ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

চট্টগ্রামে ফ্লাইওভারের র‌্যাম্পের দুটি পিলারে ফাটল

প্রকাশিত: ২৩:২৫, ২৭ অক্টোবর ২০২১

চট্টগ্রামে ফ্লাইওভারের র‌্যাম্পের দুটি পিলারে ফাটল

স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম অফিস ॥ শনির দশা যেন কাটছেই না চট্টগ্রাম মহানগরীর বহদ্দারহাট এমএ মান্নান ফ্লাইওভারের। যানজট নিরসনের জন্য নির্মাণ করা চট্টগ্রামের প্রথম এই ফ্লাইওভার উদ্বোধনের আগেই গার্ডার ধসে ১৪ জন প্রাণ হারিয়েছিল। তৈরি হয়ে যাওয়ার পর ২০১৭ সালে একটি র‌্যাম্প নামানো হয়, যা নিয়ে নগর পরিকল্পনাবিদরা তখনই বিরোধিতা করেছিলেন। বহদ্দারহাট থেকে টার্মিনালমুখী সেই র‌্যাম্পের দুটি পিলারে ফাটল দেখা দিয়েছে। গত সোমবার রাতে ফাটল দেখে কয়েকজন ফেসবুকে ছবি শেয়ার করলে তা ভাইরাল হয়। এরপর স্থানীয় পুলিশ এসে বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করে টার্মিনালমুখী অংশটির দুদিকেই যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেয়। রাত থেকেই ওই এলাকায় উৎসুক মানুষ ভিড় করে। হালকা গাড়ি চলাচলের জন্য নামানো র‌্যাম্পটিতে ভারি গাড়ি চলায় এই ফাটল হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। তবে চট্টগ্রামের বহুল আলোচিত এ ফ্লাইওভারটি অপরিকল্পিত এবং একইভাবে ত্রুটিপূর্ণ বলেও অভিমত রয়েছে বিশেষজ্ঞদের। উল্লেখ্য, ফ্লাইওভারটি ২০১৩ সালের ১২ অক্টোবর যান চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হয়। এরপর আবার নক্সা পরিবর্তন করে বাস টার্মিনাল-কালুরঘাটমুখী একটি র‌্যাম্প নির্মাণ করা হয়, যার ওপর দিয়ে ২০১৭ সালের ১৫ ডিসেম্বর যান চলাচল শুরু হয়। মঙ্গলবার সকালে ওই এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে শত শত মানুষের ভিড়। তাদের চোখে-মুখে উৎকণ্ঠা। ওই অংশের নিচে থাকা ভাসমান ও আশপাশে অস্থায়ীভাবে থাকা হকারগুলোকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে। এছাড়া নিচের একপাশে যান চলাচলও বন্ধ করে রাখা হয়েছে। ফাটলের খবর পেয়ে সম্ভাব্য দুর্ঘটনা রোধে রাত থেকেই যান চলাচল বন্ধ রাখার খবর পেয়ে অধিকাংশ গাড়ির চালক ভয়ে বহদ্দারহাট ফ্লাইওভারে ওঠার আগ্রহ হারিয়েছে। ফলে অন্য অংশের গাড়িগুলোও সড়ক দিয়ে চলাচল করছে। গাড়ির চাপ বাড়ায় যানজটে নাকাল ছিল বহদ্দারহাট সড়ক। চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী মঙ্গলবার দুপুরে ফ্লাইওভার পরিদর্শনে যান। তিনি সাংবাদিকদের জানান, কাজটি করেছে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (চউক)। আমরা তাদের চিঠি দেব এ বিষয়ে জরুরী পদক্ষেপ নিতে। যেকোন সময় বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে এখানে। আগেও এখানে গার্ডার পড়ে প্রাণহানির ঘটেছে। আমরা ওই অংশে বর্তমানে গাড়ি চলাচল বন্ধ করে দিয়েছি। আমরা এ বিষয়ে সচেতন। এটার বিষয়ে ত্বরিত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আমি চেয়ারম্যানের সঙ্গে আজকেই কথা বলব। মেয়র আরও জানান, তদন্তের আগে এর দায়ী কে বলা যাবে না। তদন্ত করে বলা যাবে এর নির্মাণ ত্রুটি কিংবা এ বিষয়ে গাফিলতি রয়েছে কিনা। মূল নক্সার সঙ্গে এই র‌্যাম্পটি ছিল না উল্লেখ করে মেয়র বলেন, পরবর্তীতে এটি যুক্ত করা হয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করেছে চউক। র‌্যাম্পটি নির্মাণ করেছিল ম্যাক্স। ব্যবস্থা নেবে চউক। তবে ফাটল দেখে মনে হচ্ছে নির্মাণে ত্রুটি ছিল। আমাদের প্রকৌশলীরা এ বিষয়ে ভাল জানেন। মেয়র আরও বলেন, যেভাবে ফাটল সৃষ্টি হয়েছে আমি নিজেও দেখে হতবাক হয়েছি।
×