ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

মানবপাচারের মামলা ॥ অমির ৯ সহযোগী গ্রেফতার

প্রকাশিত: ১৬:১৮, ২২ জুন ২০২১

মানবপাচারের মামলা ॥ অমির ৯ সহযোগী গ্রেফতার

অনলাইন ডেস্ক ॥ চিত্রনায়িকা পরীমনিকে ধর্ষণচেষ্টা মামলার আসামি তুহিন সিদ্দিকী অমির ৯ সহযোগীকে মানবপাচারের মামলায় গ্রেফতার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ-সিআইডি। এরা হলেন- অমির ঘনিষ্ঠ জসিম উদ্দিন (৩৬), অমির গাড়িচালক সালাউদ্দিন (৩৫), অমির শ্যালক রাকিবুল ইসলাম রানা (৩৪), মো. মুসা (২৬), গোলাপ হোসেন বুলবুল (৩৪), জাকির হোসেন (৩৪), মো. নাজমুল (২৫), মো. আলম (৩৫) ও শাহজাহান সরকার (৪৩)। মঙ্গলবার রাজধানীর মালিবাগে সিআইডি দফতরে এক সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, সিআইডির এলআইসি শাখার একটি দল ও ঢাকা মেট্রো উত্তর দল-১ অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করে। তাদের কাছ থেকে ৩৯৫টি পাসপোর্ট, ২২টি কম্পিউটারের হার্ডডিস্ক, সম্পত্তির দলিল, ক্রেডিট কার্ড, অলিখিত স্টাম্প, বিভিন্ন ব্যাংকের চেক বই, ভিসা কার্ড, পেনড্রাইভ, মোবাইল সেট উদ্ধারের কথাও সিআইডির তরফ থেকে জানানো হয়। তুহিন সিদ্দীক অমি আশকোনার আয়াত আরাফাত ট্রাভেল ট্যুর সার্ভিসের কর্ণধার। তিনি ‘সিঙ্গাপুর ট্রেইনিং সেন্টার’ নামে একটি প্রতিষ্ঠানও পরিচালনা করতেন। বিদেশে কর্মী পাঠানোর নামে প্রতারণার অভিযোগে গত ১৭ জুন দক্ষিণখান থানায় শাহীন আলম নামে এক ব্যক্তির দায়ের করা মামলায় অমির ওই সহযোগীদের গ্রেফতার করা হয়েছে বলে সিআইডির সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়। সিআইডির অতিরিক্ত ডিআইজি ওমর ফারুক বলেন, গ্রেফতাররা শাহীন আলমসহ শত শত লোকজনকে ভালো বেতনে বিদেশে ভাল চাকরির লোভ দেখিয়ে বিপুল পরিমাণ অর্থ আদায় করেন। এই মানব পাচারকারী চক্র ভিকটিমদের প্রতিশ্রুত চাকরি না দিয়ে বিভিন্ন দেশে পাচার করে। এছাড়া আরও অনেককে দুবাই, মালেয়েশিয়া, সিঙ্গাপুরসহ বিভিন্ন দেশে পাঠানোর কথা বলে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে। যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ না করে বিদেশ পাঠানোর ফলে অনেকে সেখানে গিয়ে কোনো প্রকার কাজ করতে পারছে না বলে ভুক্তভোগী পরিবারের কাছ থেকে জানা গেছে বলে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়। ওমর ফারুক বলেন, বিদেশে অনেকেই একরকম অবরুদ্ধ অবস্থায় মানবেতর জীবন যাপন করছেন। এদিকে দেশে অমি ও তার সহযোগীরা এসব টাকা দিয়ে বিলাসবহুল জীবনযাপন করছিলেন। এই চক্রের আরও অর্ধশত এজেন্ট যুক্ত আছে। অমির বিদেশে কর্মী পাঠানোর লাইসেন্স আছে কিনা জানতে চাইলে সিআইডি কর্মকর্তা ওমর ফারুক বলেন, লাইসেন্স আছে কিনা সেটা যাচাই-বাছাই চলছে। তবে তার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ, আইনের সংজ্ঞা অনুযায়ী সেটা মানব পাচার। তিনি বিদেশে কর্মী পাঠানোর নামে প্রতারণার আশ্রয় নিয়েছেন। এর আগে গত ১৮ জুন আব্দুল কাদের নামের এক ব্যক্তি মানবপাচার আইনে মামলা করার পর অমির ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালিয়ে তিনটি গাড়ি এবং ১৯টি হার্ড ডিস্ক জব্দ করে সিআইডি পুলিশ। এছাড়া গত ১৫ জুন দক্ষিণখান থানা এলাকায় অমির একটি অফিস থেকে ১০২টি পাসপোর্ট ও ১৭ হাজার টাকা জব্দ করা হয়। এতগুলো পাসপোর্ট রাখায় অমির বিরুদ্ধে পাসপোর্ট আইনেও দক্ষিণখান থানায় মামলা হয়েছে। গত ১৪ জুন ধর্ষণচেষ্টা, হত্যাচেষ্টা ও মারধরের অভিযোগে সাভার থানায় মামলা করেন পরীমনি। তার অভিযোগ, গত ৮ জুন রাতে অমি তাকে ‘পরিকল্পিতভাবে’ উত্তরা বোট ক্লাবে নিয়ে যান। সেখানে তাকে ‘ধর্ষণ ও হত্যার চেষ্টা’ চালান ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন মাহমুদ। সেদিনই উত্তরার একটি বাসা থেকে উত্তরা বোট ক্লাবের বহিষ্কৃত সদস্য নাসির উদ্দিন মাহমুদ ও তুহিন সিদ্দিকী অমিকে গ্রেপ্তার করা হয়। সে সময় ওই বাসা থেকে মদ ও ইয়াবা উদ্ধারের কথা জানায় গোয়েন্দা পুলিশ। পরে তাদের বিরুদ্ধে বিমানবন্দর থানায় মাদকের মামলা করা হয়। তারা দুজনেই এই মামলায় গ্রেফতার হয়ে রিমান্ডে রয়েছেন।
×