ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১০ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১

সন্তানেরই শাস্তি ভোগ

প্রকাশিত: ২১:১৩, ২ ডিসেম্বর ২০২১

সন্তানেরই শাস্তি ভোগ

বিবাহবিচ্ছেদ বর্তমান সময়ে একটি সামাজিক ব্যাধি বলা যায়। যখন স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মনোমালিন্য হয়, তখন একে অপরের প্রতি ভালবাসা কমতে থাকে। প্রতিনিয়তই যখন ছোটখাটো বিষয় নিয়ে তর্ক-বিতর্ক করতে থাকে, তখন সেই বিষয়টি বিশাল আকার ধারণ করে। ফলে একপর্যায়ে দুজন-দুজনার থেকে মুক্তি চায় অর্থাৎ বিচ্ছেদ ঘটাতে চায়। সবচেয়ে বড় কথা হলো- সঠিক জীবনসঙ্গী নির্বাচন করা। যদিও এটি একটি কঠিন কাজ। এর ব্যতিক্রম ঘটে বলেই সমাজে এত বিচ্ছেদ ঘটে। গ্রামের চেয়ে শহরে আর সাধারণ মানুষের চেয়ে শিক্ষিত মানুষরাই বিবাহবিচ্ছেদ ঘটে। বেশির ভাগ বিবাহবিচ্ছেদ ঘটে সন্তান জন্মদানের পরে। বিবাহবিচ্ছেদ বেড়েছে মধ্যবিত্ত পরিবারের। অভাব অনটনের কারণে ভরণপোষণের খরচ ঠিকমতো না পাওয়ায় স্ত্রী স্বামীকে তালাক দিচ্ছে। এখানে বহুল প্রচারিত বাণী মনে পড়ছে, অভাব যখন দরজা দিয়ে প্রবেশ করে, ভালবাসা তখন জানালা দিয়ে বেরিয়ে যায়। সত্যিই তো, সংসারে অভাব অনটন দেখা দিলে তখন পরিবারের কারও মনমানসিকতা ঠিক থাকে না। সংসারে অভাব এলে, তখন কিন্তু স্ত্রীর ধৈর্য ধরা উচিত ছিল। দুঃসময়ে স্বামীর পাশে না থেকে, স্ত্রীর জন্য ছেড়ে আসাটা বোকামি। স্ত্রীর উচিত স্বামীর পাশে থেকে সাহস জাগানো। উৎসাহ প্রদান করা। পরামর্শ করে সামনে এগিয়ে যাওয়া। বিবিএস জরিপে করোনাকালীন বিবাহবিচ্ছেদ বেড়েছে ৩৪%। এর মধ্যে নারী বেশি তালাক দিয়েছে পুরুষদের। যা তালাকের ৭০% আসে নারীর পক্ষ হতে। বিবাহবিচ্ছেদ নতুন কোন ঘটনা নয়। তবে সেটা কেন সন্তানের মানসিকতার উপর বর্তাবে? নিজেদের স্বার্থে সন্তানের কথা ভুলে গেলে চলবে কি? মনোচিকিৎসকরা বলেন, ‘সন্তানরা যদি বাবা-মায়ের স্বাভাবিক সঙ্গ এবং ভালবাসা থেকে বঞ্চিত হয়, তাহলে তাদের জীবন হয়ে ওঠে অস্বাভাবিক। তারা সমাজকে নেতিকাচক হিসেবেই দেখে। তাদের মাঝে তৈরি হয় জীবনবিমুখতা।’ বাবা-মা বেঁচে থেকেও সন্তান তাদের আদর, স্নেহ ও ভালবাসা থেকে বঞ্চিত হতে হয়। বাবা-মায়ের বিচ্ছেদের ফলে সন্তানটি সমাজে মাথা উঁচু করে হাঁটতে পারে না। লোকে নানা রকম তাচ্ছিল্যকর ভাষায় খোঁচা দেয়। ফলে নিজের মনমানসিকতা স্বাধীনভাবে গড়ে তুলতে অক্ষম হয়। বাবা-মায়ের বিচ্ছেদে সন্তানকেই শাস্তি ভোগ করতে হয়। সুনামগঞ্জ থেকে
×