ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

অধ্যাপক ডাঃ হারাধন দেবনাথ

শীতে ঘাড়ব্যথা থেকে দূরে থাকুন

প্রকাশিত: ২৩:৫৯, ৩০ নভেম্বর ২০২১

শীতে ঘাড়ব্যথা থেকে দূরে থাকুন

ঘাড়ব্যথা যে কোন কারণে হতে পারে। কম বয়সীদের ব্যথার প্রধান কারণ muskuloskeletal pain. যদি কেউ দুর্ঘটনাজনিত কারণে ঘাড়ে আঘাত পান বা abnormal position--এ ঘুমান বা কোন ভারি জিনিস তোলেন, তখন ঘাড়ে ব্যথা হতে পারে। তবে শীতকালটাতে একটু বেশিই বাড়ে। ছোট ছেলেমেয়েরা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে স্কুলে যাওয়ার সময় অনেক ভারি বই ব্যাগে বহন করে। তখন ঘাড়ে ব্যথা হতে পারে। এতে মেরুদন্ডের ক্ষতি হতে পারে। ঘাড়ে ব্যথা ৪০ বছরের বেশি বয়সী মানুষের মধ্যে কমন। ওই সময় মেরুদন্ডের হাড় প্রথমে ক্ষয় হয়। পরে ক্যালসিয়াম জমে কাঁটার মতো হাড় বৃদ্ধি পায়। এর নাম স্পন্ডাইলোসিস। এতে নার্ভের চলার পথে চাপ পড়ে। নার্ভের রক্তসঞ্চালন কমে গিয়ে মারাত্মক ক্ষতি হয়। স্নায়ুরজ্জুতেও প্রচন্ড চাপ পড়ে। ফলে স্নায়ুরজ্জু ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পরিণতিতে রোগী ঘাড়ব্যথায় ভোগেন। ব্যথা হাতে চলে যায়। হাত-পা ঝিনঝিন করে। অনেক সময় হাত-পা অবশ হয়ে যায়। রোগ পুরনো হলে রোগীর হাত-পা প্যারালাইসিসও হতে পারে। প্রস্রাব-পায়খানা আটকে যেতে পারে। রোগী অনেক সময় প্রস্রাব-পায়খানা ধরে নাও রাখতে পারেন। স্যাক্সচুয়াল সমস্যা দেখা দেয়। প্রতিকারের উপায় : রোগ হওয়ার আগে সাবধান হতে হবে। অনেকে গাড়িতে ঘুমান। এটা কোন ভাল অভ্যাস নয়। গাড়িতে ঘুম এলে অবশ্যই ঘাড়ে সার্ভাইক্যাল কলার ব্যবহার করতে হবে। নিচু বালিশ ব্যবহার করতে হবে, শক্ত বিছানায় ঘুমাতে হবে। নিয়মিত ঘাড়ের ব্যায়াম করতে হবে। উপুড় হয়ে ঘুমানো উচিত নয়। ঘাড়ে ভারি জিনিস নেয়া যাবে না। ঘাড়ব্যথার আরও গুরুত্বপূর্ণ কারণ হলো- cervical disc prolapse, spinal TB, Spinal Fracture. সার্ভাইক্যাল ডিস্ক প্রোলাপস হলে, MRI of cervical spine, x-ray of cervical spine করে রোগ নির্ণয় করতে হবে। ঘাড়ব্যথার প্রাথমিক পর্যায়ের চিকিৎসা হলো- ঘাড়ে কলার পড়া, ব্যথার ওষুধ ভরা পেটে খাওয়া। যেমন- Tab. Naprosyn 500mg, (1+0+1) 15 days. একই সঙ্গে Cap. Seclo 20mg (1+0+1) 30 days, Tab.¸ onil, (1+0+1) 30 days সেবন করতে হবে। সঙ্গে ফিজিওথেরাপিও করতে হবে। কোন কারণে রোগ থেকে মুক্তি না মিললে ACDF নামক ঘাড়ের অপারেশন করতে হবে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে microscopic ACDF করে রোগ নির্ণয়ের ব্যবস্থা রয়েছে। সময়মতো চিকিৎসা করে রোগী সুস্থও হচ্ছেন। তাই অবহেলা না করাই ভাল। লেখক : অধ্যাপক, নিউরোসার্জারি বিভাগ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা। চেম্বার : ল্যাবএইড স্পেশালিস্ট হাসপাতাল, ধানমন্ডি, ঢাকা ০১৭১১৩৫৪১২০
×