ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

মারুফ রায়হান

ঢাকার দিনরাত

প্রকাশিত: ২০:২৯, ৩ আগস্ট ২০২১

ঢাকার দিনরাত

ঢাকা কেমন আছে? ঢাকার দিনরাত কি কুশলে আছে? ঢাকা কেন, সারাদেশের মানুষই এই করোনাকালে শতভাগ ভাল নেই। শুধু দেশের কথা বলি কেন, সারা বিশ্বের মানুষের জন্যই একই কথা প্রযোজ্য। ঢাকার কথায় ফিরি। প্রত্যেকটি মানুষই আছেন করোনাক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে। কেউ সচেতন, কেউ অচেতন। কেউ কেউ আবার বিশ্বাসই করেন না যে সত্যি সত্যি করোনাভাইরাস নামের একটা ভাইরাস এসে প্রতিদিন ঢাকার প্রায় শত মানুষকে মেরে ফেলছে। কেউ আবার দুই ডোজ টিকা নিয়েই মুখের মাস্ক খুলে ফেলেছেন, ঘন ঘন সাবান দিয়ে আর হাত ধুচ্ছেন না। তিনি হয়ত জানেন না যে দুবার টিকা নেয়ার পরও তিনি আক্রান্ত হতে পারেন। আর আগে থেকে তিনি কোনো অসংক্রামক জটিল রোগে ভুগে থাকলে সেই পুরনো রোগই তার স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়বে। বলা হচ্ছে, দুই ডোজ টিকা নেয়ার পর আক্রান্ত হলে জটিলতা হবে না, মৃত্যুঝুঁকি থাকবে না। হয়ত কথাটা সত্যিই। কিন্তু করোনাভাইরাস যে বহুরূপী! সে বার বার তার রূপ বদলাচ্ছে, শক্তি বাড়াচ্ছে। তাই এমন তো হতেই পারে যে এই আমিও দুই ডোজ টিকা গ্রহণ এবং একবার করোনায় ভোগার পরও আক্রান্ত হতে পারি। আর এমন একটি ধরন আমাকে আক্রমণ করতে পারে যার থেকে শতভাগ সুরক্ষা পাওয়ার এ্যান্টিবডি আমার শরীরে নেই। তাই আমি কতখানি জটিলতায় পড়ব, তা কে বলে দেবে আগাম? তাই আমি সতর্ক থাকি। আগে একটা মাস্ক পরতাম। এখন ডাবল মাস্ক পরি। হাত থেকে দস্তানা ( গøাভস) খুলি না যদি বাইরে যাই। আর বাড়তি সতর্কতা হিসেবে কমপক্ষে তিন ফুট দূরত্ব বজায় রাখি। আমার আম্মার জানাজা পড়লাম শনিবার সকালে রায়েরবাজার গোরস্তানে। নামাজের কাতারে দুই ভাই পাশাপাশি দাঁড়ালেও দূরত্ব বজায় রেখেছি। ভাইটি যে করোনায় ভুগছেন সেটি আমি জানি। তাই তিনিও স্বাস্থ্যবিধি মেনে একা সিএনজি নিয়ে জানাজায় এসেছেন এবং সবার থেকে দূরত্ব বজায় রেখেছেন। এমনটাই হওয়া কর্তব্য। অশনি সঙ্কেত করোনার পাশাপাশি ডেঙ্গুও ছোবল দিচ্ছে। দুই দশকের বেশি সময় ধরে ঢাকায় ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব চললেও ২০১৯ সালে ঢাকায় ব্যাপকভাবে এ রোগ ছড়ায়। সে সময় সরকারী হিসাবে দেশে লাখের বেশি মানুষ আক্রান্ত ও দেড় শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়। এরপর সমালোচনার মুখে দুই বছর ঢাকায় মশকনিধনে ব্যাপক কার্যক্রম চালায় দুই সিটি কর্পোরেশন। এবার করোনা মহামারীর মধ্যে আবার সেই ডেঙ্গু নতুন দুশ্চিন্তা হয়ে দেখা দিয়েছে। ‘১০টায় ১০ মিনিট প্রতি শনিবার নিজ নিজ বাসাবাড়ি করি পরিষ্কার’। গত মঙ্গলবার ২৭ জুলাই থেকে এডিস মশানিধনে ঢাকা উত্তর সিটির সব ওয়ার্ডে একযোগে বিশেষ চিরুনি অভিযান শুরু করা হয়েছে। আগামী ৭ আগস্ট পর্যন্ত টানা ১০ দিন (শুক্রবার ব্যতীত) ঢাকা উত্তর সিটির ১০টি অঞ্চলের ৫৪টি ওয়ার্ডে মশকনিধনে চিরুনি অভিযান ও জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম চলবে। সচেতনতা কর্মসূচিতে আতিকুল ইসলাম বলেন, নিজেদের বাসাবাড়ি ও আশপাশের পরিবেশকে নিয়মিত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার মাধ্যমে এডিস মশা, ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া প্রতিরোধ করতে হবে। নিজেদের বাসাবাড়িতে যেখানে ফুলের টব, অব্যবহৃত টায়ার, ডাবের খোসা, বিভিন্ন ধরনের খোলা প্যাকেট বা পাত্র কিংবা অন্য কিছুতে যাতে তিন দিনের বেশি পানি জমে না থাকে, সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে। ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া প্রতিরোধে সবাইকে ‘তিন দিনে একদিন, জমা পানি ফেলে দিন’ এই স্লোগান মেনে কাজ করার আহ্বানও জানান তিনি। আমার চিকিৎসক বন্ধু গুলজার হোসেন এলার্মিং শিরোনামে সময়োপযোগী একটি লেখা দিয়েছেন ফেসবুকে। লিখেছেন- জানি না সামনে কি সময় আসছে। গত দুই দিন ধরে বেশকিছু রোগী রেফার্ড হচ্ছে আমার কাছে। এরা হাসপাতালে ভর্তি রোগী। কোভিড পজিটিভ। কেউ কেউ সাস্পেক্টেড কোভিড। কেউ কেউ আইসিইউতে আছেন। এদের প্লাটিলেট অনেক কম। পঞ্চাশ হাজারের আশপাশে। সে কারণেই আমার কাছে রেফার করছে মতামতের জন্য। আমি জ্বরের ইতিহাস অনুযায়ী এ্যান্টিজেন এবং এ্যান্টিবডি পরীক্ষা করে পেলাম এদের ডেঙ্গু হয়েছে। হাসপাতালে ভর্তি হয়ে এরা এর মধ্যেই দুই চারদিন রেমডিসিভির ইঞ্জেকশন, চামড়ার নিচে বøাড থিনার ইঞ্জেকশনসহ নানারকম ফর্দ করা ইঞ্জেকশন ও ওষুধ নিয়ে ফেলেছে। একজনের এই ফাঁকে রক্তক্ষরণও শুরু“হয়েছে। একটু চিন্তিত বৈকি। জাহিদুর রহমান ভাই এবং গধষরযধ কে ফোন দিলাম কোনভাবে কি ডেঙ্গু পেশেন্টের শরীরে ডেঙ্গু ভাইরাস থাকার কারণে করোনা পরীক্ষা ফলস পজিটিভ আসতে পারে? দুজনই মত দিলেন ‘না, পারে না’। (ফলস পজিটিভ এমনিতেই নানা কারণে আসতে পারে। সে প্রসঙ্গ আলাদা)। তার মানে এই রোগীদের দুটোই হয়েছে। কোভিড-১৯ এবং ডেঙ্গু। আসলে না হওয়ার তো কারণ নেই। বাংলাদেশ, বিশেষ করে ঢাকা ডেঙ্গুর এন্ডেমিক জোন। এটা দূর হবে না, থেকে যাবে। ইতিহাস তো এটাই বলে। যেখানে ডেঙ্গু ঢুকেছে আর বের হয়নি। ফিরে ফিরে এসেছে। হয়ত দুই এক বছর প্রকোপ কম ছিল। গত বছর মশক নিধনের উদ্যোগ নেয়া হয়নি। স্থবির জনজীবনের কারণে ডেঙ্গুবাহী মশা বংশ বিস্তারের মওকা পেয়েছে। মানুষ বাড়িতে থাকে। দিনের বেলায় কাজ নেই, শুয়ে, বসে, ঘুমিয়ে কাটাচ্ছে। হাসপাতাল রোগীতে ভর্তি। এক রোগী থেকে আরেক রোগীতে ছড়ানোও বেশ সহজ। ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়ার বিস্তর কারণ বিদ্যমান। সমস্যা আরও। দেখা গেল রোগী এসেছে জ্বর নিয়ে। সবার নজর কোভিডে। কোভিড পরীক্ষা হলো। পরীক্ষায় দেখা গেল পজিটিভ। ব্যাস, রোগ তো পেয়ে গেলাম। দশ-বারোটি ওষুধ র্ছরা গুলির মতো চালু হয়ে গেল। চামড়ার নিচে বøাড থিনার। এদিকে কোন ফাঁকে প্লাটিলেট কমে, উপরি হিসেবে বøাড থিনার পেয়ে শুরু হলো রক্তক্ষরণ। পরশু একটা রোগীকে এভাবে হারালাম। অর্থাৎ কোভিডের সঙ্গে যে ডেঙ্গু কো-ইনফেকশন হিসেবে আসছে, আসতে পারে এবং আসতেই পারে এটাই মাথায় রাখতে হচ্ছে এখন। হাসপাতালে করোনা রোগীরা আছে। হাজার হাজার টাকার এ্যান্টিভাইরাল দিচ্ছেন। লাখ টাকার টসিলিজুম্যাব। সঙ্গে দুই শ টাকার একটা মশারিও দেন। বাড়িতেও মশারি খাটান। এটুকুই বলার ছিল। কেয়ারগিভার বা পরিচর্যাকারী আপনার পরিবারে সবাই করোনায় আক্রান্ত। সেবা করবে কে? বিশেষ করে অসুস্থ বয়স্ক বাবা বা মাকে দেখার জন্য তো সার্বক্ষণিকভাবে একজন মানুষ চাই। আত্মীয় স্বজনরা কি বাসায় আসবেন? এমন চরম বিপদে কী করবেন ভেবে দেখেছেন। কিংবা ধরুন আপনার সত্তর বা আশি বছর বয়সী মা কিংবা বাবা করোনা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। আইসিইউতে গেলে আলাদাভাবে লোক লাগে না। কিন্তু তিনি ওয়ার্ড বা কেবিনে আছেন। তাকে সামান্য অক্সিজেনও দেয়া লাগছে। প্রয়োজনে স্যালাইনও দিতে হচ্ছে। কে দেখবেন? এমন অনিবার্য পরিস্থিতিতে আপনি কেয়ারগিভার বা পরিচর্যাকারী পাবেন। পুরুষ এবং নারী উভয়েই। কিছুটা বেশি খরচ হবে। কিন্তু এমন মহাবিপদের সময় পালাক্রমে ২৪ ঘণ্টা দেখাশোনা করার জন্য কোভিড-১৯ রোগের সেবায় অভিজ্ঞ নারী বা পুরুষ আপনি যাতে পেতে পারেন সেজন্য এখানে দুটো ছবি সংযুক্ত করেছি। যে কোন প্রয়োজনে আমাকে ইমেইল করলে আমিও আপনাকে তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করতে পারব। একটি সংগঠন নিচের বিজ্ঞপ্তিটি দিয়েছে। পড়ুন। বাস্তবতা বুঝবেন। কমপক্ষে ১০০ জন কেয়ারগিভার লাগবে এখন আছে ৩৫ জন নতুন লিস্টে আছে ১৬ জন, ওদের দুই দফায় ট্রেনিং আর ইন্টারভিউর ফাইনাল করা হবে কেয়ারগিভার হিসেবে। সবাইকে প্রাতিষ্ঠানিক ট্রেনিং ও সার্টিফাইড করা হবে শীঘ্রই তবে ওরা সার্টিফাইড না হয়েও যথেষ্ট সুনাম করিয়েছে সংযোগের নিবিড় তত্ত¡াবধানে। আমরাই ওদের প্রাতিষ্ঠানিক সবকিছু করে দেব। গতকালও একজন আমাকে ইনবক্সে বলল আর্থিক সাহায্যের কথা, যতবার বলি কেয়ারগিভিংয়ের কথা, কাজের প্রতি অনীহা। নীতিগতভাবে সুস্থ সবল কাউকে আমরা আর্থিক বা খাদ্য সহায়তা দিচ্ছি না। কেয়ারগিভার হোন, অর্থ আয়ে নিজের ভাগ্যোন্নয়ন করুন। সত্যিই তো। আর কোন পেশা হতে পারে না তরুণদের জন্য, একজন উচ্চশিক্ষিত তরুণকে দেখেছি করোনার সময়ে এই পেশায় নিয়োজিত হতে। রাকা আপা সুন্দর একটি দরকারি লেখা সংগ্রহ করেছেন। এটি পড়লে আপনি নিজে ভীত না হয়ে বাসায় আপনার করোনায় আক্রান্ত মা-বাবা অথবা ভাই বা বোন, স্ত্রীর সেবার ভার নিজের হাতে তুলে নেয়ার শক্তি ও প্রেরণা পাবেন। আপা লিখেছেন- COVID-19 পরিস্থিতিতে অকারণে panic না করে কয়েকটি কথা মনে রাখুন- ১. Covid রোগীর গায়ে হাত দিলেই Covid ছড়ায় না... এটি এক প্রকার Droplet infection. একমাত্র তার হাঁচি, কাশি বা কথা বলার সময়েই লালার সূ² কণিকার মাধ্যমে ভাইরাস তার শরীর থেকে বেরোতে পারে। এবং তাও আপনার গায়ে লাগলে, পিঠে লাগলে, এমনকি তা খাবারের সঙ্গে আপনার পেটে গেলেও আপনি আক্রান্ত হবেন না। ভাইরাস একমাত্র আপনার শ্বাসনালীর মাধ্যমে ফুসফুসে গেলেই সংক্রমণ সম্ভব। তাই কোন Covid রোগী মাথা ঘুরে পড়ে গেলে তাকে তুলতে গেলে আপনারও Covid হয়ে যাবে না। বিপদে পাশে থাকুন। তবেই আপনারও বিপদে মানুষকে পাশে পাবেন। শুধু মনে রাখবেন নাকে বা মুখে হাত দেবেন না। ভয় করলে Covid রোগীর সংস্পর্শে আসার পর হাত Alcohol Sanitizer দিয়ে Sanitise করে ফেলুন বা সাবান দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। খুব ভয় করলে পরনের পোশাক কেচে ফেলুন এবং স্নান করে নিন। ২. কোভিড বা করোনা হলেই মানুষ মরে না, এটি কোন মারণব্যাধি নয়। এর Death Rate দুই শতাংশেরও কম। কিন্তু রোগী isolation-এ থেকে প্রচণ্ডভাবে মানসিকভাবেও অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়ে। তার immunity বা অনাক্রমণতা কমে যায়। তাই রোগীকে সহজপাচ্য পুষ্টিকর খাবার দিন এবং পরিচিতদের করোনা হলে call করে, Video call করে, একসঙ্গে online games খেলে, movie suggest করে তাকে মাতিয়ে রাখুন। ৩. বাড়িতে Covid Patient না থাকলে বাড়ির মধ্যে Mask পরে থাকবেন না। ঘর থেকে না বেরোলে মনের বিকার ঘটা এবং immunity কমে যাওয়া স্বাভাবিক। তাই বিকেলবেলা রাস্তায় না, বাগান থাকলে সেখানে বা না থাকলে ছাদে একটু হেঁটে ও শরীরচর্চা করে আসুন। এতে ঘরে বসে বসে ওবেসিটির সম্ভাবনাও কমবে। (মনে রাখবেন শুধুমাত্র immunity boostingখাবার খেয়ে আদৌ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে না, প্রকৃতির সংস্পর্শে না এলে কখনোই বাড়বে না।) শরীরচর্চা করা বা নির্জন ছাদে হাঁটার সময় মাস্ক পরবেন না। সাবধানতা অবলম্বনের এক দারুণ অস্ত্র গধংশ. কিন্তু এর ঙাবৎঁংব করবেন না তথা বিনা কারণে (যেমন গাড়ি চালানোর সময় ঐবষসবঃ এর ভেতরে) পরবেন না। এতে এমনিতেই আপনার শরীরে ঙীুমবহ এর ঘাটতি দেখা দেবে। ৪. ঙীরসবঃবৎ থাকলে বিনা কারণে ঘন ঘন ঝধঃঁৎধঃরড়হ পযবপশ করবেন না। এতে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়বেন। একমাত্র জ্বর কিংবা অসুস্থ হলে পযবপশ করবেন। ৯৫ অবধি ংধঃঁৎধঃরড়হ খুব স্বাভাবিক। তাছাড়াও এই পরিস্থিতিতে গধংশ ব্যবহারের ফলে স্বাভাবিকের চেয়ে কিছুটা কম দেখানোও একদমই অস্বাভাবিক না। চধহরপ করবেন না। ৫. রোগ না হয়ে থাকলে আগে থেকে ভয় পেয়ে ওষুধ কিনে বা অক্সিজেন সিলিন্ডার কিনে মজুদ করে রাখবেন না। এও এক প্রকার কালোবাজারি। এতে যাদের প্রয়োজন তারা পাচ্ছেন না। দাম বেড়ে যাচ্ছে। সমগ্র মানবজাতির ক্ষতি করবেন না একা হাতে। ৬. কোভিড সংক্রান্ত কোন রকম সমস্যা হলেই নিকটবর্তী হাসপাতালে যান। সেখানে তৎক্ষণাৎ বেড না পেলেও আপনাকে ঙীুমবহ দেয়ার ব্যবস্থা করা হবে এবং জধঢ়রফ ঞবংঃ করানো হবে। ৭. মাস্ক এবং ঝধহরঃরুবৎ ব্যবহার করুন। ঙভভরপব-এ বা বাইরে থাকলে কিছুক্ষণ অন্তর হাত ঝধহরঃরংব করুন। একটু হাত ঘষে ফেলার মতো একটি ক্ষুদ্র অভ্যেস যদি আপনার জীবন বাঁচিয়ে দিতে পারে তাহলে তা করবেন না কেন? এ বিষয়ে ঋধপব ঝযরবষফ - ও একটি দারুণ সুরক্ষা প্রদানকরী বস্তু। ব্যবহার করতে পারেন। ৮. ঈড়ারফ ঠরৎঁং এর কিন্তু ডানা নেই, উড়ে উড়ে ছড়ায় না এই রোগ। তাই প্রতিবেশীর বাড়িতে করোনা হলে একদমই আতঙ্কিত হবেন না। বরং তাকে সাহায্য করুন। ওষুধ, খাদ্যসামগ্রী ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিস ঘরের দরজায় পৌঁছে দিন। এতে আপনার করোনা হবে না। ভয় করলে গধংশ, ঋধপব ঝযরবষফ, হাতে ৎঁননবৎ মষড়াবং ঁংব করতে পারেন। সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে সাবধানতা অবলম্বন করুন। কিন্তু তাই বলে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর থেকে সরে আসবেন না। মনে রাখবেন তাদের বিপদের আপনি দাঁড়ালে একদিন আপনার বিপদেও তারা দাঁড়াবে। আর এটুকুতেই ভয় পাওয়ার আগে মনে রাখবেন ডাক্তার এবং নার্সরা হাজার হাজার কোভিড রোগীকে নিয়ে কাজ করছেন। তারা কিন্তু সবাই সংক্রমিত হয়ে যাচ্ছেন না। তাই আপনার প্রতিবেশী, বন্ধু, আত্মীয় বা পরিচিত কেউ আক্রান্ত হলে যতটুকু সম্ভব সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিন। আবারও বলছি, সময়টা খুব কঠিন। মানুষ মানুষের জন্য, জীবন জীবনের জন্য। এখন আপনি হেলাফেলা করলে আপনার জীবন বা আপনার পরিবারের মানুষদের জীবনও কিন্তু হেলাফেলা হয়ে যেতে পারে। তাই নিজের যত্ন নিন। মানুষের পাশে থাকুন। সাবধানে থাকুন। এবসার্ড সময়, পরাবাস্তব জীবন করোনা চিকিৎসার জন্য কোন হসপিটালে, কি কি, ও কয়টা বেড খালি রয়েছে সেটা এখন থেকে সব সময় আপডেট পাবেন এই লিংকে এবসার্ড সময়। পরাবাস্তব জীবন। আমি কি সত্যি আমার জীবনই যাপন করছি! ২৮ জুলাই সকালে হাসপাতালে আম্মার বেডের সামনে দাঁড়িয়ে আম্মাকে চুল ছড়িয়ে অক্সিজেন মাস্ক মুখে বিছানায় নির্ভার বসে থাকতে দেখে কোত্থেকে আমার অস্তিত্বে এমন এক আকাশ ঝরঝর খুশি উপচে এলো! আমার সামনে হাসিমুখে বসে আশি বছরের এক রাজকুমারী। আগের থেকে তিনি বহুগুণ ভাল আছেন। তবু মনে ভয়, কাল যদি আবার... আমার ট্রাউজারের বাম পকেটে স্যানিটাইজার ও বাড়তি দস্তানা, ডান পকেটে অর্ধ-লাখ টাকা। গতকাল ডাক্তার জানিয়েছিলেন আজ দামী ইনজেকশনটা দেয়া লাগতে পারে। না চাইতে বার বার পাশের বেডটিতে চোখ চলে যাচ্ছিল। ক’দিন আগেও এখানে তার কনিষ্ঠ পুত্রবধূ শুয়ে ছিলেন। এখন অন্য হাসপাতালের আইসিইউতে। নিঃশ্বাস নিতে প্রচণ্ডকষ্ট হচ্ছে এমন শতজন শুয়ে কোভিড হাসপাতালের একটি বেডের অপেক্ষায়। ট্রলিতে মেঝেতে কোথায় না শুয়ে। জানিই তো একটি বেড খালি হওয়ার শর্ত হলো দুটো। কোন স্বজন আপন সংসারে ফিরবেন, কোন জন মাটির ঘরে, কে বলতে পারে আগেভাগে? কে জিজ্ঞেস করবে আজরাইলকে! একটি আইসিইউ বেডের সামনে অপেক্ষমাণ কমপক্ষে পাঁচজন। অপেক্ষাতুর অসুস্থ ব্যক্তির স্বজনের মন আমি এখন পড়ছি চোখ বুজে। আইসিইউ বেডও বা কখন শূন্য হয়? আজ আশাবাদের কবিতা আমাকে দিয়ে হবে না। জীবন অর্থপূর্ণ। জীবন অর্থহীন। এবসার্ড সময়। পরাবাস্তব জীবন। আমরা কি সত্যি আমাদের জীবনই যাপন করছি! ১ আগস্ট ২০২১ [email protected]
×