ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

অস্ত্রের ঝনঝনানি বন্ধে ডিএমপির জিরো টলারেন্স

প্রকাশিত: ২১:২০, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২১

অস্ত্রের ঝনঝনানি বন্ধে ডিএমপির জিরো টলারেন্স

স্টাফ রিপোর্টার ॥ দুই কোটি জনগণের বসবাসের রাজধানীতে অস্ত্রের ঝনঝনানি বন্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহন করেছে পুলিশ। কোনো ধরনের গোলাগুলি, অস্ত্রের মহড়া, ঝনাঝনানি বরদাস্ত করা হবে না। এসব ঘটনাকে দুর্বলভাবে দেখাও হচ্ছে না। জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। এরকমই ঘটনায় রাজধানীর খিলগাঁওয়ে যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ সাইফুল ইসলামকে হত্যাচেষ্টায় জড়িত থাকার অভিযোগে মোঃ মনিরুজ্জামান সবুজ ও মোঃ ইমন নামে দুইজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শুক্রবার কুমিল্লা জেলার বুরুডা থানার আমড়াতলি থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। পরে তাদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে ত্রিমোহনী থেকে তিন রাউন্ড গুলিভর্তি দুইটি পিস্তল উদ্ধার করা হয়। শনিবার ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার এসব তথ্য জানান। ডিবি’র প্রধান হাফিজ আক্তার জানান, ১৫ মে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে খিলগাঁও ফ্লাইওভারের নিচে রেমন্ড টেইলার্সের সামনের রাস্তায় মনিরুজ্জামান সুমন ও তার সহযোগীরা সাইফুল ইসলামকে গুলি করে দলবল নিয়ে পালিয়ে যান। পরে গুলিবিদ্ধ আহত অবস্থায় সাইফুল নিজেই সিএনজি নিয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। এ ঘটনায় সাইফুলের স্ত্রী বাদী হয়ে সবুজবাগ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। তিনি জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতাররা জানায়, ভিকটিম সাইফুল ইসলাম, কচি, রিপন ও সুমন ছোটবেলার বন্ধু ছিলেন। সাইফুল ২ নম্বর ওয়ার্ডের যুবলীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পান। রিপন ও সুমন দলীয় পর্যায়ে পদ-পদবী না পাওয়ার তাদের সম্পর্কের ফাটল সৃষ্টি হয়। এরপর তারা পৃর্থক গ্রুপ তৈরি করে এলাকায় আধিপত্য বিস্তার ও চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতে থাকেন। এক পর্যায়ে সুমন ও রিপন গ্রুপ একত্রিত হয়ে ভিকটিম সাইফুলকে হত্যার পরিকল্পনা করে। ডিবি অতিরিক্ত কমিশনার হাফিজ আক্তার জানান, রিপন গ্রুপের সদস্য বাশার হত্যা মামলার ১ নম্বর অভিযুক্ত ছিলেন ভিকটিম সাইফুল। ওই মামলায় সাইফুল দীর্ঘদিন জেলে থাকার কারণে সুমন গ্রুপ এলাকায় একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণ নিয়ে চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড করতে থাকে। সাইফুল জেল থেকে জামিনে মুক্ত হওয়ার পর সুমন গ্রুপ ও রিপন গ্রুপ এলাকায় তাদের আধিপত্য বিস্তার হ্রাস পাওয়ার ভয়ে দুই গ্রুপ একত্রিত হয়ে ভিকটিম সাইফুলকে হত্যার পরিকল্পনা করে। ডিবি’র প্রধান জানান, গত ১৫ মে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় খিলগাঁও ফ্লাইওভারের নিচে রেমন্ড টেইলার্সের সামনে রাস্তার পূর্ব পরিকল্পনার অনুযায়ী রিপন, কচি, সুমন ও ইমনসহ ১২ থেকে ১৩ জন ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। এ সময় সাইফুলকে রিপন ২ রাউন্ড ও সুমন ১ রাউন্ড গুলি করে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় ৯ জনকে অভিযুক্ত করে মামলা দায়ের সাইফুলের স্ত্রী। এর মধ্যে মঞ্জুরুল ইসলাম ওরফে কচি, রাসেল তালুকদার ওরফে চাপাতি রাসেল, উজ্জ্বল তালুকদার ও আমির হোসেনকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় পলাতক রিপনসহ অন্যান্য সহযোগীদের গ্রেফতার অভিযান অব্যাহত আছে। গ্রেফতারকৃতদের কাছ থেকে অস্ত্র ও গুলি উদ্ধার হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে খিলগাঁও থানায় অস্ত্র আইনে পৃর্থক একটি মামলা হয়েছে। সম্প্রতি রাজধানীতে অবৈধ অস্ত্রের ব্যবহার বেড়েছে। অস্ত্রের ব্যবহার বৃদ্ধির সুনির্দিষ্ট কারণ কী হতে পারে?- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে ডিএমপি’র গোয়েন্দা প্রধান জানান, ডিএমপির পরিবেশ এখন শান্ত। যদিও আগে প্রায়ই অস্ত্রের মহড়া দেখা যেতো, হতো বোমাবাজি। গত চার মাস মাসে রাজধানীতে যেখানেই অস্ত্রের মহড়া, বোমাবাজি হয়েছে জড়িত সবাইকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অস্ত্র-গুলি জব্দ করা হয়েছে। তিনি বলেন, ২ কোটি জনগণের বসবাসের নগরী রাজধানীতে অস্ত্রের ঝনঝনানি বন্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহন করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ। স্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই, কোনো ধরনের গোলাগুলি, অস্ত্রের মহড়া, ঝনাঝনানি বরদাস্ত করা হবে না।
×