ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

রাত ৩টায় উদ্বোধনী ম্যাচে ভেনিজুয়েলার মুখোমুখি স্বাগতিক ব্রাজিল

পর্দা উঠছে কোপা আমেরিকার

প্রকাশিত: ২৩:৪০, ১৩ জুন ২০২১

পর্দা উঠছে কোপা আমেরিকার

জিএম মোস্তফা ॥ বৈশ্বিক মহামারী করোনাভাইরাস ছাপিয়ে অবশেষে মাঠে গড়াচ্ছে বিশ্বের সবচেয়ে প্রাচীন ফুটবল টুর্নামেন্ট কোপা আমেরিকা। বাংলাদেশ সময় আজ দিবাগত রাত ৩টায় স্বাগতিক ব্রাজিল ও ভেনিজুয়েলার মধ্যকার ম্যাচ দিয়ে পর্দা উঠবে টুর্নামেন্টের ৪৭তম আসরের। অনেক নাটকীয়তার পর ১০ দলের মহাদেশীয় শ্রেষ্ঠত্বের লড়াই মাঠে গড়াতে যাচ্ছে। অথচ প্রতিযোগিতাটির ১০৫ বছরের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো দুইদেশের যৌথ আয়োজনে হওয়ার কথা ছিল এবারের আসর। কিন্তু কলম্বিয়ায় সরকারবিরোধী আন্দোলন চলতে থাকায় সেখান থেকে টুর্নামেন্ট সরিয়ে নেয় দক্ষিণ আমেরিকান ফুটবল কনফেডারেশন (কনমেবল)। এরপর আর্জেন্টিনায় এককভাবে হওয়ার কথা ছিল আসর। কিন্তু দিয়াগো ম্যারাডোনার দেশে করোনাভাইরাস পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় সেখান থেকেও সরিয়ে নেয়া হয়। অবাক করার বিষয় হলো যে কারণে আর্জেন্টিনা থেকে এবারের কোপা আমেরিকা সরিয়ে নেয়া হয়েছে সেই কোভিড-১৯ এর প্রকোপ ব্রাজিলে আরও বেশি। যে কারণে স্বাগতিক দলসহ অন্য কয়েকটি দলের খেলোয়াড়রা এত খারাপ পরিস্থিতিতে টুর্নামেন্ট আয়োজনের সিদ্ধান্তে সমালোচনা করেছিলেন। যে কারণে টুর্নামেন্ট বন্ধে ব্রাজিলের কোর্টে আবেদন করা হয়েছিল। কিন্তু তিন আবেদনের দুটি খারিজ করে দিয়েছে দেশটির সুপ্রীমকোর্টে। তৃতীয় আবেদনটিও আদালত খারিজ করে দেবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তাইতো সকল বাধা পেরিয়ে শুরুর অপেক্ষায় লিওনেল মেসি-নেইমারদের শ্রেষ্ঠত্বের লড়াই। তবে সুপ্রীমকোর্ট টুর্নামেন্টের পক্ষে রায় দিলেও নির্দেশনা ও প্রটোকল মেনে আয়োজন করার নির্দেশ দিয়েছে। তবে অংশগ্রহণকারী সব দলের খেলোয়াড়কে করোনা টিকা প্রয়োগের সিদ্ধান্ত নেয়া হলেও সময়ের সংক্ষিপ্ততায় চীনা কোম্পানি সিনোভ্যাক্স থেকে উপহার হিসেবে পাওয়া ৫০ হাজার ডোজ টিকা সঠিকভাবে প্রয়োগ করা সম্ভব হয়নি। করোনার কারণে টুর্নামেন্টটি ২০২০ সালের পরিবর্তে এক বছর পিছিয়ে ২০২১ সালে আনা হয়েছে। গত আসরে নবমবারের মতো ট্রফি জয় করা ব্রাজিল নিজেদের মাটিতে এবারও হট ফেবারিট। ইনজুরির কারণে ২০১৯ সালের টুর্নামেন্ট খেলতে না পারা নেইমার এবারের আসরে নেতৃত্ব দেবেন ব্রাজিলের। দারুণ ফর্মে থাকা দলটি ইতোমধ্যে কাতার বিশ্বকাপের বাছাইপর্বের ছয় ম্যাচে অংশ নিয়ে সবকটিতে জয়লাভ করেছে। আর্জেন্টিনা আরও একবার শিরোপা জিততে মরিয়া। মেসিরা দীর্ঘ ২৮ বছর পর আন্তর্জাতিক শিরোপার লক্ষ্যে মাঠে নামবেন। আর্জেন্টিরার নেতৃত্ব দেবেন ছয়বার ব্যালন ডি’অর জয়ী বার্সিলোনা তারকা। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তিনবার ফাইনাল থেকে ছিটকে যাওয়া মেসি ক্যারিয়ারের অন্তিম সময় এসেও আন্তর্জাতিক শিরোপা খরা দূর করতে বদ্ধপরিকর। আর্জেন্টিনার হয়ে ২০১৪ বিশ্বকাপের ফাইনালেও হরেছিলেন মেসি। উরুগুয়েও আশা করছে তারকা খচিত লুইস সুয়ারেজ ও এডিনসন কাভানি মিলে দলকে এনে দিবেন রেকর্ড সংখ্যক ১৬তম শিরোপা। মেসি-নেইমার, কাভানি-সুয়ারেজ ছাড়াও এবার চিলির স্ট্রাইকার এদুয়ার্দো ভারগাসের সঙ্গে আছেন কখনই কোপা আমেরিকা না জেতা দুই দেশ ইকুয়েডর ও ভেনিজুয়েলার দুই সদস্য। ইকুয়েডরের তরুণ প্রতিভাবান খেলোয়াড় মোইসেস কেইসেদোর ক্যারিয়ার সবে শুরু। ইকুয়েডরের কেইসেদোকে দলে পেতে এই বছর লড়াইয়ে নেমেছিল ইংলিশ ক্লাবগুলো। বুদ্ধিদীপ্ত পাস ও বক্স থেকে বক্স পর্যন্ত দৌড়ে খেলার সামর্থ্যরে জন্য পরিচিত ১৯ বছর বয়সী কেইসেদোর এখনও ইংলিশ ফুটবলে অভিষেক হয়নি। তবে আন্তর্জাতিক ফুটবলে এরইমধ্যে সামর্থ্যরে ছাপ রেখেছেন তিনি। এদিকে চমৎকার ড্রিবল আর ট্রেডমার্ক ইন কাটের জন্য ভক্তদের কাছে দারুণ প্রিয় ইয়েফেরসন স্তলেদো। ভেনিজুয়েলার হয়ে হয়তো শিরোপা জেতার খুব একটা সম্ভাবনা নেই তার। তবে নিজেদের সাম্প্রতিক ছন্দটা ধরে রাখতে পারলে খর্বকায় এই এ্যাটাকিং মিডফিল্ডার নিশ্চিতভাবেই নজর কাড়বেন। পাঁচ ফুট দুই ইঞ্চি উচ্চতার স্তলেদো আলো ছড়িয়েছেন সান্তোসে। চলতি বছর কোপা লিবের্তাদোরেসের ফাইনালে ছিলেন উজ্জ্বল। অন্যদিকে চিলির ফুটবলের সব আলো জুড়ে থাকেন এ্যালেক্সিস সানচেস। চিলির সাফল্যের জন্য এই স্ট্রাইকারই বেশি বাহবা পেয়ে থাকেন। তবে আক্রমণভাগে তার সঙ্গী এদুয়ার্দো ভারগাসও জাতীয় দলের জন্য এবার গুরুত্বপূর্ণ। পূর্বের সিদ্ধান্ত মোতাবেক এশিয়ার দুই অতিথি দল অস্ট্রেলিয়া ও কাতারসহ উপমহাদেশের ১২টি দল নিয়েই এবারের টুর্নামেন্টটি আয়োজনের কথা ছিল। কিন্তু ফেব্রæয়ারিতে নতুন সূচী নির্ধারণের কারণে নিজেদের নাম প্রত্যাহার করে নেয় অতিথি দল দুটি।
×