ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

শোকাবহ আগষ্ট ॥ সমাজ বদলের রূপরেখা প্রণয়ন

প্রকাশিত: ২০:১৯, ১ আগস্ট ২০২১

শোকাবহ আগষ্ট ॥ সমাজ বদলের রূপরেখা প্রণয়ন

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আবির্ভাব বাঙালীর ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ঘটনা। তিনি ছিলেন ক্ষণজন্মা পুরুষ। তাঁর সাহস ও ব্যক্তিত্ব ছিল হিমালয়সম। নিজ জাতিকে তিনি করে তুলেছিলেন সাহসীযোদ্ধা। তাঁর নেতৃত্বেই স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হয়। তিনি বাঙালী জাতির পিতা। বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ এক ও অভিন্ন সত্তা। বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে তিনি রূপকথার নায়কের মতোই ভাস্বর। স্বাধীনতা বিরোধীচক্র-ষড়যন্ত্রকারীরা তাঁকে শান্তিতে দেশ পরিচালনা করতে দেয়নি। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ভোর রাতে স্বাধীন বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা, বাঙালীর মহানায়ককে হত্যা করেছিল ক্ষমতালোভী নরপিশাচ কুচক্রী মহল। রাষ্ট্রপতি হিসেবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শেষের দিনগুলো কেমন ছিল? শেষের দিনগুলোতে খুনীদের কারা সহযোগী-পরামর্শক হিসেবে দেখা-সাক্ষাত করেছেন বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে। এটা কি নিছক দেখা-সাক্ষাত ছিল নাকি ঘটনাপূর্ব ‘রেকি’ তা স্পষ্ট হয় পরবর্তী ঘটনাপ্রবাহে। শুধু তাই নয়, ১৫ আগস্টের পরবর্তী চিত্রও তুলে ধরা হয়েছে এই ধারাবাহিক লেখায়। এই হত্যা পরিস্থিতি সৃষ্টির নেপথ্যে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষে জড়িত ছিল বিপথগামী কতিপয় সেনাসদস্য ও দেশী-বিদেশী কুশীলব। সেসব ক্রমশ প্রকাশিত হচ্ছে এখনও। বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার হয়েছে। কিন্তু হত্যার ষড়যন্ত্র আজও সম্পূর্ণ ও সঠিকভাবে অনুদ্ঘাটিত। এসব বিবেচনায় ১৯৭৫ সালের আগস্ট মাসের দিনপঞ্জির গুরুত্ব অপরিসীম।১৯৭৫ সালের ১ আগস্ট হতে ৩০ আগস্ট পর্যন্ত দিনগুলোর ঘটনাপ্রবাহ তুলে ধরেছেন শিক্ষাবিদ ও গবেষক -শাহাব উদ্দিন মাহমুদ ১৯৭৫ সাল। ১ আগস্ট। দিনটি ছিল শুক্রবার। দুপুর ১টায় প্রতিরক্ষা প্রতিমন্ত্রী নুরুল ইসলাম চৌধুরী এবং দুপুর দেড়টায় পাহাড়ী নেতা মংপ্রু সাইন সাক্ষাত করেন। রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমানের সরকারী কর্মসূচীর বাইরেও অনেক অনির্ধারিত কর্মসূচী থাকত। নির্ধারিত তালিকার বাইরেও অনেক সাক্ষাতপ্রার্থী আসত। বাংলাদেশের ভাইস প্রেসিডেন্ট সৈয়দ নজরুল ইসলাম স্থানীয় একটি হোটেলে শিল্প মন্ত্রণালয় আয়োজিত বঙ্গবন্ধু ঘোষিত ২য় বিপ্লব বাস্তবায়নে বেসরকারী শিল্পের ভূমিকা শীর্ষক ২ দিনব্যাপী সেমিনারে ভাষণ দেন। উদ্বোধনী দিনের অনুষ্ঠানে শিল্পমন্ত্রী এএইচএম কামারুজ্জামান এবং শ্রমমন্ত্রী ও জাতীয় শ্রমিক লীগ সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ইউসুফ আলী উপস্থিত ছিলেন। ভাষণে ভাইস প্রেসিডেন্ট সৈয়দ নজরুল ইসলাম বলেন, দেশের শিল্পায়ন প্রচেষ্টায় এবং বঙ্গবন্ধু ঘোষিত দ্বিতীয় বিপ্লব বাস্তবায়নে শিল্পপতি ও বেসরকারী পুঁজি বিনিয়োগকারীদের সক্রিয় অংশগ্রহণের আবেদন জানিয়েছেন। তিনি বলেন ইতোমধ্যে শিল্পপতি ও বেসরকারী পুঁজি বিনিয়োগকারীদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া পাওয়া গেছে। উদ্বোধনী দিনে শিল্পমন্ত্রী এএইচএম কামারুজ্জামানও ভাষণ দেন। সেমিনারে সাংগঠনিক কমিটির সভাপতি সচিব এবিএম গোলাম মোস্তফাও ভাষণ দেন। জাতীয় সংসদের স্পীকার আব্দুল মালেক উকিল নবনির্বাচিত ২ সংসদ সদস্য-মোহাম্মদ মহসিন (রাজশাহী ১১) এবং সিরাজুল ইসলাম পাটোয়ারীকে (চাঁদপুর-কুমিল্লা ২৫) শপথবাক্য পাঠ করান। জাসদের দুই এমপি বাকশালে যোগ না দেয়ায় তাদের আসন শূন্য ঘোষিত হয়। বঙ্গভবনে জেলা গবর্নরদের প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠানে প্রশিক্ষণ ক্লাস নিয়েছেন বন্যানিয়ন্ত্রণ, পানিসম্পদ ও বিদ্যুতমন্ত্রী আব্দুর রব সেরনিয়াবাত। তিনি তার বক্তৃতায় বলেন, শীত মৌসুমে দেশে ৫৬ লাখ ম্যাট্রিক টন খাদ্য উৎপাদন সম্ভব। টাঙ্গাইলের বহেরাতলে জেলার নবনিযুক্ত গবর্নর কাদের সিদ্দিকীকে সংবর্ধনা দেয়া হয়। তার বাকশাল প্রশিক্ষণ ক্লাস থাকলেও তিনি সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে গমন করেন। ত্রাণমন্ত্রী আব্দুল মমিন বলেছেন, সরকার খাদ্য নিয়ে সর্বস্তরে দুর্নীতি প্রতিরোধে বদ্ধপরিকর। তিনি নেত্রকোনা জেলার সার্কিট হাউসে স্থানীয় এমপি, বাকশাল নেতা ও সরকারী কর্মকর্তাদের উদ্দেশে ভাষণদানকালে এ কথা বলেন। ভাসানী ন্যাপের ঢাকা শহরের সাড়ে চার শ’ সদস্য মিছিলসহকারে আওয়ামী লীগ অফিসে এসে বাকশালে যোগদানের জন্য তাদের আবেদনপত্র পেশ করেন। এ সময় আগতদের উদ্দেশে শেখ ফজলুল হক মনি, জিল্লুর রহমান এবং আব্দুর রাজ্জাক ভাষণ দেন। এ অনুষ্ঠানে বাকশাল কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য গাজী গোলাম মোস্তফা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে যোগদানকারীদের পক্ষে বক্তব্য রাখেন ন্যাপ প্রতিষ্ঠাতা সদস্য আজাদ সুলতান। উত্তর কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট কিম ইল সুংয়ের বিশেষ দূত ইয়াং হিয়ং সপ ঢাকা এসে পৌঁছলে বিমানবন্দরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. কামাল হোসেন তাকে স্বাগত জানান। বিকেলে সপ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. কামাল হোসেনের সঙ্গে বৈঠক করেন। সন্ধ্যায় ঢাকায় আয়োজিত বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সমিতির সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অতিথির ভাষণে তথ্য ও বেতারমন্ত্রী কোরবান আলী বলেন, শত শত বছরের সম্পর্কের মাধ্যমে বাংলাদেশ ও চীনের জনসাধারণের মাঝে ঘনিষ্ঠ মৈত্রীর বন্ধন গড়ে উঠেছে এবং এই সম্পর্ক দিনে দিনে আরও ঘনিষ্ঠ হবে। বহুল আলোচিত সেভেন মার্ডার কেসের সাক্ষী আব্দুল আহাদের জেরা শুরু হয়। দেশের সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। [email protected]
×