বাদ দিতে পারবে না। আপনি কি মনে করেন না মুরাদ হাসান মানসিকভাবে সুস্থ নন- এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, মুরাদ হাসান আমাদের সব সময় সহযোগিতা করেছেন। এ জন্য তাকে আমি ধন্যবাদ জানাই। তিনি মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী হিসেবে আমাদের কোন কাজে কখনও বাধা হয়ে দাঁড়াননি। আমি তার সর্বাঙ্গীন মঙ্গল এবং তিনি যাতে ভবিষ্যতে শারীরিকভাবে সুস্থ থাকেন সেই কামনা করি।
×